পোশাক খাত ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সজাগ থাকুন: প্রধানমন্ত্রী

দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সম্ভাবনাময় তৈরি পোশাক খাতকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । তাদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আজ রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘ঢাকা অ্যাপারেল সামিট’ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের। শেখ হাসিনা দেশের তৈরি পোশাক খাতের জন্য আগামী দিনের রোডম্যাপ প্রণয়নে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এক্সপো ফর বিল্ডিং অ্যান্ড ফায়ার সেফটি-২০১৪ এবং সেন্টার ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এই সামিট ও এক্সপোর আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। কিন্তু অনেকে এটা পছন্দ করেন না। এ জন্য তাঁরা এই খাতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, যেকোনো সমস্যা সমাধানের সামর্থ্য সরকারের আছে। তিনি পোশাক খাতকে রক্ষা করতে দেশি ও বিদেশি চক্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিক, শ্রমিক, বিদেশি ক্রেতা, ভোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত করতে পণ্যের দাম বাড়ানোর জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘অনেক ক্রেতা ও তাঁদের প্রতিনিধি আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন। আমি পণ্যের দাম বাড়াতে তাঁদের প্রতি আহ্বান জানাই। এর ফলে আমাদের শ্রমিক ভাই ও বোনেরা আরও সাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাপন করতে পারবেন এবং তখন সবাই উন্নয়নের সম-অংশীদার হবেন।’
শেখ হাসিনা তৈরি পোশাকের আরও নতুন নতুন বাজার খোঁজার জন্য দেশের রপ্তানিকারকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার তৈরি পোশাকের বাজার সম্প্রসারণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড ও জাপান জিএসপির রুলস অব অরজিন শিথিল করেছে। সরকারের এসব পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ ভারতে ৪৬টি পণ্য এবং চীনে ৯৮ শতাংশ পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়েছে। এ জন্য আমি পোশাক রপ্তানিকারকদের আহ্বান জানাই যে এসব সুযোগ-সুবিধার সদ্ব্যবহার করুন, সরকার আপনাদের পাশে থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে তৈরি পোশাক খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘বহুমুখীকরণের পাশাপাশি বাজার বাড়াতে হবে।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। সেখানে জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি অব ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পার্লামেন্টারি স্টেট সেক্রেটারি হেনস-জোয়েচিন ফুচেল, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট ডেলিগেশন ফর রিলেশনস উইথ দ্য কান্ট্রিজ অব সাউথ এশিয়ার চেয়ারপারসন জেন ল্যাম্বার্ট, এলায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স ফর সেফটির চেয়ারম্যান এলেন তুসচার ও এইচএসবিসি ব্যাংক বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ফ্রাঙ্কোইচ দি মেইকো বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম, স্বাগত বক্তব্য দেন ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন চৌধুরী ও ধন্যবাদ জানান সেকেন্ড ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম মান্নান।

No comments

Powered by Blogger.