মুঠোফোন কোম্পানিগুলোর হিসাব নিরীক্ষা করা হবে

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) শিগগির দেশের ছয় মুঠোফোন কোম্পানির হিসাব বিবরণী নিরীক্ষা করবে। এ জন্য বিটিআরসিই অডিট ফার্ম নিয়োগ দেবে।
অন্যদিকে ব্যান্ডউইডথের দাম মেগাবাইট প্রতি ১২ হাজার টাকায় নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিআরসি। বর্তমানে এর দাম ১৮ হাজার টাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিটিআরসি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কমিশনের চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ। গত দুই বছরে কমিশনের কার্যক্রম ও অগ্রগতি জানানোর জন্য এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে বিটিআরসির দুই বছরের কর্মকাণ্ড নিয়ে লিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন তিনি।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান জানান, বিটিআরসি এ পর্যন্ত ২৬ ধরনের মোট ৮৩২টি লাইসেন্স দিয়েছে। আর গত দুই বছরে ৪৪৭টি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ), ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স), ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি), ন্যাশনাল ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ (নিক্স), সাবমেরিন কেব্ল, ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিরিয়াল কেব্ল (আইটিসি) এবং বৈদেশিক কল আদান-প্রদানে ভিওআইপি সার্ভিস প্রোভাইডার (ভিএসপি) লাইসেন্সের নীতিমালা তৈরি করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে কমিশন।
বন্ধ পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্কের (পিএসটিএন) অব্যবহূত যন্ত্রপাতিসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে জিয়া আহমেদ বলেন, ‘নতুন করে পিএসটিএন লাইসেন্সের নীতিমালার খসড়া মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। নীতিমালাটি চূড়ান্ত হয়ে গেলে নতুন পিএসটিএন লাইসেন্স দেওয়া হবে।’ তখন ওই সব অব্যবহূত যন্ত্রপাতির পুনর্বিন্যাস সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
কল সেন্টারগুলো থেকে লভ্যাংশ নেওয়ার সময় হয়ে এসেছে জানিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের কল সেন্টারগুলো এখন লাভের মুখ দেখছে। এ ছাড়া লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী কল সেন্টার চালুর তিন বছর পর থেকে সরকারকে লভ্যাংশ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। সে হিসেবে কল সেন্টারগুলোকে অবশ্যই লভ্যাংশ দিতে হবে।
লাইসেন্স পাওয়ার পরও সরকারি ল্যান্ডফোন বিটিসিএল কেন এখনো ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার-অপারেবিলিটি ফর মাইক্রোওয়েভ এক্সেস (ওয়াইম্যাক্স) কাজ শুরু করেনি জানতে চাইলে জিয়া আহমেদ বলেন, ‘ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্সের দাম ২১৫ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী বাংলালায়ন ও অগেরি লাইসেন্সের দাম পরিশোধ করে কাজ শুরু করেছে। কিন্তু ম্যাঙ্গো ও বিটিসিএল এ দাম পরিশোধ করতে পারেনি।’ তিনি জানান, এ ক্ষেত্রে ম্যাঙ্গো ও বিটিসিএল প্রাথমিকভাবে ৫০ কোটি টাকা দিয়ে কাজ শুরু করার অনুমতি চেয়েছিল, কিন্তু লাইসেন্সে শর্ত ভঙ্গ করে বিটিআরসি এ সুযোগ দিতে পারে না।
মুঠোফোন লাইসেন্সে শেয়ার ট্রান্সফার ফি বলে কিছু নেই উল্লেখ করে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এয়ারটেল থেকে যেমন এ খাতে কোনো টাকা বিটিআরসি নেয়নি, তেমনি অন্য কোম্পানির ক্ষেত্রেও নেবে না।’ তাহলে একটেল বা আগের অন্য কোম্পানি যারা বিটিআরসিকে এ খাতে ফি দিয়েছে, তাদের ফি কি ফেরত দেওয়া হবে—এমন প্রশ্নের উত্তরে চেয়ারম্যান বলেন, ‘অতীতের ভুলের বোঝা বর্তমান কমিশন কেন বইবে?’
সম্মেলনে কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ দেলোয়ার, সচিব মো. মাহবুব আহমেদ, কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান ও এটিএম মনিরুল আলম, স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক আহসান হাবীব খানসহ প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.