বিহার মুখ্যমন্ত্রী মাঝিকে বহিষ্কার

দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঝিকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে জেডি (ইউ)। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করায় সোমবার এ বহিষ্কারাদেশ দেয়া হয়। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, ২৪৩ সদস্যবিশিষ্ট বিধানসভায় জেডির (ইউ) ১১৫ এমপি রয়েছে। যার অধিকাংশই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সমর্থক বলে জানা গেছে। গত বছরের লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফলাফলের পর বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান নীতিশ কুমার। ওই পদে দলের দলিত নেতা জিতনরাম মাঝিকে বসানো হয়। এর পর থেকে মাঝির নানা সিদ্ধান্ত নীতিশের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়। সম্প্রতি দু’জনের দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। শনিবার বিহার পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন মাঝি। চল্লিশ মিনিটের ওই বৈঠক শেষে মাঝি বলেছিলেন, ‘আমিই মুখ্যমন্ত্রী এবং যতক্ষণ সংসদীয় দল সিদ্ধান্ত না নেয় ততক্ষণ আমি ক্ষমতায় থাকব।’ এতেই ক্ষিপ্ত হয় জেডি (ইউ)।
দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সোমবার তাকে বহিষ্কার করা হয়। মাঝির পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য নীতিশ কুমারের বিষয়ে কথা বলতে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন জেডি (ইউ) নেতারা। জেডি (ইউ) নেতা কেসি তায়াগি বলেছেন, ‘বিহার সংকটের চিত্রনাট্য দিল্লিতে লেখা হয়েছে। অপারেশন জিতনরাম মাঝি বিজেপি প্রধান অমিত শাহ’র পরিকল্পনা এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির আশীর্বাদপুষ্ট। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর গতকাল মাঝি যে সুরে কথা বলেছেন তা কোনো সংখ্যালঘু মুখ্যমন্ত্রীর সুর হতে পারে না।’ এদিকে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মাঝি বলেছেন, ‘আমি মোদিজির সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে আলাপ করিনি। তিনি বিহারের জন্য অনেক কাজ করেছেন, তাই ধন্যবাদ দিয়েছি।’ এদিকে জেডির (ইউ) জোটমিত্র কংগ্রেস অভিযোগ করেছেন, বিহারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদি। কংগ্রেস মুখপাত্র পিসি চাকো বলেন, বিজেপি সব কলকাঠি নাড়ছে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মাঝির কোনো দরকার থাকতে পারে না। অন্যদিকে নীতিশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পথ রোববার আরো স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিহারের বিধানসভার স্পিকার উদয় নারায়ণ চৌধুরী। এতে মাঝিকে বিধানসভার প্রাক্তন দলনেতা এবং নীতিশকে বর্তমান দলনেতা হিসেবে অভিহিত করেছেন স্পিকার। একইভাবে বিধানসভার সচিবালয় থেকে এ দিন দুই নেতাকে চিঠি পাঠান হয়েছে। ওই চিঠিতে মাঝিকে প্রাক্তন ও নীতিশকে বর্তমান দলনেতা বলা হয়েছে। চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন নীতীশ। জনতা দলের (জেডি-ইউনাইটেড) প্রেসিডেন্ট বাসিসথা নারায়ণ সিং দলীয় আইনপ্রণেতাদের নীতিশকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি স্পিকারকে নিশ্চিত করার পর বিধানসভা সচিবালয় নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে আর মুখ্যমন্ত্রী থাকা হচ্ছে না মাঝির। নীতিশকে সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার ও রাজ্যের গভর্নর। হয়তো দু-একদিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নীতীশ। এনডিটিভি।

No comments

Powered by Blogger.