অনলাইন থেকে-মিসরের সহিংসতা ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে

নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ৫১ জন মুরসি সমর্থক নিহত হওয়ার পর মিসরের পরিস্থিতি আরো কঠিন ও ঘোলাটে হয়ে উঠেছে। মুসলিম ব্রাদারহুড এ ঘটনাকে 'গণহত্যা' বলে আখ্যায়িত করেছে।
আর মিসরের সেনাবাহিনী বলছে, এটি ব্যারাকে সশস্ত্র আক্রমণের ফল। এক বছরের মধ্যে মিসরের সবচেয়ে বড় রক্তাক্ত এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আদলি মনসুর ২০১৪ সালের প্রথম দিকে পার্লামেন্ট এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য সংবিধান সংশোধনের একটি টাইমটেবিল বেঁধে দিয়েছেন। তিনি দুটি কমিটি গঠন করবেন মুরসি প্রণীত ইসলামিস্ট সংবিধান সংশোধনের জন্য।
নতুন সংশোধন অনুসারে একটি রেফারেনডাম হবে আগামী চার মাসের মধ্যে। এরপর দুই মাসের ভেতর পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নতুন পার্লামেন্টের আহ্বানে এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
সোমবারের ঘটনাটি ঘটেছে রিপাবলিকান গার্ড অফিসার্স ক্লাবের সামনে। বিশ্বাস করা হয় যে সেখানেই মুরসিকে আটকে রাখা হয়েছে। ব্রাদারহুড বলেছে, সকালের নামাজ আদায়ের সময় তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনী বলছে, একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত ভবনে ভেঙে প্রবেশ করতে চেষ্টা করেছে। ইমার্জেন্সি সার্ভিস নিশ্চিত করেছে, এ ঘটনায় ৩৪৫ জন আহত হয়েছে। মিসরের অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার একটি বিচারিক তদন্ত করা হবে। কিন্তু রাবা আল আদবিয়া মসজিদের কাছে অবস্থান নেওয়া মুরসিপন্থীদের তাতে শান্ত করা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে মিসরের সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ধৈর্য প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
আল আজহার মসজিদের প্রধান এবং দেশটির সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ ধর্মীয় নেতা শেখ আহমেদ আল তায়েব বিপদের কথা হুঁশিয়ার করে দিয়ে এটিকে গৃহযুদ্ধের বিপদ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এসব ঘটনার অনেক প্রশ্নই উত্তরহীন অবস্থায় রয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী প্রথমেই টিয়ারগ্যাস নাকি গুলি নিক্ষেপ করেছে সে সম্পর্কে প্রতিবাদকারীরা কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। পরের দিকের ভিডিওচিত্রকে মারণাস্ত্র ধরে রাখতে দেখা গেছে। হিউম্যান রাইটস কমিশনের হেবা মোরায়েফ টুইটারে লিখেছেন, সহিংসতা কী দিয়ে শুরু হয়েছে সেটা বড় কথা নয়, সেনাবাহিনী এবং পুলিশের দায়িত্ব সর্বোচ্চ ধৈর্য প্রদর্শন করা, বাড়াবাড়ি না করা এবং মারণাস্ত্র ব্যবহার না করা।
মুসলিম ব্রাদারহুডের দল ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি বলেছিল, তারা মহান মিসরীয় নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সেই শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে, যারা ট্যাংক ও সশস্ত্রযানের মুখে, এমনকি জনগণের লাশের ওপর দিয়ে মিসরের অর্জিত বিপ্লবকে কেড়ে নিতে চাইছে। কিন্তু পরে একজন মুখপাত্র ব্যাখ্যা করেছেন, তাদের আহ্বান ছিল শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের। তবে সিনাই অঞ্চলের জিহাদি গ্রুপগুলো হুমকি দিয়েছে ভয়ংকর প্রতিশোধের।
লেখকদ্বয় : ইয়ান ব্ল্যাক ও প্যাট্রিক কিংসলে। মঙ্গলবার লন্ডনের গার্ডিয়ানের প্রকাশিত নিবন্ধের সংক্ষেপিত ভাষান্তর : মহসীন হাবিব

No comments

Powered by Blogger.