চীনের মহাপ্রাচীর পরিদর্শনে প্রেসিডেন্ট

চীন সফররত  প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ দেশটির ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা মহাপ্রাচীর পরিদর্শন করেছেন। গতকাল সকালে সাড়ে ৬ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রাচীরের পাতালিং অংশে পৌঁছান তিনি। স্ত্রী রাশিদা খানমকে সঙ্গে নিয়ে প্রাচীরের কিছু পথ হেঁটে উঠে তিনি প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করেন। মহাপ্রাচীর ঘুরে দেখার পর আবদুল হামিদ ভিজিটরস বইয়েও সই করেন। বেইজিং থেকে ৪৩ মাইল (৭০ কিলোমিটার) উত্তর-পশ্চিমে চীন-বাদালিং হচ্ছে মহাপ্রাচীরের সর্বোচ্চ পরিচিত সেক্টর। ১৯৫০’র দশকের শেষের দিকে এটি সংস্কার করা হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার দেশী ও বিদেশী পর্যটক সেখানে জড়ো হন। চীন সাম্রাজ্যে বহিরাক্রমণ ঠেকাতে কিন শি হাং সম্রাটের আমলে খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকের ২১০ থেকে ২৫৯’র মধ্যে বিশাল এই স্থাপনার নির্মাণকাজ শেষ হয়। এরপর মিং রাজবংশের আমলে খ্রিস্ট পরবর্তী ১৪ থেকে ১৭ শতকে (১৩৬৮ থেকে ১৬৪৪) মহা প্রাচীরের সর্বাধিক পরিচিত ও সংরক্ষিত কেস্টর নির্মিত হয়। জনশ্রুতি আছে, এটি নির্মাণকালে ৪ লাখ শ্রমিক মৃত্যুবরণ করে এবং তাদের অনেককে এখানেই সমাহিত করা হয়। মাটি ও পাথরে নির্মিত ৩ হাজার মাইলেরও বেশি দীর্ঘ এই প্রাচীর পশ্চিমে সাংহাই গুয়ানের চীন সমুদ্র থেকে গাংসু প্রদেশ অতিক্রম করেছে। এর ভিত্তি (বেজ) হচ্ছে ১৫ থেকে ৫০ ফুট এবং উচ্চতা ১৫ থেকে ৩০ ফুট। শীর্ষে ১২ ফুট বা এর বেশি উচ্চতার দুর্গ প্রাকার রয়েছে। এর সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে প্রহরী চৌকিও (গার্ড টাওয়ার) আছে। বর্তমানে সাধারণভাবে এটি ইতিহাসের এক অতি চিত্তাকর্ষক স্থাপত্য কীর্তি হিসেবে স্বীকৃত। ইউনেস্কো ১৯৮৭ সালে এই স্থাপনাকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে। মহাপ্রাচীর পরিদর্শনের সময় প্রেসিডেন্টকে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত মাত্র একজন চীনা নাগরিক প্রায় দেড় বছর সময় নিয়ে পুরো মহাপ্রাচীর হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন। সাম্রাজ্য রক্ষায় দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে পৃথিবীতে মানুষের তৈরি সবচেয়ে বড় স্থাপনাটি নির্মাণ করেছিল চীনারা। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক একটি সংলাপে যোগ দিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে গত ৭ই নভেম্বর বেইজিং পৌঁছান প্রেসিডেন্ট। আজ বেইজিং সফর শেষ করে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাবেন তিনি। আগামী ১৬ই নভেম্বর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.