নেদারল্যান্ডের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করেছে তুরস্ক

নেদারল্যান্ডের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করেছে তুরস্ক। আঙ্কারায় নিয়োজিত নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতকে তুরস্কে ফিরতে দেবে না তুর্কি সরকার। ফলে দেশ দুটির মধ্যে এখন বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন। এতে বলা হয়েছে তুরস্কের উপপ্রধানমন্ত্রী নুমান কুরতুলমাস সোমবার আঙ্কারায় দু’দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত (সাসপেন্ড) করার ঘোষণা দিয়েছেন।  তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুকে নেদারল্যান্ডসে রাজনৈতিক র‌্যালিতে যোগ দিতে অবতরণ করতে দেয় নি নেদারল্যান্ডস। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কে বিরাজ করছে এক উত্তেজনাকর অবস্থা। তা প্রসারিত হয়েছে জার্মানি সহ ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশে। আগামী ১৬ই এপ্রিল তুরস্কে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানের ক্ষমতা অসীম পর্যায়ে বর্ধিত করা নিয়ে গণভোট। এর পক্ষে ভোট চাইতে তুরস্ক সরকারের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রচারণা চালানোর টার্গেট ঠিক করেন। তারই অংশ হিসেবে নেদারল্যান্ডসে এক এক রাজনৈতিক র‌্যালিতে যোগ দেয়ার কথা ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুতের। কিন্তু তাকে বহনকারী বিমান অবতরণ করার অনুমতি দেয় নি ওই দেশ। এতে ভীষণ ক্ষুব্ধ তুরস্ক। সোমবার সিএনএনের ‘কানেক্ট দ্য ওয়ার্ল্ড’ অনুষ্ঠানে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মেভলুত কাভাসোগলু প্রশ্ন রাখেনÑ কেন এ সময়ে আমি একজন সন্ত্রাসী? এই দেশে বসবাসকারী তুর্কিরা কি সন্ত্রাসী?
এ ছাড়া তুরস্কের পরিবার বিষয়ক মন্ত্রী ফাতমা বেতুল সায়ান কায়াফ্রমকে নেদারল্যান্ড কর্তৃপক্ষ একই রকম র‌্যালি করার অনুমতি দেয় নি। তিনি নেদারল্যান্ডে অবস্থিত তুর্কি কনসুলেটে প্রবেশ করতে পারেন নি। তাকে ঘেরাও করে দেশের বাইরে বের করে দেয়া হয়। এসব ঘটনায় নেদারল্যান্ডসের রটারড্যামে সহিংস বিক্ষোভ করেন তুর্কি নাগরিকরা। মেভলুত কাভাসোগলু বলেছেন, তাকে অবতরণ করতে দেয়া হয় নি নিরাপত্তার অজুহাতে। কিন্তু জন শৃংখলা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে ডাচ কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যাখ্যা দেয় নি। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাভাসোগলু বলেন, তুরস্কের একজনও তুর্কি কি জঙ্গি আছে? জবাবে তারা বলে, না। তাহলে নিরাপত্তা নিয়ে কি সমস্যা? তারা আমাকে বিস্তারিত কিছু জানায় নি। আমি তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আমি কোনো সন্ত্রাসী নই। তারা আসল সত্যকে লুকানোর জন্য নিরাপত্তাকে শুধু অজুহাত হিসেবে দেখিয়েছে। বরং নেদারল্যান্ডস ও ইউরোপীয় অন্যান্য দেশে বর্ণবাদ, ইসলাম বিরোধিতা ও অতিশয় বিদেশী ভীতি এ জন্য দায়ী। তিনি বলেন, তুরস্কের গণভোটে যাতে ‘হ্যাঁ’ বিজয়ী হতে না পারে সে জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে নেদারল্যান্ডস ও ইউরোপীয় অন্য দেশগুলো। তাই তিনি এসবের প্রতিবাদে ডাচ সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করেছেন। তবে কি সেই সুপারিশ তা বিস্তারিত বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।

No comments

Powered by Blogger.