এগিয়ে গেল ভারত

বুধবার রাতে কি শান্তিতে ঘুমাতে পেরেছিলেন ড্যারেন স্যামি? কিংবা কাল রাতে?
ম্যাচের দ্বিতীয় দিন মাত্র ৬ রানে স্লিপে রাহুল দ্রাবিড়ের সহজ একটি ক্যাচ ছেড়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। ‘দ্বিতীয় জীবনে’ স্যামিদের কাঁদিয়ে ছেড়েছেন দ্রাবিড়, চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় যোগ করেছেন আরও ১০৬ রান। পরশু দিন শেষে তাই স্যামির সরল স্বীকারোক্তি, ‘ক্যাচটা ছেড়ে দেওয়ায় রাতে ভালো ঘুম হয়নি।’
পরে উইকেট তুলে ক্ষতি পোষানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন স্যামি, কিন্তু ৪ উইকেটেও ঠিক প্রায়শ্চিত্ত হওয়ার কথা নয়। কারণ সেই দ্রাবিড় প্রায় একা লড়ে ভারতকে এনে দিয়েছেন ৩২৫ রানের লিড, জ্যামাইকার উইকেটের কথা ভাবলে যেটিকে বলা যায় ‘বিশাল’ লিড। ‘ভালো ঘুম’ তাই বুধবার রাতে হওয়ার কথা নয়। দুঃসহ স্মৃতিটা আরও যন্ত্রণা দিয়েছে কাল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ হেরেছে ৬৩ রানে। এই জয়ে তিন টেস্টের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল ভারত।
হারটা নিশ্চিত হয়েছিল আসলে প্রথম সেশনেই। ১৭৩ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর। লাঞ্চের সময় স্কোর ২২৬/৯। শেষ দিকে এসে যা একটু লড়াই করলেন টেল এন্ডাররা। ৩২ বলে ৩৪ রান করেন রামপল, ৩৩ বলে ২৬ দেবেন্দ্র বিশুর। এই দুজন ভারতের জয়টাকে শুধু বিলম্বিতই করেছেন।
জয়ের জন্য উইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ১৯৫ রান, ভারতের ৭ উইকেট। কাল শুরুতেই প্রাভিন কুমার তুলে নেন ব্রাভো ও চন্দরপলকে। ন্যাশ, বাফ ও অধিনায়ক স্যামি এসেও খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি।
স্বাগতিকদের শুরুটা কিন্তু চমকে দিয়েছিল ভারতকে। বারাথ ও সিমন্স ১০ ওভারেই তুলে নেন ৫৬ রান। এক ওভারে দুটি ছয় ও একটি চার মেরে ইশান্তকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে দেন বারাথ, অমিত মিশ্রকে গ্যালারিতে পাঠান সিমন্স। ধোনির ‘দূরদর্শিতা’ কিংবা ‘ভাগ্যে’ ভাঙে এই জুটি। ফাঁকা তৃতীয় স্লিপে রায়নাকে দাঁড় করান ভারত অধিনায়ক, পরের বলেই ক্যাচ দেন বারাথ! ইশান্ত ফিরেই তুলে নেন সারওয়ান ও সিমন্সকে। ৫১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেছেন ব্রাভো-চন্দরপল।
দ্রাবিড়ের পর ভারতের সর্বোচ্চ রান দশে নামা অমিত মিশ্রর ২৮। নবম উইকেটে এই দুজনের ৫৬ রানের জুটিতেই ভারতের লিড ৩০০ ছাড়িয়েছে। ২৫২ বলে ৩২তম সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন দ্রাবিড়, ছুঁয়েছেন স্টিভ ওয়াহকেও। আরেকটি মাইলফলকও ছুঁয়েছেন ‘দ্য ওয়াল’, সুনীল গাভাস্কারকে (১৪০৪) ছাড়িয়ে ক্যারিবিয়ানে সবচেয়ে বেশি রান করা ভারতীয় এখন দ্রাবিড়ই (১৪১২)। দক্ষিণ আফ্রিকায় সর্বশেষ সিরিজে ৬ ইনিংসে করেছিলেন মাত্র ১২০। ৩৮ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের জন্য এই সিরিজটা ছিল তাই আরেকটি পরীক্ষা। এতে আপাতত উতরে গেলেন।
ভারতের সর্বশেষ উইন্ডিজ সফরের জ্যামাইকা টেস্টেও পার্থক্য গড়ে দিয়েছিলেন দ্রাবিড়। লো-স্কোরিং ম্যাচে করেছিলেন ৮১ ও ৬৮, দুই ইনিংস মিলিয়ে ভারতের হয়ে বিশের বেশি করতে পেরেছিলেন আর কেবল অনিল কুম্বলে (৪৫)। সেবার জিতেছিল ভারত, এবারও।

No comments

Powered by Blogger.