আল-কায়েদার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহযোগিতা বাড়াতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, আল-কায়েদার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইয়েমেনকে আরও সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার ইয়েমেনের রাজধানী সানায় এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। একই দিন এক ঝটিকা সফরে হিলারি সে দেশে যান। ২০ বছরের মধ্যে কোনো মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম ইয়েমেন সফর।
হিলারি বলেন, তাঁর এই সফরের লক্ষ্য সামরিক সহযোগিতা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইয়েমেনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক জোরদার করা। তিনি বলেন, নাগরিকদের সহিংস হয়ে ওঠার পেছনে যে দারিদ্র্য ও সামাজিক অসাম্যের কারণ রয়েছে, এসবের ব্যাপারে মনোযোগ দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
সম্প্রতি ইয়েমেনে একাধিক মার্কিনবিরোধী হামলা চালানো হয়েছে। ২০০০ সালে ইয়েমেনের এডেন বন্দরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস কোল-এ বোমা হামলা চালানো হয়। এতে ১৭ জন নিহত হয়। গত মাসে সানার শহরতলিতে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর এক কর্মী অল্পের জন্য একটি হামলা থেকে রক্ষা পান। এ ছাড়া ২০০৮ সালে আল-কায়েদাপন্থী সংগঠন আল-কায়েদা ইন অ্যারাবিয়ান পেনিনসুলা (একিউএপি) সানায় মার্কিন দূতাবাসে দুইবার হামলা করে। ২০০৯ সালে বড়দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েটগামী মার্কিন ফ্লাইটে বোমা হামলার চেষ্টার জন্যও এই গোষ্ঠীকে দায়ী করা হয়।
সানায় পৌঁছে কিছুক্ষণের মধ্যেই ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ সালেহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন হিলারি ক্লিনটন। বৈঠক শেষে একটি সমাবেশে হিলারি বলেন, ‘ইয়েমেনের ভূমি ব্যবহার করে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। যাদের অনেকেই ইয়েমেনি নয়, বরং আমার বলতে খারাপ লাগছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাই বিষয়টি আমাদের জন্য খুব উদ্বেগের বিষয়।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একিউএপির তৎপরতা ঠেকাতে ইয়েমেন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে অংশীদারির ভিত্তিতে কাজ করছি আমরা। একিউএপি এই অঞ্চলে কী ধরনের হুমকির কারণ তা বিবেচনায় রয়েছে ইয়েমেনের। তাদের ঠেকাতে আমরা সহযোগিতার পরিধি বাড়াতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’ তিনি বলেন, ‘বিষয়টি শুধু সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সম্পর্কের মধ্যে আটকে রাখলে চলবে না, আলোচনার পরিসর বাড়াতে হবে। সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনায় বসতে হবে।’ তিনি বলেন, ইয়েমেনে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারে সহায়তার পরিমাণও পুনর্বিবেচনা করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র।
গত দুই বছরে ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও বেসামরিক সহায়তার পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বর্তমানে এর পরিমাণ ৩০ কোটি ডলার। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইয়েমেনের সমস্যাগুলো সামাল দেওয়ার জন্য এই সহায়তার পরিমাণ যথেষ্ট নয়।
ভিন্নধারার সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসে ফাঁস করা গোপন মার্কিন কূটনৈতিক বার্তায় অভিযোগ তোলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজে হামলা চালানোর ব্যাপারে একিউএপিকে সহায়তা দিয়েছে খোদ ইয়েমেন সরকার। হিলারির সঙ্গে বৈঠকে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট বিনয়ের সঙ্গে বিষয়টি উত্থাপন করেন।

No comments

Powered by Blogger.