পাক-ভারত-ইসরাইলকে পারমাণবিক অস্ত্র কমাতে হবে : জাতিসংঘ

পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। ওই প্রস্তাবে ভারত, পাকিস্তান ও ইসরাইলকে স্বেচ্ছায় পারমাণবিক অস্ত্র কমানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রস্তাবটি জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ১৬৫ ভোটে পাস হয়েছে। ২১টি দেশের প্রতিনিধি অনুপস্থিত ছিল। খবর ডনের।
জাতিসংঘের প্রস্তাবে আরও বলা হয়, ভারত, পাকিস্তান ও ইসরাইলকে অবশ্যই পরমাণু ক্ষমতাহীন দেশ হিসেবে পরমাণু বিস্তার রোধ চুক্তিতে (এনপিটি) নিঃশর্তে স্বাক্ষর করতে হবে। একই সঙ্গে এই তিন দেশকে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার অধীনে তাদের পরমাণু চুল্লির পর্যবেক্ষণ করাতে হবে। ভারতের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ প্রস্তাবের এই ধারার বিরোধিতা করে ভোট দিয়েছে। পাকিস্তান এবং ইসরাইলও এই ধারার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। অন্যদিকে ফ্রান্স, ব্রিটেন ও ভুটান ভোট দেয়া থেকে বিরত থেকেছে।
জাতিসংঘের এই সম্পূর্ণ প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, যুক্তরাজ্য, ইসরাইল, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া। অন্যদিকে পাকিস্তান, চীন, ভুটান, মাইক্রোনেশিয়া ও পালাউ ভোট দেয়া থেকে বিরত থেকেছে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের এই প্রস্তাবটি কার্যকরে আইনগত কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পারমাণবিক বোমার অধিকারী হওয়ার দিক দিয়ে বিশ্বের পাঁচ দেশের স্বেচ্ছাচারী ভূমিকা পৃথিবী দেখতে চায় না। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের একচেটিয়া রাজত্বের দিন শেষ। এর আগে গত অক্টোবরে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ডিবি ভেনকাতেশ ভার্মা বলেছিলেন, অ-পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশ হিসেবে এনপিটিতে ভারতের যোগ দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন, আমাদের মতে এ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে হতে হবে। এদিকে, ইসরাইল মধ্য-পূর্বাঞ্চলের একমাত্র দেশ যারা পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। এমনকি তারা তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কে কোনো তথ্যও প্রকাশ করেনি।
প্রস্তাবটি কার্যকরে আইনগত কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও সংস্থাটির ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সবার উপস্থিতিতে পাস হওয়ায় নৈতিক দিক থেকে তা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টি ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র সৃষ্টির ব্যাপারে এটা ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.