পুরোনো পাপী বাট-আকমল

নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড-এর মতো বিস্ফোরক নয়, তবে চমকপ্রদ একটি খবর দিয়েছে ইংল্যান্ডেরই আরেক পত্রিকা ডেইলি মেইল। স্পট-ফিক্সিং নিয়ে সাম্প্রতিক তোলপাড়ের আগেই নাকি আইসিসির সন্দেহের রাডারে ধরা পড়েছিলেন সালমান বাট ও কামরান আকমল! গত জুনের এশিয়া কাপে গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় বাট ও আকমলের টেলিফোন কথোপকথনের বিস্তারিত প্রমাণ চেয়ে গত ২১ আগস্ট চিঠি দিয়েছে আইসিসি। পত্রিকাটির দাবি, দুই পাকিস্তানি চিঠি পেয়েছেনও। তবে তাঁরা দুজন বা পাকিস্তান বোর্ড এখনো কোনো জবাব দেয়নি।
এশিয়া কাপের সময় ম্যাচ পাতানো বিতর্ক উঁকি দিতে দিতেও মিলিয়ে গেছে। তবে বাট বা আকমল নন, তখন সন্দেহের তীর ছিল মোহাম্মদ আমিরের দিকে। ড্রেসিং রুমে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও হেলমেটের নিচে মোবাইলে কথা বলেছেন আমির, এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল টিভিতে ও পত্রিকার পাতায়। তবে স্রেফ হেলমেট ঠিক করছিলেন, হাতে ফোন ছিল না—এই কথা বলে পার পেয়ে যান আমির।
স্পট-ফিক্সিং বিতর্কে বাট, আমির, আসিফের সঙ্গে শুরুতে নাম এসেছিল আকমলেরও। সেই অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেও নতুন এই খবরে আবারও সন্দেহের মেঘ জমছে পাকিস্তান উইকেটকিপারকে ঘিরে। আরেকটি নতুন খবর জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার পত্রিকা কুরিয়ার মেইল, সিডনি টেস্ট নিয়ে আকমলকে নাকি নোটিশ পাঠিয়েছে আইসিসি। মাইক হাসির তিনটিসহ সিডনিতে চারটি ক্যাচ ছেড়েছিলেন আকমল। নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড তার দুই দিন আগেই দাবি করেছে, ইয়াসির হামিদ নাকি তাদের বলেছিলেন, সিডনি টেস্ট ছিল পাতানো। হামিদ অবশ্য ট্যাবলয়েডটির দাবি অস্বীকার করেছেন। তবে ডেইলি টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, স্রেফ অস্বীকারেই পার পাচ্ছেন না পাকিস্তান ওপেনার। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে আইসিসির দুর্নীতি দমন ও নিরাপত্তা বিভাগ।
অনেক বিশেষজ্ঞ প্রশ্ন তুলেছেন, ম্যাচ গড়াপেটার সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা জানেন কি না, বা তাঁদের জানানো হয়েছে কি না। পাকিস্তান অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি কিন্তু জানালেন, যথেষ্টই সচেতন করা হয়েছে তাঁদের, ‘আইসিসির কর্মকর্তারা আসছেন এবং নিয়মিতই আমাদের এসব বলছেন। তার পরও কোনো সমস্যা হলে দলের ম্যানেজার তো আছেনই, তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়। আমার ধারণা, আমরা সবাই এসব নিয়ে যথেষ্ট সচেতন, আইসিসি তাদের কাজ ঠিকভাবেই করছে।’
স্পট-ফিক্সিং কাণ্ড আলোয় আসার পর আইনজীবী ইশতিয়াক আহমেদের করা মামলায় সাত পাকিস্তানি ক্রিকেটার, ক্রীড়ামন্ত্রী ও পিসিবিপ্রধানের লাহোর হাইকোর্টে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল কাল। তবে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি করেছেন প্রধান বিচারপতি খাজা মোহাম্মদ শরিফ। ‘তদন্ত চলার সময় এ ধরনের মামলা অপরিণতই থাকে’—কোর্টে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ কথা বলার পর মুলতবির আদেশ দেন বিচারপতি। মুলতবি না করলেও অবশ্য হাজিরা দেওয়া সম্ভব হতো না সাত ক্রিকেটারের, কালই যে ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ!

No comments

Powered by Blogger.