থাইল্যান্ডে গুলি ও গ্রেনেড হামলায় দুই পুলিশ নিহত, আহত ১২

থাইল্যান্ডে গত শুক্রবার রাতে পৃথক দুটি হামলার ঘটনায় পুলিশের দুজন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১২ জন। তাঁদের মধ্যে সেনা ও পুলিশের সদস্যও রয়েছেন। কর্মকর্তারা জানান, দুটি হামলার ঘটনাই সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের শিবিরের পাশে ঘটেছে। তবে এখন পর্যন্ত এই হামলার দায়দায়িত্ব কেউ স্বীকার করেনি।
চলমান অচলাবস্থা নিরসনে সরকার ও বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে মীমাংসার সর্বাত্মক চেষ্টার প্রাক্কালে এ ঘটনা ঘটল। সরকার ও বিক্ষোভকারীদের তরফ থেকে বলা হয়েছে, যারা দেশে স্থিতিশীলতা চায় না, তারাই এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।
পুলিশ জানায়, রাজধানী ব্যাংককের একটি পার্কের পাশে স্থাপিত চেকপয়েন্টের সামনে শুক্রবার রাতে তিনটি গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছে। এতে পুলিশের একজন কর্মকর্তা মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশের আরও পাঁচজন ও সেনাবাহিনীর তিন সদস্য আহত হন। এর আগে ব্যাংককের বাণিজ্যিক এলাকা সিলোমে এক বন্দুকধারীর হামলায় পুলিশের আরও একজন কর্মকর্তা মারা যান। এই হামলার ঘটনায় পুলিশের দুজন সদস্যসহ মোট চারজন আহত হন। মোটরসাইকেলে করে এক ব্যক্তি এলোপাতাড়ি গুলি চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
প্রধানমন্ত্রী আপিসিত ভেজ্জাজিওয়া চলমান সংকট নিরসনে সম্প্রতি পাঁচ দফার একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। এর মধ্যে রয়েছে সেপ্টেম্বরে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া এবং ১৪ নভেম্বর আগাম নির্বাচন। তবে লালশার্ট বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণার দাবি জানিয়েছে।
শুক্রবার রাতের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে লালশার্ট বিক্ষোভকারীরা। তারা দাবি করেছে, এসব হামলার ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত নয়। বিক্ষোভকারীদের পক্ষে ওয়েং তাজিরাকার্ন বলেন, ‘এই হামলার ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা হামলাকারীদের নিন্দা জানাই।’
এই হামলা ঘটনার পরপরই প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের পর সরকারি মুখপাত্র পানিতান ওয়াত্তানায়াগর্ন জানান, বৈঠকে বিক্ষোভকারীদের শিবিরের পাশে পুলিশি নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ওয়াত্তানায়াগর্ন বলেন, চলমান সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী ভেজ্জাজিওয়ার ঘোষিত শান্তিপ্রক্রিয়া বানচাল করে দিতে এই হামলা চালানো হয়েছে। কেউ কেউ চান না যে এই সংকটের সমাধান হোক। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে লালশার্ট বিক্ষোভকারীদের উচিত সরকারের শান্তিপ্রক্রিয়ার আহ্বানে দ্রুত সাড়া দেওয়া। অন্যথায় আরও প্রাণহানির ঘটনা ঘটবে। দুর্বৃত্তরা ফের হামলা চালানোর সুযোগ পাবে। তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব বিক্ষোভের অবসান হওয়া উচিত, যাতে করে দেশের ভেতরকার বিভক্তির অবসান হয়ে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় হয়।
ব্যাংককে কর্মরত বিবিসির সাংবাদিক বলেছেন, নতুন করে এই রক্তপাতের ঘটনায় বিক্ষোভকারীদের অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে সরকার আবার তাদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু করতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.