গণতন্ত্রের আরেক পিঠ গণমাধ্যম: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের আরেক পিঠ হচ্ছে গণমাধ্যম। আমরা এখন যেটুকু গণতন্ত্র ভোগ করছি, তাতে গণমাধ্যমের ভূমিকা আছে। গণমাধ্যমকর্মীদের মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজাকারকে এক পাল্লায় মাপার সুযোগ নেই। আজকে আমরা যে পর্যায়ে আছি, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতির জঞ্জাল বর্জন করে সামনের দিকে এগোচ্ছি। এই এগোনোর পথে গণমাধ্যম সাহসী এবং বস্তুনিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।’

>>‘ডিআরইউ-গ্রামীণফোন রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০১৪’ অনুষ্ঠানে অতিথিদের সঙ্গে পুরস্কার বিজয়ীরা। ছবি: ফোকাস বাংলা
আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ডিআরইউ-গ্রামীণফোন রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০১৪’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সনদ ও গ্রামীণফোন লিমিটেডের হেড অব কমিউনিকেশনস মার্কাস এডাকটুসন অর্থ পুরস্কারের চেক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হানসানুল হক ইনু আরও বলেন, ‘আজকের গণমাধ্যম যে প্রেক্ষাপটে কাজ করছে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এটা একটা উত্তরণ পর্ব।’ তিনি বলেন, গণমাধ্যম সব সময় নিরপেক্ষ এবং বস্তুনিষ্ঠ থাকবে। কিন্তু কিছু কিছু বিষয় যেমন: গণতন্ত্রের পক্ষে, সামরিক শাসন, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকে অঙ্গীকারবদ্ধ বা একটা পক্ষ নিতে হয়। এখানে মাঝখানে হাঁটার সুযোগ নেই।’
ডিআরইউর সভাপতি শাহেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহজাহান সরদার, ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুরসালিন নোমানী বক্তব্য দেন।
এ সময় জুরি বোর্ডের সদস্য সমকাল–এর সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস –এর সম্পাদক এ এইচ এম মোয়াজ্জেম হোসেন, নিউজ টুডে–এর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহ আলমগীর, ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য গোলাম রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ও ফিল্ম অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান আ জ ম শফিউল আলম ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
টেলিভিশন, অনলাইন ও প্রিন্ট মাধ্যমে এবার ২৫টি বিষয়ের ওপর বছরের সেরা প্রতিবেদনের জন্য ২৭ জন প্রতিবেদক পুরস্কার পান। দেশের সর্ববৃহৎ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন লিমিটেড এতে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে।
সেরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য সাগর-রুনী স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন যৌথভাবে আলাউদ্দিন আহমেদ (যমুনা টেলিভিশন), কাজী জামশেদ নাজিম (দ্য রিপোর্ট ২৪ ডটকম) ও রোজিনা ইসলাম (প্রথম আলো)। প্রিন্ট মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য শফিকুল কবির স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন আবু সালেহ (সমকাল), তথ্য, যোগাযোগপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ বিষয়ে পথিক সাহা স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন রাজু আহমেদ (জিটিভি)। প্রত্যেকের পুরস্কারের মূল্যমান এক লাখ টাকা।
এ ছাড়া প্রিন্ট মাধ্যমে শিক্ষাবিষয়ক সেরা প্রতিবেদনের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন মো. মামুন হোসেন ( যায়যায়দিন), সংসদ, আইন ও বিচার এবং নির্বাচন কমিশনবিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য সেলিম জাহিদ (প্রথম আলো ), রাজনীতি বিষয়ে জুলফিকার আলি মানিক (ঢাকা ট্রিবিউন), নগরীর সমস্যা ও সম্ভাবনা বিষয়ে দীপন নন্দী (বর্তমান), অর্থনীতি বিষয়ে রিপোর্টে কাওসার রহমান (জনকণ্ঠ), নারী ও শিশু বিষয়ে হামিদুর রহমান ভূইয়া (যুগান্তর), ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ে রাজীব নূর (সমকাল), ক্রীড়া বিষয়ে মো. রাহেনুর ইসলাম (কালের কণ্ঠ), বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ে মো. মামুন-অর-রশিদ (জনকণ্ঠ), কৃষি বিষয়ে পরিমল পালমা (ডেইলি স্টার), অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে সুমি খান (জনকণ্ঠ), জনশক্তি বিষয়ে তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের (ইনকিলাব), তথ্য যোগাযোগপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ বিষয়ে ফখরুল ইসলাম (প্রথম আলো) ও স্বাস্থ্য বিষয়ে মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল (ঢাকা ট্রিবিউন )। টেলিভিশন মাধ্যমে অর্থনীতি বিষয়ে মজুমদার বাবু (চ্যানেল ২৪), নগরীর সমস্যা ও উন্নয়ন বিষয়ে নাজমুল হোসেন (যমুনা টেলিভিশন), অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে মোরছালীন বাবলা (চ্যানেল আই), সুশাসন ও দুর্নীতি বিষয়ে পারভেজ নাদির রেজা (একাত্তর), পরিবেশ ও প্রকৃতি বিষয়ে শিমুল বাশার (ইনডিপেনডেন্ট)। অনলাইন মাধ্যমে মানবাধিকার বিষয়ে রফিকুল ইসলাম (বাংলা নিউজ ২৪ ডটকম), উন্নয়ন ও সমস্যা বিষয়ে আবু হানিফ রানা (দ্যা রিপোর্ট ২৪ ডটকম) ও রেডিও প্রতিবেদনের জন্য শাহনাজ শারমীন (এবিসি রেডিও)। প্রতিটির পুরস্কারের মূল্যমান ৭৫ হাজার টাকা।

No comments

Powered by Blogger.