বৃষ্টি এড়িয়ে দৃষ্টিতে শুধুই জয়

প্রথম দিনটাই যা একটু ছিল। নইলে গত দুই দিন চট্টগ্রামে ক্রিকেটীয় পরিবেশ বলতে কিছু ছিল না। কাল সোনালি রোদের হাসিতে যখন সেই পরিবেশটা আবার ফিরল, আজকের শেষ ওয়ানডে নিয়ে আশাবাদী হওয়াই যায়। আবহাওয়ার পূর্বাভাসও বলছে, আজকের ম্যাচে বৃষ্টি হানা দেবে না।
বৃষ্টি আর অনুপযুক্ত মাঠ সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেটা হতে দেয়নি। সিরিজে তাই ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই পঞ্চম ওয়ানডে খেলতে নামছে বাংলাদেশ দল। এই সমীকরণ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের আজকের ম্যাচে ছড়াচ্ছে বাড়তি উত্তেজনার রং। সিরিজ জিততে হলে আর পা হড়কানোর সুযোগ নেই, এ ম্যাচে জিততেই হবে সাকিব আল হাসানের দলকে। অন্যদিকে জিম্বাবুইয়ান প্রতিজ্ঞা—শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজটা ২-২ ড্র করেই ফিরবে তারা।
খেলা না হোক, বিশ্রাম তো হলো! বাংলাদেশ কোচ জেমি সিডন্স তাই পরশুর ম্যাচটা না হওয়ার একটা ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছেন, ‘দুই দিনের বিশ্রাম পেয়ে সবাই অনেক ঝরঝরে এখন। আমরা ২-১-এ এগিয়ে আছি, চেষ্টা করব সিরিজটা ৩-১ ব্যবধানে জিততে এবং সেটার জন্য আমাদের ভালো ক্রিকেটই খেলতে হবে। জিম্বাবুয়ে খুবই ভালো দল, এটা ভুলে গেলে চলবে না।’ সিরিজ জয়ের ম্যাচের আগের দিন দুপুরে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের মাঠ আর উইকেট দেখেও আশাবাদী তিনি, ‘উইকেট দেখে আজ (গতকাল) ভালোই মনে হয়েছে। আশা করি, ভালো ওয়ানডে উইকেট হবে। তবে মাঠের অনেক জায়গাই এখনো স্যাঁতসেঁতে। আরও কয়েক ঘণ্টা এ রকম রোদ আর বাতাস থাকলে আশা করি সেটাও ঠিক হয়ে যাবে।’
কোচ সিডন্সের মতো সিরিজ জয়ের আশাটা আছে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের মধ্যেও এবং কোচের মতো তিনিও হাঁটতে চান সতর্ক পায়ে, ‘সিরিজ জয় অসম্ভব নয়। তবে জিম্বাবুয়ে ভালো দল। ওদের হারাতে হলে আগের মতোই ভালো খেলতে হবে আমাদের।’ এই সতর্কতাটুকুর কারণেই হয়তো আজ আর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যাচ্ছে না বাংলাদেশ দল। ঢাকায় তৃতীয় ওয়ানডে জেতা দলটাকেই খেলানো হবে শেষ ম্যাচে।
জিম্বাবুয়ে দলের জন্য সুখবর—শেষ ম্যাচে তারা দলে পাচ্ছে কুঁচকির ইনজুরি থেকে ফেরা এলটন চিগুম্বুরাকে। সিরিজ ড্র করেই এই ফেরাটা উদ্যাপন করতে চাইছেন অধিনায়ক। ‘হারার চেয়ে সিরিজ ড্র করা ভালো। শেষ ম্যাচটা জিতলেই আমরা সেটা করতে পারি’—কাল বিকেলে অনুশীলন শেষে বলেছেন চিগুম্বুরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে আরেকটি জয় অসম্ভব মনে করছেন না বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিকও, ‘জেতা অসম্ভব নয়। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের মতো দলের বিপক্ষে ২-২-এ সিরিজ ড্র করা গেলে তার চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? বাংলাদেশের এই দলটাই কিছুদিন আগে নিউজিল্যান্ডকে ৪-০-তে হারিয়েছে। আমাদের জন্য ২-২ ড্রটাও তাই অনেক বড় ব্যাপার।’
সিডন্সের দৃষ্টিতে চট্টগ্রামের উইকেট ১৮০-২০০ রানের উইকেট। চিগুম্বুরা বলছেন, এখানে ২২০ রান পর্যন্ত অতিক্রমযোগ্য। দুজনের কথার সারমর্ম—এই উইকেটে রান তোলা কঠিন। জিম্বাবুয়ে সিরিজের শেষ দুই ম্যাচ চট্টগ্রামের বিশ্বকাপ ভেন্যু জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের জন্য তাই অনেক বড় পরীক্ষা হয়েই এসেছিল। ভেন্যু পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়ায় এবং আগের ম্যাচটা বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় সে পরীক্ষার ফলাফল এখনো পর্যন্ত স্থগিত। সিরিজের শেষ ম্যাচে এই মাঠ ফলাফল নিজের পক্ষে নিতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার।
চট্টগ্রামের দর্শকেরা বাংলাদেশ দলের মতো এই সিরিজে সাফল্য দেখতে চায় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের মাঠ আর উইকেটেরও। তবে দুর্ভাগ্য, গ্যালারির কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজারের মতো দর্শকই দেখতে পারবে এই ম্যাচ। হাজার দেড়েক সৌজন্য টিকিট বাদ দিয়ে বাকি সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে গতকালই। আজ স্টেডিয়ামের টিকিট কাউন্টারে তাই কোনো টিকিট মিলবে না।

No comments

Powered by Blogger.