কে দাঁড়াবেন সাকিবের পাশে?

চাইলে ‘সহ-অধিনায়ক চাই’ শিরোনামে পত্রিকায় একটা বিজ্ঞাপন দিয়ে দিতে পারে বিসিবি। তবে জেমি সিডন্সের তো আর আগ বাড়িয়ে সেটা করার উপায় নেই। তাঁর যত দাবি বোর্ডের কাছে। কাল অনুশীলন শেষে ড্রেসিংরুমে এক বোর্ড পরিচালককে পেয়ে দাবিটা নাকি জানিয়েও দিয়েছেন কোচ, ‘আমার একজন সহ-অধিনায়ক দরকার।’
মাশরাফি বিন মুর্তজা আর নাজমুল হোসেন ইনজুরিতে। আজ তাঁদের জায়গা নিতে পারেন রুবেল হোসেন ও শফিউল ইসলাম। নাঈম ইসলামের বদলে মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দীর কথা শোনা যাচ্ছিল। আবার মাশরাফির সঙ্গে ইনজুরির মিতালিতে আপাতত বাকি সিরিজে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কিন্তু সবকিছুর পরিবর্তক থাকলেও নেই শুধু সহ-অধিনায়কের! সাকিব অধিনায়ক হয়ে যাওয়ার পর তাঁর সহ-অধিনায়ক পদটি বুঝিয়ে দেওয়ার লোক খুঁজে পাচ্ছে না বিসিবি। এর পেছনে অন্য কোনো গূঢ় রহস্যও থাকতে পারে। তবে প্রকাশ্যে যা বলা হচ্ছে, সেটি পীড়াদায়ক। সহ-অধিনায়ক করা যায়, এমন নিয়মিত পারফর্মারই নাকি নেই বাংলাদেশ দলে!
সহ-অধিনায়ক একজন পারফর্মারকেই করতে হবে, এমন তত্ত্ব মেনে যদি সিডন্সকে বলা হয় একজন সহ-অধিনায়ক খুঁজে দিতে, বিপদে নির্ঘাত তিনিও পড়বেন। নিয়মিত ভালো খেলেন এমন ক্রিকেটারদের অনেকে ইনজুরিতে, আর একজন সাকিব তো আপৎকালীন নেতৃত্ব নিতেই ব্যস্ত! অধিনায়ককে যদি দলের নেতা বলা হয়, সাকিব আক্ষরিক অর্থেই তা-ই। বোলিং-ব্যাটিং দুটিতেই এই দলের সবচেয়ে বড় ভরসা। সহ-অধিনায়ক পেতে নয়, ভালো ফলাফলের আশাতেই দলের অন্য ব্যাটসম্যানদের কাছেও কিছু চাইছেন কোচ। কাল বিকেলে মিরপুর ইনডোরে অনুশীলন শেষে যে কয় মিনিট কথা বললেন, তাতে একাধিকবার তুললেন প্রসঙ্গটা, ‘আমাদের ওপরের দিকের চার ব্যাটসম্যানের একজনকে বড় স্কোর করতে হবে।্রসেটি হলে ম্যাচ খুব ক্লোজ হবে।’ একটু পর আবার বলেছেন, ‘দলে সাকিব ছাড়া আর কোনো সুপারস্টার নেই। আমি মনে করি, সবাইকেই অবদান রাখতে হবে এবং আবারও বলছি ওপরের দিকে কাউকে বড় ইনিংস খেলতে হবে।’
আপাতত এই দুটি জিনিসই চাইছেন কোচ—একজন সহ-অধিনায়ক, সঙ্গে সাকিব ছাড়া অন্যদের কাছেও ভালো পারফরম্যান্স। পরিস্থিতি তো সেটিরই অনুকূল। তামিম-মাশরাফি-আশরাফুল দলে নেই; তাঁদের বদলে যাঁরা খেলছেন, কেন তাঁরা জোরেশোরে নিজেদের দাবি জানানোর এই সুযোগটা কাজে লাগাবেন না? মাশরাফি-নাজমুলদের জন্য শফিউল-রুবেলরা যেমন হুমকি হতে পারেন, তেমনি শাহরিয়ার নাফীসও পারেন তামিম-ইমরুলদের ঘাড়ে গরম নিঃশ্বাস ফেলতে। ভালো পারফরম্যান্সে এই স্বাস্থ্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতাটাও তো হতে পারে বড় প্রভাবক! চ্যালেঞ্জটা আছে মেনেও সেটাকে চাপ হিসেবে নিচ্ছেন না ওপেনার ইমরুল, ‘সবারই টার্গেট থাকে ভালো কিছু করে জায়গা ধরে রাখার। তবে আমার মনে হয় না এটা কোনো চাপ।’
যত রকমের চাপ আছে, সেটা বরং বাংলাদেশ তুলে দিতে চাইছে নিউজিল্যান্ডের ওপর। ইমরুলই বললেন, ‘ম্যাচ জেতার পর সবার আত্মবিশ্বাসই উঁচুতে থাকে। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে হারলে সব দলই স্বাভাবিকভাবে চাপে থাকে। আমরা পরের ম্যাচে ভালো খেললে নিউজিল্যান্ড আরও চাপে থাকবে।’ প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা এবং সেটার জন্য সামর্থ্য উজাড় করে দিয়ে খেলা—এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো ‘স্ট্র্যাটেজি’ কি আছে বাংলাদেশ দলের? খেলাধুলার সঙ্গে এই ইংরেজি শব্দটা বেশ যায়, যদিও জেমি সিডন্স যেন কালই তা প্রথম শুনলেন! ‘স্ট্র্যাটেজি...? ভালো প্রশ্ন। ভালো ক্রিকেট খেলা...আমি আসলে জানি না স্ট্র্যাটেজি বলতে ঠিক কী বোঝায়।’ তবে কীভাবে করতে হবে, সেটি ব্যাখ্যা না করলেও কী করতে হবে সেটি ভালোই জানেন সিডন্স, ‘শুধু জানি আমাদের ভালো খেলতে হবে। প্রতিটি বলেই জিততে হবে। আমাদের ব্যাটিংয়ের জন্য ভেট্টোরি খুব বিপজ্জনক। তার বলে কম উইকেট হারিয়ে বেশি রান করতে হবে।’
বাংলাদেশের জন্য যেমন ড্যানিয়েল ভেট্টোরি, নিউজিল্যান্ডের জন্য তেমনি সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড বেশ কিছুদিন ধরেই এই দুই বাঁহাতির লড়াই। প্রথম ওয়ানডেতে জিতেছেন সাকিব। এবার কি তাহলে ভেট্টোরির পালা? উত্তরটা ‘না’ হলেই ভালো।

No comments

Powered by Blogger.