কাশ্মীরে উত্তেজনা প্রশমনে তিন আলোচক নিয়োগ

ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্প্রতিক উত্তেজনা প্রশমনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য তিনজন আলোচকের নাম ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম এ কথা জানান। তাঁরা হলেন ভারতীয় সাংবাদিক দিলীপ পদগায়োংকর, তথ্য কমিশনার এম এম আনসারি ও শিক্ষাবিদ রাধা কুমার।
আলোচকেরা কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে কথা বলবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচকদের সহযোগিতা করার ব্যাপারে জম্মু ও কাশ্মীরের সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। তাঁরা খুবই আস্থাভাজন ব্যক্তি এবং যত দ্রুত সম্ভব তাঁরা কাজ শুরু করবেন। পরে আমরা আরও একজন আলোচককে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি।’
ভারতীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির ২৫ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে এই আলোচকদের নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। আলোচকেরা জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখ অঞ্চলে কাজ করবেন।
দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নেলসন ম্যান্ডেলা ইনস্টিটিউট অব পিসের প্রধান রাধা কুমার এরই মধ্যে কাশ্মীরের মধ্যপন্থী নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুক ও কট্টরপন্থী সৈয়দ আলী শাহ গিলানির সঙ্গে কথা বলেছেন।
সাংবাদিক দিলীপ এর আগে ভারতীয় প্রখ্যাত আইনজীবী রাম জেঠমালানির নেতৃত্বাধীন কাশ্মীর কমিটির সদস্য ছিলেন। তথ্য কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে আনসারি একজন অধ্যাপক এবং দিল্লির হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ছিলেন। কাশ্মীরে উত্তেজনা প্রশমনে সরকারের ঘোষিত আট দফা কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই তিন আলোচকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া গত ১১ জুনের পর থেকে সেখানে যারা নিহত হয়েছে, তাদের পরিবারের জন্য ত্রাণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি এ পর্যন্ত যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের আটকের কারণ পর্যালোচনা করে দ্রুত নির্দোষ ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
তবে কট্টরপন্থী নেতা গিলানি সরকারের এই পদক্ষেপকে অসার পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধাপ্পা দেওয়ার জন্য ভারত সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। এ থেকে কোনো ফল আসবে না।
গত জুন মাসে গুলিতে এক ছাত্রের নিহত হওয়ার ঘটনায় কাশ্মীরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ব্যক্তিদের দাবি, পুলিশ গুলি করে ওই ছাত্রকে হত্যা করেছে। এরপর চলমান সহিংসতায় এ পর্যন্ত শতাধিক কাশ্মীরি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কয়েক দফা কারফিউ জারি করে এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। গত মাসের এক জরিপে দেখা গেছে, ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের দুই-তৃতীয়াংশ স্বাধীনতা চায়।

No comments

Powered by Blogger.