রপ্তানি হ্রাস, শ্লথ বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি কমাবে: এডিবি

রপ্তানি-আয় কমে যাওয়া এবং বিনিয়োগের শ্লথ গতি চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির দুই অন্তরায় হয়ে উঠেছে বলে মনে করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
ম্যানিলাভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি আরও মনে করে, চলতি ২০০৯-১০ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৫ শতাংশ হবে।
গতকাল সোমবার ঢাকায় এডিবির কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের অর্থনীতির ত্রৈমাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব কথা তুলে ধরা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশ্বমন্দার সবচেয়ে বেশি আঘাত এসেছে শিল্প খাতে। তৈরি পোশাকসহ প্রধান প্রধান পণ্যের রপ্তানি কমে যাওয়ার প্রভাবটি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে পড়বে বলেও উল্লেখ করেছে এডিবি।
এডিবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ ও গ্যাস-সংকট শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধিকে ভীষণভাবে ব্যাহত করছে। আর তাই চলতি অর্থবছর শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ প্রক্ষেপণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ, যা ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ।
অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিপর্যয়ের অভিঘাত থেকে রক্ষা পেতে এডিবি শিল্প তথা রপ্তাানি খাতের পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে।
এডিবির মতে, বাংলাদেশের সীমিত রপ্তানিভিত্তি বাইরের যেকোনো আঘাতে নাজুকতার মুখে পড়তে পারে, ইতিমধ্যে তা প্রমাণিত হয়েছে।
দেশে বিপুলসংখ্যক অদক্ষ ও আধাদক্ষ শ্রমিকের জোগান থাকার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমঘন শিল্প গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছে এডিবি। বলেছে, কৃষি ও শিল্পের মধ্যে উৎপাদনশীল সংযোগ গড়ে তুলতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প বিকাশে জোর দিতে হবে।
এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে কৃষির প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে হবে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ, যা গত অর্থবছর ছিল ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ।
এর কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমে প্রতিকূল আবহাওয়া এবং কৃষিপণ্যের মূল্যহ্রাসকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এডিবির মতে, আগামী দিনগুলোয় মূল্যস্ফীতির হার আরও বাড়তে পারে। এর প্রধান কারণ হলো বিশ্ববাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি। তবে সরকার কৃষি উৎপাদন জোরদার করতে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা খাদ্যমূল্যকে স্থিতিশীল করতে সহায়তা দেবে।
অন্যদিকে ব্যাংকে বাড়তি তারল্য ও মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে গিয়ে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.