রাজনীতি ও অর্থনীতি একে অপরের সম্পূরক by আবদুল আউয়াল মিন্টু

অর্থনীতি ও বাস্তব পৃথিবীর মধ্যে শক্তিশালী সেতুবন্ধন তৈরির ক্ষেত্রে সবসময়ই রাজনীতি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেকোনো সমাজেরই একটা অর্থনৈতিক ও একটা রাজনৈতিক কাঠামো থাকে। এই কাঠামো একই সঙ্গে সে সমাজের বাজার ব্যবস্থা ও সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। তাই সমাজ, ধনী হোক আর গরিব হোক, অপরিহার্য এই অঙ্গ দু’টি হচ্ছে- অর্থনীতি ও রাজনীতি। অর্থনীতির মাধ্যমে রাজনীতি বিকশিত হয়। তবে রাজনীতি অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই কোনো বাজার আদর্শই রাজনীতিকে বাদ দিয়ে বিকশিত হতে পারে না। এ দুটি অঙ্গ একে অপরের সমপূরক।

আগের শতকের বিখ্যাত অর্থনীতিবিদরা ব্যবসা, বাণিজ্য, বাজার পরিচালনা ইত্যাদি নিয়ে তাদের বিশ্লেষণমূলক লেখায় সে সময়ের সরকার-রাজনীতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও উহার গঠনকে গুরুত্বের সঙ্গে হিসেবে এনেছেন। বিশ শতকের অর্থনীতিবিদ জোসেফ শুমপিটার প্রথম এ বিষয়ে ব্যাপক ভাবে পর্যালোচনা করেন। আজকাল অর্থনীতিবিদরা যেকোনো দেশের জন্য নতুন অর্থনৈতিক মডেল বা নীতি তৈরি করার সময়ে সে দেশের রাজনীতি, ব্যবসা, শ্রমিকের বিশেষত্ব ও সে সঙ্গে আঞ্চলিক রাজনীতি-বাণিজ্য ইত্যাদিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে হিসাবে আনছেন।

এমনকি অতীতে শ্রমিক বিভাজন ও বিশেষায়নের সঙ্গে গণতন্ত্র, রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন, বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহলের কুকর্ম এবং দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির মতো বিষয়গুলোর কারণে অতিরিক্ত লেনদেনের খরচকে তেমন একটা গুরুত্ব দেয়নি। তবে বিশ্বায়নের এই যুগে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের সঙ্গে এসবের সম্পর্ক বিশেষ গুরুত্ব বহন করে মনে করা হচ্ছে। কেননা, এই লেনদেনের ব্যয় সে দেশের সমাজকে ও রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যেই নিহিত থাকে। একটা দৃঢ় সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা কেবল তখনই কোনো দেশে গড়ে উঠতে পারে যখন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার একটা যথাযথ সংমিশ্রণ ও সন্নিবেশন থাকে।  

কিন্তু রাষ্ট্রের যাবতীয় ক্ষমতা যদি গুটিকয়েক ব্যক্তির হাতে বা বিশেষ বিশেষ মহলের হাতে কুক্ষিগত হয়ে যায়, তাহলে এই বিশেষ ব্যক্তিরা তাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দেশের যাবতীয় সমপদের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নেয়। এটাই রাজনৈতিক ও অর্থনীতির স্বাভাবিক প্রকৃতি ও চরিত্র।
অর্থনীতির ইতিহাস থেকে দেখা যায়, আয় ও সমপদের সমবণ্টন না হলেও ক্ষমতার ভারসাম্যের বিধান সমাজকে সুষম বণ্টন ব্যবস্থার কাছাকাছি এগিয়ে নিয়ে যায়। আধুনিক পরিমাপমূলক সমীক্ষা ও জরিপের কল্যাণে আমরা সুনিশ্চিত জানি, অধিকতর উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনুন্নত ও অগণতান্ত্রিক সমাজে সম্পদ ও আয়ের বিলি-বণ্টনে বৈষম্য অনেক বেশি।  গণতান্ত্রিক সমাজে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে আয়ের বিলি-বণ্টনের সমতা আসে। এশিয়া, আফ্রিকা বা লাতিন আমেরিকার হোক বা মধ্যযুগের ইউরোপের মতো আগেকার দিনের কোনো কম উন্নত দেশ হোক- এই সব দেশের কতকগুলো বৈশিষ্ট্য অভিন্ন বলে লক্ষ্য করা যায়।

অনুন্নয়ন ও দারিদ্র্যের প্রধান কারণ হলো শাসক ও শাসক দলের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতার কেন্দ্রায়ন। অতিরিক্ত ক্ষমতার অধিকারীরা রাজনৈতিক ক্ষমতা করায়ত্ত করার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত সম্পদও তাদের হাতে কুক্ষিগত করতে উঠে পড়ে লেগে যায়। কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা সমাজে সমপদ সৃষ্টি ও আয়ের সুষম বিলি-বণ্টনের পথে পর্বতসমান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তাতে যা হবার তা-ই হয়। পণ্য ও সেবা পণ্যের সর্বোত্তম উৎপাদন হতে পারে না। বাজার শক্তিগুলো তার আপন নিয়মে চলার জন্য যে সব বিধিবিধান দরকার সেগুলো গড়ে ওঠে না বা অতিরিক্ত বিধিবিধানের জটাজুটে আটকে পড়ে বাজার তৎপরতার গতিরোধ ঘটে। সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষমতার বিলি-বণ্টন হয় না। সেই  সুযোগে  অপ্রতিহত  গতিতে  সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি বিস্তার লাভ করে। ক্ষমতা এক হাতে বা মুষ্টিমেয় গুটিকয়েকের হাতে পুঞ্জীভূত হলে দুর্নীতি দিন দিন বিরতিহীন ও সীমাহীন ভাবে বাড়তে থাকে। স্বাভাবিক নিয়মেই সীমাহীন দুর্নীতি ক্ষমতাবানদেরকেই লাভবান করে। কেননা, তাদের অবস্থান সুবিধাভোগীর অবস্থান।

ক্ষমতার বিকেন্দ্রায়ন বা বিলি-বণ্টনের প্রক্রিয়ায় যখন প্রতিযোগী শক্তিশালী বিরোধী রাজনৈতিক দল গড়ে উঠে তখন ক্ষমতাসীন ও বিরোধী- উভয় পক্ষই একে অন্যের দুর্নীতি কমানোর প্রয়াসে পরসপরকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে ক্ষমতা যদি মুষ্টিমেয় কিছু লোকের কব্জায় চলে যায় তাহলে দুর্নীতি দমন করার পরিবর্তে নিজ দলের সমর্থকদের নব উদ্যমে দুর্নীতি করতে সহায়তা করে। অন্যদিকে দুর্নীতি দমনের আইন ও পন্থাগুলো ক্ষমতাসীনরা বেছে বেছে শুধুমাত্র তাদের বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করে। আইনের অসম প্রয়োগ কেবল বিরোধীদের কণ্ঠরোধ ও দমন করে রাখার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে রাজনৈতিক অপরাধীদের চক্র, অত্যধিক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। আর এ অপরাধ চক্রের বিস্তৃতি তৃণমূল পর্যায় অবধি বিস্তৃত। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচারণা ও অভিযান তাই প্রহসন বৈ কিছু নয়। গত ১৫ বছরের কাল পরিক্রমায় এটাই প্রমাণিত হয় যে, দুর্নীতি উৎপাটনের সত্যিকারের কোনো অভিপ্রায় বা সামর্থ্য, কোনোটাই ক্ষমতাসীন সরকারের ছিল না।

পরিতাপের বিষয় হলেও ঐতিহাসিক সত্যি হলো; ‘কোনো অবৈধ সরকার বা অপশক্তিকে আরেকটি শক্তি না থামিয়ে দেয়া পর্যন্ত অবৈধ শক্তি বা ক্ষমতার সমপ্রসারণ ও অপব্যবহার চলতেই থাকে।’ সামন্ত প্রভু, অপরাধী, গডফাদার, একনায়ক, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার বা স্থানীয় সরকার যে বা যারা ক্ষমতাধারী, তা নির্বিশেষেই এ নিয়ম প্রযোজ্য। তাই সমাজের পরিপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি করে সুষম বণ্টনের মাধ্যমে সম্পদ ও আয়ের বৈষম্য এবং ধনী ও গরিবের ব্যবধান কমাতে হলে, সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সামাজিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতাকে ভাগাভাগি করে দিতে হবে। তাতে সামাজিক উত্তেজনা প্রশমিত হবে এবং দেশের উৎপাদন প্রক্রিয়া ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথে বাধা-বিপত্তি অপসারিত হবে।
আগামী দশকের পরিক্রমায় বিশ্বের যেকোনো দেশের সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ভর করবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের ওপর। আর সেজন্য আমাদের জনসমাজে একটা সুগভীর পরিবর্তন আনা অত্যাবশ্যকীয়। যে সব ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনলে আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক ও অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, এরকম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হলো:-

* সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে ভারসাম্য ও প্রতিবিধায়ক ব্যবস্থা জোরদার করে অতিরিক্ত ক্ষমতার কেন্দ্রায়নকে বিকেন্দ্রায়িত করতে হবে। যাতে করে অল্প কিছু অভিজাত শ্রেণির লোকের হাতে নাগরিক জীবনের সকল দিক নির্দেশনার ক্ষমতা না থাকে;
* ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও বিলি-বণ্টনের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা ভাগ করে দিতে হবে;
* রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে;
* রাজনীতিক, পুলিশ ও অন্যান্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর অপরাধীদের মধ্যকার অংশীদারিত্ব সমপর্কের দুষ্টচক্র ভাঙতে হবে;
* বর্তমানে দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাতন্ত্র ও পুলিশ প্রশাসনকে দলীয় রাজনীতি থেকে মুক্ত করে জনগণের কল্যাণে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। একই সঙ্গে তাদেরকে জনগণের নিকট দায়বদ্ধতার আওতায় আনতে হবে;
* রাজনীতি থেকে মাস্তান-চাঁদাবাজি সংস্কৃতিকে বিদায় করতে হবে;
* নীতি পর্যায়ে সর্বাঙ্গীণ জবাবদিহিতার ব্যবস্থা ও তার পালন আবশ্যকীয় করতে হবে।
* অনতিবিলম্বে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির আমূল সংস্কার করে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করে সত্যিকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নির্বাচকমণ্ডলীর কাছে দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করতে হবে;
* সরকারি পদের অপব্যবহার বা সরকারি পদে থেকে রাজনীতি করা বন্ধ করতে হবে। অর্থাৎ  শিক্ষক, প্র্রকৌশলী ও চিকিৎসকরা সরকারের বেতনভুক্ত হলে তাদের কনসাল্ট্যান্সি, প্রাইভেট টিউটেরিয়াল কিংবা বেসরকারি প্র্যাকটিসে নিয়োজিত অথবা রাজনীতিতে জড়িত হওয়া যাবে না। কারণ তারা নিজ কর্তব্য থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণে জনসাধারণ পেশাদারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়;
* বিনিয়োগকারী, ব্যবসায়ী ও অর্থায়নকারীদেরকে অবশ্যই তাদের পণ্য ও সেবার যথা পরিমাণ, মান ও মূল্য, মূল্য পরিশোধ ও অঙ্গীকার রক্ষার পারস্পরিক বাধ্যবাধকতা পালনে আরও বেশি দায়বদ্ধতা ও দায়িত্বশীল হতে আইনের সমপ্রয়োগ করতে হবে;
* সরকারি বনাম বেসরকারি, সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের এধরনের ধারণা বদলাতে হবে। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি মূল্যায়নে বা জনগণের কল্যাণে সেবা বা দেশের জন্য সম্পদ সৃষ্টিতে সরকারি-বেসরকারি বলতে কিছু নেই;
* রাজস্ব ও মুদ্রানীতি অবশ্যই একে অন্যের পরিপূরক হতে হবে। বর্তমানে বাস্তবায়িত সংকুচিত রাজস্বনীতি অথচ সম্প্রসারিত মুদ্রানীতি এবং বেসরকারি খাতের জন্য সংকুচিত, কিন্তু সরকারের জন্য সম্প্রসারিত নীতি অর্থনীতির দুরবস্থাকে আরও ঘনীভূত করবে;
* স্বতন্ত ও স্বাধীনভাবে দরকষাকষির মাধ্যমে সমপাদিত চুক্তিগুলো রাষ্ট্র কর্তৃক পরিপূর্ণভাবে ও ত্বরিত গতিতে বলবৎ করতে হবে;
* আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে;
* হিসাব সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক মান প্রবর্তন করতে হবে। অতএব এক্ষেত্রে অবশ্যই বিধি-বিধান কড়াকড়ি হতে হবে ও তা রাষ্ট্রকে পরিপূর্ণভাবে বলবৎ করতে হবে;
* রাজনৈতিক সংঘাত-মোকাবিলা ও সহিংসতা বন্ধে সংঘাত নিষপত্তি ব্যবস্থা বা আপোষরফার মাধ্যমে অবশ্যই কমাতে হবে;
* অসপষ্ট, সেকেলে ও বিতর্কিত আইন রহিতকরণ করতে হবে। বহু আইনই সপষ্ট নয়, খুব পুরনোও বটে। এসব আইন আকস্মিকভাবে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এবং তাদের ব্যক্তিগত ক্ষতিসাধনের জন্য বলবৎ করা হয়;
* মেধা শর্তের কঠোর পরিপালন করতে হবে। মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ রাজনৈতিক আনুকূল্যের ভিত্তিতে নয়, অবশ্যই জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে হতে হবে।
* বিচার বিভাগে নিয়োগপ্রাপ্তরা অবশ্যই দলীয় প্রভাব মুক্ত থাকতে হবে। শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদের পরিবর্তে তারা নিজেরাই নিজেদেরকে শপথবদ্ধ ন্যায় বিচারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী বিচারবিভাগ স্বাধীন। অতএব বিচার করা যদি নিজেদের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে পারেন তাহলে তারা দেশের আপাময় স্বাধীনতা ও অধিকারগুলোকে কীভাবে নিশ্চিত করবেন;
* দুর্নীতি এখন সমাজের তৃণমূল পর্যায় অবধি বিস্তৃত হয়েছে। এর প্রতিকার ও প্রতিরোধ করতে হবে;
সমাজে জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে একটা আমূল পরিবর্তন এনে অনেক অনুমানমূলক ধারণাকে বাস্তবে রূপ দেয়ার প্রয়োজন আবশ্যক।

লেখক: সাবেক সভাপতি এফবিসিসিআই

No comments

Powered by Blogger.