মানববন্ধনে দুই সংগঠন-মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চক্রান্ত থেকে কোটা বাতিল আন্দোলন

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটা কারো দান বা করুণা নয়। এটি এক সাগর রক্তের ঋণ শোধের সামান্যতম প্রয়াস মাত্র। অতীতে জামায়াত-শিবির চক্র কোটা বাতিলের জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র করেছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় আবারও শিবিরকর্মীরা দেশকে অস্থিতিশীল করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করেছে। আর এ ষড়যন্ত্রের মূলে রয়েছে শিবির পরিচালিত বিভিন্ন কোচিং সেন্টার।
গতকাল শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কোটা প্রথা বাতিলের দাবির ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে 'আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান' সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত এক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
একইভাবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটি গতকাল প্রেসক্লাবের সামনে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের নামে মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে কটূক্তি, পতাকা পদদলিত ও পোড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন করে।
'আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান' সংগঠনের মানববন্ধনে কোটা প্রথা বাতিলের দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, শিবিরের বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে বিসিএসের হাজার হাজার পরীক্ষার্থী কোচিং করতে আসেন। তাঁদের নানাভাবে ভুল বুঝিয়ে শিবিরকর্মীরা রাজপথে নিয়ে এসেছে। এসব শিক্ষার্থীর থাকা-খাওয়াসহ নানা সহায়তা দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য আন্দোলন জিইয়ে রেখেছে শিবির।
একজন বক্তা বলেন, 'মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান লাভ করছে। তারা কি মেধাহীন? আসলে মেধাশূন্যতার ধোঁয়া তুলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এটা একটা অপকৌশল মাত্র।'
ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বক্তারা বলেন, 'এ অপকৌশল থেকে বিরত থাকুন। নইলে সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। ক্যাডারসহ সব পদে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের কোটা পূরণের দাবিতে এখন থেকে আমরা রাজপথে থাকব।'
সংগঠনের সভাপতি মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নয়ন, জয়ন্ত আচার্য্য, নূরুজ্জামান ভুট্টো, আমিনুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ৩৪তম বিসিএসের ফলাফল পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু দাবি মানার পরও কোটা বাতিলের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা-মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তি, পতাকা পদদলিত ও পোড়ানো হলো। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, আসলে এ আন্দোলনে মূল উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন ও পরিকল্পিত। এতে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহার করা হয়েছে। কোটা বাতিলের নামে জামায়াত-শিবিরের চক্রান্ত প্রতিহত করতে সব মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং প্রগতিশীল রাজনৈতিক-সামাজিক সব ছাত্র সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানান তাঁরা। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগঠনের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, মো. শাহীন, তাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.