অবশেষে কহিলেন বিষাদে by শরীফুল ইসলাম খান
নির্বাচনকালীন
সরকার থেকে বাদ পড়েছেন অনেক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। এদের মধ্যে আলোচনায়
এসেছেন যে কয়জন তাদের মধ্যে অন্যতম দীপু মনি, মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ওই তিনজনের বাদ পড়াটা যতটুকু না বিষয়বস্তু হয়ে
দাঁড়িয়েছে, তার চেয়ে বেশি জনমনে আলোচনায় এসেছে বাদ পড়ার পেছনের দিকগুলো।
বেশ কয়েকটি পত্রিকা এর অনেক কারণও উল্লেখ করেছে। পত্রিকায় প্রকাশিত সেই
মন্তব্যগুলোর মধ্যে এসেছে, এরা ক্ষমতায় থাকাকালীন অবস্থায় অনেক বিতর্কিত
ঘটনার জন্ম দেয়ায় দলের শীর্ষ নেতাদের বিরাগভাজন হয়েছেন এবং নির্বাচনকালীন
সরকারের আয়তন ছোট রাখার কারণে এদের মন্ত্রিপরিষদের বাইরে রাখা হয়েছে।
তাদেরসহ আরও অনেকের সম্পর্কে মিডিয়া এর আগেও সমালোচনার ঝড় তুলেছিল; কিন্তু
সরকার সেদিকে খেয়াল দেয়নি বরং মনে মনে এগুলোকে এক ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে
নিয়েছিল। মজার বিষয় হচ্ছে, এখন দলের সিনিয়র নেতারাই তাদের এসব কর্মকাণ্ডের
সমালোচনা করছেন এবং তা প্রচার মাধ্যমেও জায়গা করে নিচ্ছে। এমনকি অনেক
অপ্রকাশিত সত্যও থলে থেকে বের হয়ে আসছে। বিশেষ করে ড. ইউনূসের সঙ্গে
সরকারের সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর দায়ভারও এখন ব্যক্তির পারিবারিক সম্পর্কের
জের বলে প্রচারিত হচ্ছে। অথচ ড. ইউনূসকে খাটো করে কথা বলতে এবং কলমে আগুন
ঝরাতে যারা রীতিমতো যুদ্ধে নেমেছিলেন তাদের তালিকাও অনেক বড়। এমনকি অনেক
শক্তিশালী পত্রিকাকেও সে সময় ‘দেখি না কী হয়’ ধরনের ভূমিকা নিয়ে বেশ
কিছুদিন নিশ্চুপ থাকতে হয়েছিল।
যাই হোক, অপরদিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সারা দেশ যখন উত্তাল, তখন ঢাকা শহরে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অনেক নেতাকর্মী নীরব ভূমিকা পালন করছিলেন, এমনকি কেউ কেউ সরকারের সঙ্গে আপস করতে পারেন এমন সন্দেহের তালিকায়ও ছিলেন। বিশেষ করে গ্রেফতার এড়ানোর ভয়ে দলীয় কার্যালয়ে যখন প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে একমাত্র রিজভী সাহেব ছাড়া অন্য কাউকে দেখা যায়নি, তখন খোদ বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করে বলেছিলেন- ‘সারা দেশ উত্তাল, ফুঁসে উঠছে সর্বস্তরের মানুষ, ঢাকায় এই নীরবতা কেন? যারা মন্ত্রী, এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন সেই নেতারা কোথায়? কী তাদের ভূমিকা? ভীতু আর মোনাফেকদের জায়গা বিএনপিতে নয়।’ (সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন ১৪ নভেম্বর, ২০১৩)
উপরোল্লিখিত বিষয়টুকু তুলে ধরে যেটি উত্থাপন করার ইচ্ছা তা হচ্ছে, এদেশের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সরকারি দলে বা বিরোধী দলে নিজের প্রতিপত্তি, ক্ষমতা ও রাজ-রাজা ভাবটুকু অর্জনের জন্যই অনেক সুধীজনের আগমন ঘটে। সত্যিকার অর্থে জনমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করার মতো মানসিকতাসম্পন্ন নেতা বা কর্মীর সংখ্যা অতি নগণ্য। ভয়-বিপদ উপেক্ষা করে দল, দেশ ও জনগণের পক্ষে সংগ্রাম করার ধারা বিলুপ্ত প্রায়। বরং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছুতায় ও হাতছানিতে দলছুটের রাজনীতি কখনও কখনও গোল্লাছুট খেলার মতোই রূপ ধারণ করে। এছাড়া আমাদের দেশে রাজনীতিবিদদের কোনো পূর্ব গুণ তৈরির ম্যাকানিজম নেই। সুষ্ঠু রাজনীতি এবং দক্ষ নেতা তৈরি করার মতো কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোও আমরা তৈরি করিনি। নেতাদের ভিশন কী হওয়া উচিত, কিভাবে স্ট্র্যাটেজি নিয়ে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করতে হয়, তাও জানা নেই বেশিরভাগ রাজনীতিকের। সুযোগ বুঝে ভোল পাল্টানো আর নিজের ক্ষমতা, বিত্ত, কিভাবে ফুলে ফেঁপে উঠতে পারে সেটাই মুখ্য এবং সেই কর্মকাণ্ডেই এরা জড়িয়ে থাকে। এ মুহূর্তে বিএনপির রাজনীতিতে নিজেদের চাহিদাকে জয়যুক্ত করার কী কৌশল হওয়া উচিত দলের অনেক নেতাকর্মীরই তা জানা নেই। সেই ফাঁকফোকর ভাঙিয়েই নিজেদের কৌশল প্রয়োগ করছে সরকারি দল। এদেশে যে রাজনীতিকরা ভালো কিছু দিতে পারেন, তারা তাঁবেদারি করা লোকদের ঠেলাঠেলিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে থাকেন এবং পরম সত্য কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করতে ভয় পান, পাছে তাদের আদব-কায়দা সম্পর্কে প্রশ্ন ওঠে বা দলীয় প্রধানের চক্ষুশূল হন। স্তু‘তি গাওয়া লোকদের ভিড়ে অনেক সময় সরকারপ্রধান বা বিরোধীদলীয় প্রধান সঠিক নেতৃত্বের পথ থেকে বিচ্যুত হন। পরিচালিত হন ভুল পথে। অন্যদিকে স্তুতি গাওয়া লোকেরা নিজ স্বার্থে দলীয় প্রধানদের চোখে কালো রুমাল বেঁধে দেয়। কালো পট্টি চোখে বেঁধে হাঁটলে গর্তে পড়া ছাড়া অন্য উপায় থাকে না। তাদের গর্তে রেখে লুটপাট, ধ্বংস, সন্ত্রাস, জমি দখল, ভূমি দখল চলতে চলতে যখন প্রধানদের বোধোদয় ঘটে তখন অনেক কিছুই হারিয়ে যায়। তাই চাটুকার, তাঁবেদার ও স্তুতি গাওয়া নিজ স্বার্থবাদী দলীয় কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখা, কর্মীদের কর্মপরিধি নিয়ন্ত্রণ করা দলীয় প্রধানদের নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে নেয়া খুবই প্রয়োজন। কারণ তাদের কার্যকলাপের কালিমা প্রধানদের গায়েও লেপ্টে যায়।
এ থেকে মুক্ত হওয়ার একটি বিশেষ দিক নিয়ে সরকার ও বিরোধী দল ভেবে দেখতে পারে। এর একটি উদাহরণ এরই মধ্যে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশকে উপহারও দিয়েছিলেন। তা হচ্ছে তিনি গণভবনে নিজ দলের সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে একটি আনন্দ মেলার আয়োজন করেছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে নিজেও গানের তালে তালে গান গেয়েছিলেন। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের মতো আজব একটি দেশের সরকারপ্রধানের মাথায় যে চাপ বয়ে বেড়াতে হয়, স্বল্প সময়ের জন্য হলেও তিনি তখন সে চাপমুক্ত ছিলেন। মুক্ত চিন্তার প্রকাশ ঘটাতে পারে এমন কিছু গণজমায়েত বা মেলা যদি কোনো দল দেশের সার্বিক পরিস্থিতিবিষয়ক করতে পারেন এবং সেখানে স্যাম্পল টেস্টিংয়ের মতো দেশের সর্বস্তরের লোকজনকে জায়গা দিয়ে তাদের সত্য কথা বলার অধিকার দেন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন তাহলে দেশ কোথায় চলছে এবং দেশকে কী দিতে হবে তা অকপটে জেনে যাবেন। বর্তমানে কনসোলিডেশনের যে যুগ চলছে (সংবাদ মাধ্যমে লেখালেখিতে, টকশোতে আলাপচারিতায়, মিডিয়ায় অংশগ্রহণ, সুশীল সমাজ ইত্যাদি) তা থেকে এ মেলা বা জনজমায়েতকে আলাদা রাখতে হবে। সিন্ডিকেটেড বা কনসোলিডেটেড বিজ্ঞদের বাইরেও আমাদের সমাজ ও দেশে অনেক মেধার ছড়াছড়ি আছে, যারা দেশের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় অনেক কিছুর সঠিক পথ বাতলে দিতে পারবে। আমরাই দেখেছি আমাদের দাদি-নানি যারা খুব একটা বাইরে বের হতে পারতেন না তারাও বলতেন, ‘এমন যুগ আসবে, নখের মধ্যে মানুষের ছবি দেখা যাবে।’ আজকের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তাদের ধারণাকে খুব একটা বেশি অবজ্ঞা করতে পারে কি?
অন্যদিকে জনমনের চাওয়া ও তা শোনা শুধু আনুষ্ঠানিকতায় সাজিয়ে রাখলে হবে না। ‘বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমার’ এ ধারায় অথবা গ্রামের সেই পরাভূত কুস্তিগিরের মতো পা উপরে রেখে বলা যাবে না, ‘আমি হেরে গেছি তাতে হয়েছে কী, আমার পা তো উপরে ছিল।’ জনগণের ইচ্ছায় দেশকে চালাতে হবে। জনগণের রায়ের কাছে পরাভূত হওয়া মেনে নেয়া শিখতে হবে। এ মুহূর্তে একটা জনমত যাচাই সব দলই করতে পারছেন খুব সহজেই, তা হচ্ছে একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচন খুব বেশি কাম্য জনসাধারণের কাছে। কিন্তু জনগণের আকাক্সক্ষা উপেক্ষা করে রাজনীতিকরা নিজ নিজ স্বার্থে নেমেছেন ধ্বংসের হোলি খেলায়। বিরোধী দল বা সরকারি দল কারও দায়ভার কোনো অংশেই কম নয় এতে।
যাই হোক, অপরদিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সারা দেশ যখন উত্তাল, তখন ঢাকা শহরে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অনেক নেতাকর্মী নীরব ভূমিকা পালন করছিলেন, এমনকি কেউ কেউ সরকারের সঙ্গে আপস করতে পারেন এমন সন্দেহের তালিকায়ও ছিলেন। বিশেষ করে গ্রেফতার এড়ানোর ভয়ে দলীয় কার্যালয়ে যখন প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে একমাত্র রিজভী সাহেব ছাড়া অন্য কাউকে দেখা যায়নি, তখন খোদ বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করে বলেছিলেন- ‘সারা দেশ উত্তাল, ফুঁসে উঠছে সর্বস্তরের মানুষ, ঢাকায় এই নীরবতা কেন? যারা মন্ত্রী, এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন সেই নেতারা কোথায়? কী তাদের ভূমিকা? ভীতু আর মোনাফেকদের জায়গা বিএনপিতে নয়।’ (সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন ১৪ নভেম্বর, ২০১৩)
উপরোল্লিখিত বিষয়টুকু তুলে ধরে যেটি উত্থাপন করার ইচ্ছা তা হচ্ছে, এদেশের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সরকারি দলে বা বিরোধী দলে নিজের প্রতিপত্তি, ক্ষমতা ও রাজ-রাজা ভাবটুকু অর্জনের জন্যই অনেক সুধীজনের আগমন ঘটে। সত্যিকার অর্থে জনমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করার মতো মানসিকতাসম্পন্ন নেতা বা কর্মীর সংখ্যা অতি নগণ্য। ভয়-বিপদ উপেক্ষা করে দল, দেশ ও জনগণের পক্ষে সংগ্রাম করার ধারা বিলুপ্ত প্রায়। বরং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছুতায় ও হাতছানিতে দলছুটের রাজনীতি কখনও কখনও গোল্লাছুট খেলার মতোই রূপ ধারণ করে। এছাড়া আমাদের দেশে রাজনীতিবিদদের কোনো পূর্ব গুণ তৈরির ম্যাকানিজম নেই। সুষ্ঠু রাজনীতি এবং দক্ষ নেতা তৈরি করার মতো কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোও আমরা তৈরি করিনি। নেতাদের ভিশন কী হওয়া উচিত, কিভাবে স্ট্র্যাটেজি নিয়ে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করতে হয়, তাও জানা নেই বেশিরভাগ রাজনীতিকের। সুযোগ বুঝে ভোল পাল্টানো আর নিজের ক্ষমতা, বিত্ত, কিভাবে ফুলে ফেঁপে উঠতে পারে সেটাই মুখ্য এবং সেই কর্মকাণ্ডেই এরা জড়িয়ে থাকে। এ মুহূর্তে বিএনপির রাজনীতিতে নিজেদের চাহিদাকে জয়যুক্ত করার কী কৌশল হওয়া উচিত দলের অনেক নেতাকর্মীরই তা জানা নেই। সেই ফাঁকফোকর ভাঙিয়েই নিজেদের কৌশল প্রয়োগ করছে সরকারি দল। এদেশে যে রাজনীতিকরা ভালো কিছু দিতে পারেন, তারা তাঁবেদারি করা লোকদের ঠেলাঠেলিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে থাকেন এবং পরম সত্য কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করতে ভয় পান, পাছে তাদের আদব-কায়দা সম্পর্কে প্রশ্ন ওঠে বা দলীয় প্রধানের চক্ষুশূল হন। স্তু‘তি গাওয়া লোকদের ভিড়ে অনেক সময় সরকারপ্রধান বা বিরোধীদলীয় প্রধান সঠিক নেতৃত্বের পথ থেকে বিচ্যুত হন। পরিচালিত হন ভুল পথে। অন্যদিকে স্তুতি গাওয়া লোকেরা নিজ স্বার্থে দলীয় প্রধানদের চোখে কালো রুমাল বেঁধে দেয়। কালো পট্টি চোখে বেঁধে হাঁটলে গর্তে পড়া ছাড়া অন্য উপায় থাকে না। তাদের গর্তে রেখে লুটপাট, ধ্বংস, সন্ত্রাস, জমি দখল, ভূমি দখল চলতে চলতে যখন প্রধানদের বোধোদয় ঘটে তখন অনেক কিছুই হারিয়ে যায়। তাই চাটুকার, তাঁবেদার ও স্তুতি গাওয়া নিজ স্বার্থবাদী দলীয় কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখা, কর্মীদের কর্মপরিধি নিয়ন্ত্রণ করা দলীয় প্রধানদের নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে নেয়া খুবই প্রয়োজন। কারণ তাদের কার্যকলাপের কালিমা প্রধানদের গায়েও লেপ্টে যায়।
এ থেকে মুক্ত হওয়ার একটি বিশেষ দিক নিয়ে সরকার ও বিরোধী দল ভেবে দেখতে পারে। এর একটি উদাহরণ এরই মধ্যে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশকে উপহারও দিয়েছিলেন। তা হচ্ছে তিনি গণভবনে নিজ দলের সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে একটি আনন্দ মেলার আয়োজন করেছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে নিজেও গানের তালে তালে গান গেয়েছিলেন। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের মতো আজব একটি দেশের সরকারপ্রধানের মাথায় যে চাপ বয়ে বেড়াতে হয়, স্বল্প সময়ের জন্য হলেও তিনি তখন সে চাপমুক্ত ছিলেন। মুক্ত চিন্তার প্রকাশ ঘটাতে পারে এমন কিছু গণজমায়েত বা মেলা যদি কোনো দল দেশের সার্বিক পরিস্থিতিবিষয়ক করতে পারেন এবং সেখানে স্যাম্পল টেস্টিংয়ের মতো দেশের সর্বস্তরের লোকজনকে জায়গা দিয়ে তাদের সত্য কথা বলার অধিকার দেন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন তাহলে দেশ কোথায় চলছে এবং দেশকে কী দিতে হবে তা অকপটে জেনে যাবেন। বর্তমানে কনসোলিডেশনের যে যুগ চলছে (সংবাদ মাধ্যমে লেখালেখিতে, টকশোতে আলাপচারিতায়, মিডিয়ায় অংশগ্রহণ, সুশীল সমাজ ইত্যাদি) তা থেকে এ মেলা বা জনজমায়েতকে আলাদা রাখতে হবে। সিন্ডিকেটেড বা কনসোলিডেটেড বিজ্ঞদের বাইরেও আমাদের সমাজ ও দেশে অনেক মেধার ছড়াছড়ি আছে, যারা দেশের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় অনেক কিছুর সঠিক পথ বাতলে দিতে পারবে। আমরাই দেখেছি আমাদের দাদি-নানি যারা খুব একটা বাইরে বের হতে পারতেন না তারাও বলতেন, ‘এমন যুগ আসবে, নখের মধ্যে মানুষের ছবি দেখা যাবে।’ আজকের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তাদের ধারণাকে খুব একটা বেশি অবজ্ঞা করতে পারে কি?
অন্যদিকে জনমনের চাওয়া ও তা শোনা শুধু আনুষ্ঠানিকতায় সাজিয়ে রাখলে হবে না। ‘বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমার’ এ ধারায় অথবা গ্রামের সেই পরাভূত কুস্তিগিরের মতো পা উপরে রেখে বলা যাবে না, ‘আমি হেরে গেছি তাতে হয়েছে কী, আমার পা তো উপরে ছিল।’ জনগণের ইচ্ছায় দেশকে চালাতে হবে। জনগণের রায়ের কাছে পরাভূত হওয়া মেনে নেয়া শিখতে হবে। এ মুহূর্তে একটা জনমত যাচাই সব দলই করতে পারছেন খুব সহজেই, তা হচ্ছে একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচন খুব বেশি কাম্য জনসাধারণের কাছে। কিন্তু জনগণের আকাক্সক্ষা উপেক্ষা করে রাজনীতিকরা নিজ নিজ স্বার্থে নেমেছেন ধ্বংসের হোলি খেলায়। বিরোধী দল বা সরকারি দল কারও দায়ভার কোনো অংশেই কম নয় এতে।
No comments