তামিম এলে দারুণ হবে

টেস্ট কী, দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট কী, সেসব প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। আইপিএলে পাঁচটা, এরপর কাউন্টিতে এসেও এবার প্রথম চারটা ম্যাচই খেললাম টি-টোয়েন্টি। তা ছাড়া আমরা সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেছি গত বছরের জুনে। এই লম্বা বিরতি আমার দীর্ঘ পরিসরের খেলার অভ্যাসে যে ভালোই মরচে ফেলেছে, সেটা বুঝলাম হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে চারদিনের ম্যাচ খেলতে নেমে।
টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং আর চারদিনের ব্যাটিং দুই রকম—সমস্যা তো হবেই। মজাটা এখানেই। সমস্যা কিন্তু আমার ব্যাটিংয়ে নয়, হয়েছে বোলিংয়ে! চারদিনের ম্যাচে যে ধরনের বোলিং দরকার, সেটাই হচ্ছিল না। আর দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে মনোযোগ ধরে রাখাটা জরুরি, সমস্যা হচ্ছিল সেখানেও। মাঝেমধ্যে দু-একটা ভালো বল হয়েছে। সেগুলোতেই উইকেট পেয়ে গেছি। নইলে চারদিনের ম্যাচে বল করেছি আমি খুবই বাজে। মানিয়ে নিতে আসলেই কষ্ট হচ্ছিল।
অথচ এই কষ্টটা হওয়ার কথা ছিল ব্যাটিংয়ে এবং তাতে বিস্ময়করভাবে আমি স্বচ্ছন্দ ছিলাম। টি-টোয়েন্টির তুলনায় এখানে শট একটু কম খেলতে হয়, ব্যাটিংয়ে ওই নিয়ন্ত্রণটা আনতে কিছুটা সমস্যা হলেও তা বড় কোনো অসুবিধায় ফেলেনি। ব্যাটিং নিয়ে অন্তত আমি খুশি। তবে হ্যাঁ, টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং আরও ভালো হওয়া উচিত ছিল। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডেটা তো খেললামই না। এর আগে টানা পাঁচ ম্যাচ খেলেছি বলে এদিন বিশ্রামে ছিলাম। বিশ্রাম মানে পুরো বিশ্রাম। খেলাও দেখিনি, একটা কাজে মাত্র ১০ মিনিটের জন্য মাঠে গিয়েছিলাম। তবে থাকলে বোধহয় ভালোই হতো। শ্রীলঙ্কার কোচ স্টুয়ার্ট লর সঙ্গে কথাবার্তা বলা যেত। পত্রপত্রিকায় তো পড়ছি, উনিই আমাদের পরবর্তী কোচ!
আগেরবার যেমন ছিলাম, ইংল্যান্ডে এবারও সে রকমই আছি...। বরং তুলনায় একটু ভালোই আছি বোধহয়। আগেরবার তো প্রথম এসেছিলাম, সবকিছু নতুন লেগেছে। এবার আমি উস্টারশায়ারের পুরোনো খেলোয়াড়...সবার সঙ্গে মিশে গেছি। সবচেয়ে বড় কথা, এবার বেশির ভাগই টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলছি। চাপ কম...অনেক নির্ভার। উস্টারশায়ারের হয়ে আমি আমার শেষ ম্যাচ খেলব ১৫ জুলাই। এর মধ্যে আরও একটা চারদিনের ম্যাচ থাকলেও সম্ভবত ওটা খেলব না।
টি-টোয়েন্টিতে নির্ভার থাকতে পারার একটা কারণ হতে পারে আমার আইপিএল খেলে আসার অভিজ্ঞতা। এখানে এসে খেলাটার সঙ্গে আর নতুন করে মানিয়ে নিতে হয়নি। একটা ম্যাচে ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য একটু সমস্যা অবশ্য হয়েছিল। তবে বড় কিছু না।
এখানে সময়টা সামনে আরও ভালো কাটবে আশা করছি। এ আশার একটা কারণ অবশ্যই তামিম ইকবাল। নটিংহ্যাম্পশায়ারে খেলতে আসছে ও। ইংল্যান্ডে বসেই নিজেদের কারও সঙ্গে দেখা হবে, এটাই তো অনেক! তার ওপর সেও খেলবে কাউন্টিতে এবং আমাদের বিপক্ষেও দুটি ম্যাচ আছে তাদের। দুই দলে যদি দুজন খেলি...অবশ্যই একটা দারুণ ব্যাপার হবে। আমি এখন তামিম আর তামিমের বিপক্ষে ম্যাচের অপেক্ষাতেই আছি।
১৫ জুলাই ম্যাচ শেষ হলে খুব সম্ভবত ১৬ জুলাই আমি দেশে ফেরার বিমানে উঠব। তার মানে জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগেই দেশে ফিরছি। অবশ্য জিম্বাবুয়ে যাওয়ার পথে বাংলাদেশ দল দক্ষিণ আফ্রিকায় চারদিনের ম্যাচ খেলতে গেলে কী হবে এখনো বলতে পারছি না। বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে দেখি।
এই যে! আবার দেশে ফেরার কথা মনে হয়ে গেল! কবে যে ফিরব...? ইংল্যান্ডে সবই ভালো। সমস্যা কেবল এটাই—ইংল্যান্ডে আসলে দেশের বাইরে থাকতে হয়!

No comments

Powered by Blogger.