জার্মান স্বপ্ন সত্যি হয়েছে : মার্কেল

বার্লিন দেয়াল পতনের মাধ্যমে স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্ব এটাই দেখেছে যে, মানুষকে অবদমিয়ে রাখার কোনো কিছুই টিকতে পারে না। বার্লিন দেয়াল পতনের রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করলেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল।
১৯৬১ সালে নির্মিত পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানিকে বিভক্তকারী বার্লিন দেয়াল পতনের ২৫ বছর পূর্তি হয় রোববার। ১৯৮৯ সালে এই দেয়াল ভাঙা স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার অন্যতম নিদর্শন। কমিউনিস্ট শাসিত বন্দিদশা পূর্ব জার্মানি থেকে পালিয়ে গণতান্ত্রিক মুক্ত পশ্চিম জার্মানিতে জনগণের পালিয়ে যাওয়া রুখতে এই দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছিল। পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে মানবাধিকার হুমকির মুখে পড়েছে, সেসব দেশের প্রতি ইঙ্গিত করে অ্যাঞ্জেলা মার্কেল বলেন, বার্লিন দেয়ালের পতন পরিস্থিতি উন্নয়নের বার্তা দেয়। এই ঘটনা ইউক্রেন ইরাকসহ অন্যান্য দেশের জন্য শিক্ষা। পূর্ব জার্মানিতে বেড়ে ওঠার স্মৃতি উল্লেখ করে মার্কেল বলেন, এতেই প্রমাণিত হয় অতীতের বৈরিতা ভুলে যাওয়া কত সহজ। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তা মনে রাখা। আমরা চাইলে সবকিছুতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারি।বার্লিন দেয়াল পতনের রজতজয়ন্তী পালন২৫ বছর আগে পূর্ব জার্মানির লাইপশিস শহরে শান্তিপূর্ণ মিছিলের মধ্য দিয়ে এক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। যে মিছিলে অংশ নিয়েছিল ৭০ হাজার মানুষ। সেই মিছিলের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছিল অন্যান্য শহরেও। ভেঙে গিয়েছিল বার্লিন প্রাচীর। বিশ্বের ইতিহাসে জন্ম নিয়েছিল এক নতুন ইতিহাস। ১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর। দিনটা ছিল এক আশ্চর্য দিন। সন্ধ্যায় সেই আমলা-মার্কা ঘোষণা, এখন থেকে সবার যাতায়াতের স্বাধীনতা থাকবে। সেখান থেকে শুরু করে সে রাতে বার্লিন প্রাচীরের পতন অবধি মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জার্মান তথা ইউরোপীয়দের জীবন পাল্টে যায়। কমিউনিস্ট শাসিত পূর্ব জার্মানি গণআন্দোলন আর পলায়নপর নাগরিকদের চাপে ভেঙে পড়ে। ৯ নভেম্বর সব বিস্মৃত, অবহেলিত অনুভূতি আবার ফুটে ওঠে : দুতরফেই পুনর্মিলনের আকাক্সক্ষা; পুবের মানুষদের স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা। জার্মানরা, বিশেষ করে বার্লিনের মানুষ যেন ঘোরে ছিলেন। এমন এক আনন্দের অনুভূতি, যা তাদের অনেককে কাঁদিয়ে ছেড়েছিল। সেই অনুভূতিই বুঝিয়ে দেয়, ৪০ বছরের বিভাজনও দুই জার্মানির আত্মীয়তাবোধকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি। এই প্রসঙ্গে মনে করা যেতে পারে উইলি ব্রান্ডের সেই চিরন্তন, অপরূপ কথাগুলো : যা একসঙ্গে হবার কথা, তাই এখন একসঙ্গে হচ্ছে। জার্মান কথাটা হল ওয়াকসেন, মানে গজিয়ে ওঠা, লতাপাতার মতো, প্রকৃতির মতো। সেই উদ্ভিদ জার্মান ঐক্যে কিন্তু জার্মানির প্রতিবেশীদের কোনো বিপদ ঘটেনি। ১৯৮৯র শান্তিপূর্ণ বিপ্লব জার্মানিকে ইউরোপের কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত করে।

No comments

Powered by Blogger.