খবর কালের কন্ঠের- হরতালের ধরপাকড় চলছেইঃ অহেতুক গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না -স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

বিএনপির ডাকা ৩০ নভেম্বরের হরতালকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশে ধরপাকড় চলছেই। গত শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া পুলিশি অভিযান শনিবার রাতেও অব্যাহত থাকে। গ্রেপ্তারের পাশাপাশি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার আবাসিক হোটেল ও বস্তিতে 'ব্লক রেইড' চালানো হয়। বিএনপি নেতা-কর্মী ছাড়াও টাকার বিনিময়ে হরতালে পিকেটিং করে এ রকম সন্দেহজনক ব্যক্তিদেরও পুলিশ টার্গেট করেছে। হরতালের আগের রাত পর্যন্ত এ অভিযান চলতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।
রাজধানী ছাড়াও বিভাগ ও জেলা শহর থেকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি হরতাল সমর্থনকারীদের সঙ্গে পুলিশ এবং সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। নাটোরে বিএনপির মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটায় সাবেক উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ওয়ার্ড বা মহল্লার অনেক নেতা আত্মগোপনে চলে গেছেন। গ্রেপ্তার অভিযানের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশ অনেক নিরীহ মানুষকে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন দাবি করেছেন, গত দুই দিনে সারা দেশ থেকে বিএনপির এক হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালাচ্ছেন। অযথা কাউকে হযরানি করা হচ্ছে না। একই কথা বলেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদও।
রাজধানীর অভিযান
বিশেষ অভিযানে শনিবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ৭০ জন রয়েছেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। ডিবি পুলিশ সূত্র জানায়, শনিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল রবিবার সকাল ৮টার মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে ৫৪ ধারায় ২১, ডিএমপি অর্ডিন্যান্সের বিভিন্ন ধারায় ৮৮, নিয়মিত মামলায় ৭০ এবং পুরনো মামলায় ৯২ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় হাজারীবাগ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় হত্যা মামলার দুই আসামি ছাড়াও মাদকবিরোধী চলমান অভিযানেও বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হন। ডিএমপি অর্ডিন্যান্সে আটক ৮৮ জনের বেশির ভাগই বিএনপির সমর্থক বলে জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য
বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা অহেতুক কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিরোধী দল জনগণের সম্পদের ক্ষতি এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে এ হরতাল আহ্বান করেছে। এ জন্য হরতালের আগে নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
কোনো প্রেক্ষাপট বা ইস্যু ছাড়াই বিএনপি হরতাল ডেকেছে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষা করতে পারেনি তারা। এখন যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে না পারলে পাকিস্তানি শক্তির ধারক 'জাতীয়তাবাদী' শক্তি থাকবে না। তাই তারা হরতাল ডেকেছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ঢাকা সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়ার প্রসঙ্গ তুলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি বাড়ির জন্য কান্না যেমন জাতিকে হতাশ করেছে, তেমনি তাদের হরতাল আহ্বান করাও জনগণের জন্য হতাশাব্যঞ্জক। হরতালে যদি দেশের মানুষ রাস্তায় বের না হয়, গাড়ি বের না করে, তাহলে সরকারের করার কিছু নেই। কিন্তু কেউ রাস্তায় বের হলে তাদের গাড়িতে আগুন দিলে বা ভাঙচুর করা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।
ডিএমপি কমিশনার যা বলেন
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ অযথা গ্রেপ্তার বা হয়রানির অভিযোগ নাকচ করে বলেন, হরতালের নামে অরাজকতা মেনে নেওয়া হবে না। নাশকতার চেষ্টা করলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে। হরতালকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে পুলিশ কঠোর অবস্থান নেবে। মাঠপর্যায়ে পুলিশ ব্যাপক তৎপর থাকবে। হরতালের সময় রাজপথে বা অলিগলিতে কিভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে, পিকেটারদের কিভাবে দমন করতে হবে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। হরতালে গাড়ি চলাচল বা দোকানপাট খোলা রাখার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহায়তা করার জন্যও পুলিশকে বলা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের অভিযোগ সম্পর্কে কমিশনার জানান, অনেকে আগের মামলার আসামি। অন্যরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ কারণে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি গতকাল দুপুরে ডিএমপি সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
পিকেটার মোকাবিলায় অত্যাধুনিক যান
হরতালে পিকেটিং বা বিশৃঙ্খলা মোকাবিলায় ছয়টি নতুন আর্মার্ড যান ব্যবহার করা হবে। নতুন ধরনের এ যানের ব্যবহার হবে নানামুখী। চারদিক দিয়ে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া যাবে। এ ছাড়া ভেতরে বসেই শটগানের গুলি ছোড়া যাবে।
জানা গেছে, রাস্তায় পিকেটারদের যেকোনো ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাঁদানে গ্যাস ছাড়াও প্রয়োজনে গরম পানি, রাবার বুলেট ব্যবহার করা হবে। এসব কাজে ১০ হাজার পুলিশ সদস্য হরতালের দিন মোতায়েন থাকবেন।
আজ থেকেই সতর্কতা
হরতালে নাশকতা ঠেকাতে আজ সোমবার থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেবেন। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার ছাড়াও সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা ব্যাপক নজরদারিতে রাখবেন হরতাল সমর্থকদের। হরতালের আগের দিন অর্থাৎ আজ বিকেল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত আতঙ্ক ছড়াতে হরতাল সমর্থকরা ব্যাপক ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগের ঘটনা ঘটাতে পারে বলে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা আশঙ্কা করছেন। এ ধারণা থেকেই নিরাপত্তার বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান।
হাজারো নেতা-কর্মী গ্রেপ্তারের জবাব হরতালে
========================
খবর- খুনের মামলা প্রত্যাহার, শীর্ষ সন্ত্রাসীর অব্যাহতি by নজরুল ইসলাম  প্রকৃতি- চট্টগ্রামে ঐতিহ্যের পাহাড় কেটে বহুতল ভবনঃ সুরক্ষার পরিকল্পনা ধ্বংসের অনুমোদন  প্রকৃতি খবর- জলবায়ু সম্মেলন আজ শুরু  রাজনৈতিক আলোচনা- 'পুলিশই কি হরতাল সফল করে দেয়' by আবেদ খান  আইন কানুন- 'বাহাত্তরের সংবিধান ফিরছে না' by আহমেদ দীপু  আইরিন খান বললেন,'নারীর মানবাধিকার রক্ষায় আরও সক্রিয় হতে হবে' সুত্র প্রথম আলো  আইন কানুন- চাই বিরোধের বিকল্প নিষ্পত্তি by রোমেল রহমান  আইন কানুন- ভরণপোষণ একটি আইনি অধিকার by মাসূমা তাসনীম  আইন কানুন- অর্থঋণ আদালত আইনে অনেক গলদ by এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম  আইন কানুন- গাড়ি আটক হলে মালিকের করণীয় by মো. রাশেদ খান  যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'আমাদের রাজনীতিতে বখাটেপনা' by সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম  স্মরণ- 'আমরা তো কাঁদছিই' by নেয়ামতউল্যাহ  চিত্রকলা- এক পরিবারের বৃক্ষ ও শেকড় সুত্র প্রথম আলো  গল্পসল্প- 'ঢাকা নয়, অন্য কোথা অন্য কোনোখানে' by উম্মে মুসলিমা  কৃষি আলোচনা- 'বরেন্দ্রভূমির কৃষকের বীজবিদ্রোহ' by পাভেল পার্থ  খবর- ৩০ নভেম্বরের হরতালের আগেই মারমুখী পুলিশ  খবর- চট্টগ্রামে ভাঙ্গা ভাঙ্গির রাজনীতি  ফিচার খবর - নৈরাজ্য-বিশৃঙ্খলা’র বিরুদ্ধে রাজপথে আনসার-ভিডিপি!  যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'প্রটোকল কার' : গরিবের ঘোড়ারোগ' by দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু


দৈনিক কালের কন্ঠ এর সৌজন্যে

এই খবর'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.