অতীত ভবিষ্যৎ অস্তিত্বের নাম এফ কেনেডি
তোমার সমাধি ফুলে ফুলে ঢাকা; কে বলে আজ তুমি নাই; তুমি আছ মন বলে তাই ... গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ যেন জন ফ্রিটজেরাল্ড কেনেডি (মে ২৯, ১৯২৭-নভেম্বর ২২, ১৯৬৩) ডাকনাম জ্যাককে এভাবেই স্মরণ করল। হাজার হাজার মার্কিনির অশ্র“সিক্ত চোখ আর স্মৃতিকাতর কণ্ঠে যেন সে কথাটিই বিড়বিড় করে উচ্চারিত হচ্ছিল, অমাদের অতীত ভবিষ্যৎ, আর অস্তিত্বের নাম কেনেডি। জন এফ কেনেডি তো আর দশজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতো নয়, তিনি অনেকের কাছেই অনুকরণীয় আদর্শ।
মৃত্যুর এতগুলো বছর পরেও ৫০তম বার্ষিকীতে লাখ লাখ মার্কিনি যে এমনভাবে তাদের জ্যাককে স্মরণ করবে তা যেন ভাগ্য বিধাতার অশেষ কৃপা। শুক্রবার ন্যাশনাল মেমোরিয়ালে মার্কিনিদের নীরবে অশ্র“বিসর্জন আর ক্ষণে ক্ষণে আকাশপানে তাকিয়ে জ্যাকের জন্য শুভকামনা জন এফ কেনেডিকে এক অনন্য উচ্চতায় স্থান করে দিল। ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে এক মোটরশোভাযাত্রায় নিহত হন ৪৬ বছর বয়সী এই প্রেসিডেন্ট। তার মৃত্যুর ৫০তম বার্ষিকীতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, তার স্ত্রী মিশেল ওবামা, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, তার স্ত্রী ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বহু প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় এসেছেন, আবার চলেও গেছেন। খুব কমসংখ্যক প্রেসিডেন্টকেই মানুষ মনে রেখেছে। মনে রাখা প্রেসিডেন্টদের তালিকায় বেশ ওপরের দিকেই ঠাঁই করে নিয়েছেন ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি। তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক বই, বানানো হয়েছে চলচ্চিত্র। এর পরও যেন তাকে নিয়ে জানার তৃষ্ণা মানুষের শেষ হয় না। বেঁচে থাকতে যতটা জনপ্রিয় ছিলেন মৃত্যুর পরও ততটাই শ্রদ্ধার আসনে আসীন তিনি। কেমন ছিলেন জন এফ কেনেডি?
তাকে নিয়ে প্রচলিত ধারণাগুলোর কতটুকু সত্য আর কতটুকু কাল্পনিক, এ নিয়ে শনিবার বিবিসি অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, কেনেডির গুণমুগ্ধদের কাছে তিনি ছিলেন অনেক গুণের অধিকারী। ক্যারিশম্যাটিক নেতা বলতে যা বোঝায়, তা-ই। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে বাঁচিয়েছেন। বর্ণবাদে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রকে এক সুতোয় গাঁথতে তিনি কাজ করেছেন। ওয়াটারগেট কেলেংকারির হোতা রিচার্ড নিক্সনকে তিনি ১৯৬০ সালের নির্বাচনে পরাজিত করে মার্কিনিদের দুঃস্বপ্নের ইতি টেনেছিলেন। এমন একজন রাষ্ট্রনায়কের মৃত্যুর ক্ষত তার গুণমুগ্ধরা এখনও শুকাতে পারেননি। জন এফ কেনেডির সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন বিল ক্লিনটন। ১৯৯২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় ক্লিনটন ছবিটি ব্যবহার করেন। কেনেডির জীবনী নিয়ে পরিচালিত এক জরিপে নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদক জিল আব্রামসন বলেন, কেনেডিকে নিয়ে যত বই আছে, কোনোটাই তার সেরা জীবনী নয়। এখনও তার জীবনের অনেক কিছুই অজানা রয়ে গেছে।
No comments