ঘোড়াঘাট উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র- জরাজীর্ণ ভবনে চিকিৎসাসেবা

১৯৩৫ সালে নির্মাণের পর এ পর্যন্ত আর সংস্কারের ছোঁয়া পড়েনি
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে। উপজেলা
পৌর এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য ওই এলাকায় এটিই একমাত্র
সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। ​ইনসেটে জরাজীর্ণ ভবনের এক কক্ষে
মূল্যবান ওষুধপত্র রাখা। ছবিটি গতকাল তোলা l প্রথম আলো
টিনের তৈরি তিন কক্ষের ছোট একটি ঘর। দরজা-জানালা ভাঙা। বৃষ্টি হলেই ফুটো হওয়া চালা দিয়ে পানি পড়ে। সীমানাপ্রাচীর না থাকায় দিনের বেলায় এক পাশে চলে বাঁশ বিক্রি। আর অন্য পাশে গড়ে উঠেছে রিকশাভ্যান স্ট্যান্ড। এই চিত্র দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের পৌর শহরের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের।
দিনাজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে প্রত্যন্ত এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এসব উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। এই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, তিন কক্ষের দুটিকে ভাঙা দুটি চেয়ার এবং ভাঙা দুটি টেবিল আছে। অপরটিতে ভাঙা একটি শেলফ ও একটি পুরোনো স্টিলের আলমারি। সেখানেই ওষুধগুলো রাখা। আরেক কক্ষে চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট ও স্বাস্থ্য সহকারী বসেন।
উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক রাহাতুল জান্নাত জানান, পৌর শহরে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি হওয়ায় সেখানে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী আসেন। কিন্তু এখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী নেই। রোগী দেখার জন্য বেডও নেই। ওষুধ রাখা হয় ভাঙাচোরা কক্ষে। উন্মুক্ত হওয়ায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ থাকলে আশপাশের মানুষ ময়লা-আবর্জনা এখানে ফেলে। তিনি গত বছর এখানে যোগদানের পর থেকে সমস্যাগুলো সমাধানে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলে জানান।
ফার্মাসিস্ট দেবাশীষ ভৌমিক জানান, বৃষ্টি এলেই সবকিছু পানিতে ভিজে যায়। ফলে প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখা যায় না।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দিনাজপুর কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মাহবুব জানান, উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ থেকে সেটি সংস্কার করা হবে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাঁদের জানিয়েছেন।
তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সামছুর রহমান জানান, তিনি কখনোই উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ থেকে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি সংস্কারের বিষয়টি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানাননি। বরং সমস্যা সমাধানে তিনি একাধিকবার লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
দিনাজপুর-৬ আসনের সাংসদ শিবলী সাদিক জানান, তিনি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছেন। সেখানে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছেন। উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি সংস্কারে দ্রুত তিনি দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেবেন।

No comments

Powered by Blogger.