সেরা কোকো ফলে যে গ্রামে

ভেনেজুয়েলার একটি গ্রাম চুয়াও। ওই গ্রামের প্রধান যে খোলা চত্বর, নতুন কেউ সেখানে গেলে চোখে পড়বে সুন্দর এক দৃশ্য। মস্ত আঙিনাজুড়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে রাশি রাশি কোকো ফল। শুকাতে থাকা ফলের ওপর উজ্জ্বল রোদের ঝিলিক একধরনের চপলতা জাগাবে মনে। নবাগত অতিথিকে সামনে পেলে উচ্ছ্বাস দেখা যায় স্থানীয় মানুষের মধ্যে। জমে থাকা কোকো ফল দেখিয়ে বলে, ‘এই দেখো, বিশ্বের সবচেয়ে সেরা কোকো এখানে।’
কফি আর চকলেটের মূল উৎস এই কোকো ফল। কাকাও বলে পরিচিত একধরনের গাছে জন্মে কোকো। বিশ্বের আরও যেসব দেশে কোকো ভালো জন্মে, তারা সবাই যে ভেনেজুয়েলার গ্রামটির এই শ্রেষ্ঠত্বের দাবি মেনে নেবে, তা নয়। তবে কোকোর সঙ্গে চুয়াও গ্রামের মানুষের জীবন যে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা, তা অস্বীকার করার জো নেই।
গ্রামটির কোকো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এমপ্রেসা ক্যাম্পেসিনা চুয়ার মালিক আলসিদেস হেরেরা। ১৯৭৬ সাল থেকে তাঁরা কোকো উৎপাদন করে আসছেন।
হেরেরা বলেন, ‘চুয়াও গ্রামে জন্ম নিলে কোকো ফলের সঙ্গে বাঁধা পড়বে তাঁর জীবন।’ তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় আমি যখন ওই আঙিনার পাশ দিয়ে গেছি, দমকা বাতাস উঠলে কত কোকো ফল কুড়িয়ে জড়ো করেছি, এর কোনো হিসাব নেই।’
হেরেরা দাবি করেন, ‘আমাদের কোকো ফলই বিশ্বের সেরা। অনেক দেশই এ ব্যাপারে একমত। অনেক বিশেষজ্ঞও তা-ই বলেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু কৌশল ব্যবহার করে হাতে কোকো প্রক্রিয়াজাত করি। ৪০০ বছর ধরে তা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়ে আসছে।’
চুয়াও গ্রাম থেকে বছরে ১৮ থেকে ২০ টন কোকো উৎপাদিত হয়, তবে ভেনেজুয়েলায় কোকোর বার্ষিক মোট উৎপাদন ২০ হাজার টন। দেশটির কোকোশিল্প মূলত নারীকেন্দ্রিক। পুরুষেরা বেশির ভাগই নির্মাণ বা উপকূলীয় মৎস্যশিল্পের সঙ্গে জড়িত।

No comments

Powered by Blogger.