সংবর্ধনায় অনুপ্রাণিত তাঁরা

বিকেএসপির একদল নারী শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসা হলো অনুষ্ঠানে। বক্তাদের কথায় কখনো তারা উদ্দীপ্ত, কখনো নীরব। সিরডাপ মিলনায়তন কখনো করতালিতে ফেটে পড়ে, কখনো ভাবগম্ভীর হয়ে যায়।
অনুষ্ঠান শেষে বিকেএসপির মেয়েরা নতুন একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে গেল। নারী অধিকার ও ক্ষমতায়ন-বিষয়ক এই আলোচনা পর্ব থেকে একটা অনুপ্রেরণাও তারা পেল। ক্রীড়াঙ্গনে ভালো করলে আগামী দিনে তারাও সম্মান পাবে। এই অনুষ্ঠানেই ওই কিশোরীরা দেখল তাদের পূর্বসূরিদের সম্মানিত করল নারী উদ্যোগ কেন্দ্র।
১৯৯১-১৯৯৮ পর্যন্ত বিশ্ব নারী দিবসে মূলত তৈরি পোশাক-শ্রমিকদের নিয়েই অনুষ্ঠান করত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নারী উদ্যোগ কেন্দ্র। ১৯৯৯ সালে প্রথম কয়েকজন গুণী নারী ক্রীড়াবিদকে সম্মাননা জানানোর পর এ বছর আরও বড় পরিসরে ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের সম্মানিত করল সংস্থাটি। সম্মাননা জানানোর আগে কাল দুপুরেই হলো নারী ক্রীড়াবিদদের নিয়ে শোভাযাত্রা।
নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মাসুদা খাতুন শেফালির স্বাগত বক্তব্যের পরই হাতে ক্রেস্ট তুলে দিয়ে আজীবন সম্মাননা জানানো হলো ক্রীড়াঙ্গনের তিনজন কৃতী ক্রীড়াবিদ-সংগঠক হামিদা আলী, জিনাত আহমেদ ও রানী হামিদকে। পদক দিয়ে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করা হলো একসময়ের মাঠ কাঁপানো খেলোয়াড় ডলি ক্যাথরিন ক্রুস, রওশন আক্তার ছবি, সুফিয়া খাতুন, শামীমা সাত্তার মিমু, কামরুন্নাহার হিরু, সৈয়দা মরিয়ম তারেক ও মাহবুব আরা গিনিকে।
এবারের এসএ গেমসে সোনাজয়ী বাংলাদেশ দলের নারী ক্রীড়াবিদেরা ছিলেন এই মঞ্চের অন্যতম আকর্ষণ। শারমিন আক্তার (রত্না), তৃপ্তি দত্ত, ফারজানা শারমিন, শাম্মী আক্তার, মরিয়ম খাতুন, জ উ প্রু, মুন্নি খানম, হুসানু মারমা ও ইতি ইসলামকে পদক দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার আসেননি। ছিলেন কয়েকজন বিশেষ অতিথি। তাঁদেরই অন্যতম রাফিয়া আক্তার ডলি বলেন, ‘নারী দিবস পালিত হলে পুরুষ দিবসও পালিত হওয়া উচিত।’ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মিজানুর রহমান ‘আজই ভারতে সম্পূর্ণ নারীদের পরিচালনায় একটা বোয়িং বিমান উড্ডয়ন করছে’ বলার পর হাততালি পড়ল অনেক। বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক যখন বলেন, ঢাবিতে মোট শিক্ষকের ৩০ শতাংশ নারী, উপস্থিত নারী ক্রীড়াবিদদের কাছে সেটি প্রেরণাদায়ী হয়ে ওঠে।
সাংসদ মাহবুব আরা গিনি যখন বলেন, খেলাধুলার জন্য প্রতিটি জেলাকে এক কোটি টাকার স্থায়ী আমানত দেওয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে, সেটিও নারী ক্রীড়াবিদদের নতুন আশা জাগায়। তবে আসল কথাটা বলে দিয়েছেন বিকেএসপির অধ্যক্ষ আইনুন নাহার, ‘পরিকল্পনা বাস্তবায়নই এ দেশে বড় সমস্যা।’

No comments

Powered by Blogger.