পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ

শারীরিক অসুস্থতার কারণে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর চার বছর পর গতকাল শনিবার কিউবার পার্লামেন্টে ভাষণ দিয়েছেন ফিদেল কাস্ত্রো। সংক্ষিপ্ত ওই ভাষণে পরমাণু যুদ্ধ শুরু হওয়ার ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কিউবার অবিসংবাদিত এই নেতা।
চিরাচরিত জলপাই রঙের পোশাকে পার্লামেন্টের অধিবেশনকক্ষে হাজির হওয়ার পর হাততালির মাধ্যমে বিপ্লবী এই নেতাকে অভিনন্দন জানানো হয়। পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে প্রায় ১৫ মিনিটের লিখিত ভাষণ পড়ার সময় কাস্ত্রোর কণ্ঠস্বর অনেকটা দুর্বল শোনাচ্ছিল। এ সময় সে দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও তাঁর ভাই রাউল কাস্ত্রো উপস্থিত ছিলেন। ভাষণটি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও বেতারে প্রচার করা হয়েছে। এর আগে কিউবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়, কাস্ত্রো পার্লামেন্টে ভাষণ দিতে পারেন।
আগামী ১৩ আগস্ট ৮৪ বছরে পা দিতে যাওয়া ফিদেল কাস্ত্রো পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করে এ ব্যাপারে আইনসভার সদস্যদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। তিনি অভিযোগ করেন, ইরান ও উত্তর কোরিয়ায় হামলার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে পরমাণু যুদ্ধ বাধতে পারে এবং গোটা বিশ্বের ওপর এর প্রভাব পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে ইরানের দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে কাস্ত্রো বলেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের দাবির বিষয়ে সামান্যতম ছাড় দেবে না ইরান। সশস্ত্র সংঘাত বাধতে পারে, এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
চার বছরের মধ্যে কাস্ত্রোর প্রথম এই পার্লামেন্ট ভাষণ বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ, কারণ ২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার মাস আগে তিনি শেষবার এখানে ভাষণ দিয়েছিলেন। এই চার বছরে অসুস্থতার কারণে তিনি অনেকটাই জনগণের চোখের আড়ালে চলে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশের বুদ্ধিজীবী, নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর প্রতিনিধি ও তরুণ কমিউনিস্টদের সঙ্গে কথা বললেও চার বছরে এটাই তাঁর প্রথম প্রকাশ্যে কোনো রাজনৈতিক সভায় অংশগ্রহণ।
কাস্ত্রো এখনো কিউবান কমিউনিস্ট পার্টির ফার্স্ট সেক্রেটারি। গত মাসে তিনি টেলিভিশনে একটি সাক্ষাত্কার দেন। কাস্ত্রোর ভাষণের আগে রাজধানী হাভানায় কিউবার সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আবেল পিরিয়েতো বলেন, ‘কাস্ত্রোর আবার সরকারে যোগ দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি শুধু কিউবার জনগণকে খুশি করতে চেয়েছেন। আমি মনে করি, তিনি সবসময়ই কিউবার রাজনীতিতে জড়িয়ে আছেন, কিন্তু সরকারে নয়। ফিদেল আবারও সক্রিয় জীবনযাপন শুরু করেছেন; কিন্তু সরকারের কোনো বিষয়ে নাক গলাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে তিনি খুবই সতর্ক। বরং আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো নিয়েই তাঁর ভাবনা বেশি

No comments

Powered by Blogger.