গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে সকল দলের সমান সুযোগ থাকা উচিত -ড্যান ডব্লিউ মজীনা

(বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা আজ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে গুলশানে তাঁর বাসায় বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন। সেখানে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তাঁদের বৈঠক চলে। ছবি: প্রথম আলোর সংগৃহীত) বাংলাদেশে গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে হলে সব রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক চর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা। বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাত শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে গণতন্ত্রে বিরোধী দলের ভূমিকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে সকল রাজনৈতিক দলের সমান সুযোগ থাকা উচিত। অবশ্যই সব রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক চর্চার যে সুযোগ রয়েছে, তা শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে অধিকতর শক্তিশালী, গভীর ও বিস্তৃত। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখন সবচেয়ে দৃঢ়। এটি কোন কূটনৈতিক ভাষ্য নয়। আমি মনে করি, আগামীতে বাংলাদেশ ইমার্জিং টাইগার তথা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো দেশে পরিণত হবে। ড্যান মজীনা সাংবাদিকদের কাছে তার তিন বছরের কার্যকালে বাংলাদেশ সম্পর্কে তার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কৃষি, স্বাস্থ্য, তথ্য প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও শিক্ষাখাতে বাংলাদেশে এক অভূতপূর্ব বিপ্লব ঘটেছে। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার হ্রাস, জন্ম হার কমানো ও জন্ম নিয়ন্ত্রন ও পরিবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। আমি বাংলাদেশের এই উন্নয়ন  ও অগ্রগতিতে অভিভূত হয়েছি। তার তিনবছরে কার্যকালে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় সফরের অভিজ্ঞতার কথার খালেদা জিয়ার কাছে তুলে ধরেন এ বিদায়ী রাষ্ট্রদূত। জবাবে বিএনপি চেয়ারপারসনও বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খার কথা ব্যক্ত করেন। মজীনা বলেন, সম্প্রতি নারায়নগঞ্জে খালেদা জিয়ার যে জনসভাটি হয়েছে, তাতে ব্যাপক মানুষের সমাগম ও তাদের অনুভূতির কথা আমাকে জানিয়েছেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ আমার কাছে একটি বিশেষ জায়গা। এদেশের মানুষও খুব ভালো, ভেরি স্পেশাল। ‘আই সুড নট সে- গুড বাই’- আবার দেখা হবে। আমি আগামী বছর বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সঙ্গীত উৎসবে যোগ দিতে এদেশে আসব। বিদায়ী রাষ্ট্রদূত জানান, তার উত্তরসূরি হিসেবে নতুন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট জানুয়ারির শেষ দিকে দায়িত্ব নিতে বাংলাদেশে আসবেন। এর আগে সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে স্বস্ত্রীক বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন ড্যান ডব্লিউ মজীনা। সাক্ষাতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহ উদ্দিন আহমেদ অংশ নেন। বিএনপি সূত্র জানায়, এই সাক্ষাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক অবস্থা, নির্বাচন প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এদিকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত শেষে তার বাসার বাগানে নিজের উপহার দেয়া গাছটি দেখেন ড্যান মজীনা। উল্লেখ্য, দুই বছর আগে খালেদা জিয়াকে একটি গাছের চারা উপহার দিয়েছিলেন তিনি। টবে লাগানো ওই গাছের চারা থেকে সম্প্রতি আরও দুইটি গাছ জন্মেছে।

বাংলাদেশ–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক যেকোনো সময়ের চেয়ে দৃঢ়: মজীনা
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে দৃঢ়। আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে গুলশানে তাঁর বাসায় বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন মজীনা। পরে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন। বর্তমান সময়ের সম্পর্কের দৃঢ়তা বুঝাতে গিয়ে মজীনা ‘এভার বিফোর’ শব্দটি পরপর তিনবার উচ্চারণ করেন। আজ সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন মজীনা। তাঁর স্ত্রীও এ সময় সঙ্গে ছিলেন।
মজীনা সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে এটি ছিল তাঁর বিদায়ী সাক্ষাৎ​। খালেদা জিয়ার সঙ্গে গণতন্ত্রে বিরোধী দলের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সব দলের যে রাজৈনতিক জায়গা, তা শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহার করা দরকার। বাংলাদেশ ও এ দেশের সাধারণ মানুষের প্রশংসা করে মজীনা আরও বলেন, তিনি বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা ঘুরে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, তা বিএনপির চেয়ারপারসনের সঙ্গে বিনিময় করেছেন। বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে, পরিবার পরিকল্পনায় বাংলাদেশ বিপ্লব ঘটিয়েছে। তিনি নিজের চোখে যা দেখেছেন, তা অবিশ্বাস্য গল্পের মতো। বাংলাদেশ হচ্ছে এশিয়ার এমাজিং টাইগার।
শেষে মজীনা বাংলায় বলেন, ‘আবার দেখা হবে।’ তিনি জানান, আগামী বছর বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবে আসতে চান। এর আগে আজ বিকেলে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করে মজীনা। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সাক্ষাতের জন্য রওশন এরশাদের গুলশানের বাসভবনে যান মজীনা। সেখানে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তাঁদের বৈঠক চলে।

No comments

Powered by Blogger.