তিন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন স্থগিত ছিল

অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়ার অভিযোগে আরও তিন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন স্থগিত করা হয়েছিল গতকাল। কোম্পানিগুলো হলো: বেক্সিমকো সিনথেটিকস, ঢাকা ডায়িং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ও ঢাকা ফিশারিজ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেন চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে কোম্পানিগুলোর শেয়ার বেচাকেনা বন্ধ রাখে। গত এক সপ্তাহে এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে।
ডিএসই বলছে, তারা বিভিন্ন সময় এসব কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাছে দাম বাড়ার পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ রয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েছে। কিন্তু বরাবরের মতো তারা কিছুই জানাতে পারেনি।
গত বুধবার ঢাকা ফিশারিজ কর্তৃপক্ষের কাছে অপ্রকাশিত কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আছে কি না, তা জানতে চায় ডিএসই। কিন্তু কোম্পানিটি নির্ধারিত সময়ে জবাব দিতে পারেনি। এ কারণে গতকাল দিনের শুরু থেকে কোম্পানিটির লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে কোম্পানির জবাব ডিএসইতে পৌঁছায়। এতে বলা হয়, শেয়ারের দাম বাড়ার মতো কোনো অপ্রকাশিত তথ্য নেই। এর ভিত্তিতে দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন আবার চালু করা হয়।
অন্যদিকে, ডিএসইর অনুসন্ধানের জবাবে বেক্সিমকো সিনথেটিকস এবং ঢাকা ডায়িং কর্তৃপক্ষও কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য না থাকার কথা জানায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও শেয়ারের মূল্য বাড়ার প্রবণতা থাকায় ১৫ মিনিটের জন্য এ দুই কোম্পানির লেনদেন স্থগিত করা হয়।
ডিএসই বলছে, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাজার পরিস্থিতি: আগের দিনের বড় ধরনের পতন কিছুটা সামলে উঠেছে পুঁজিবাজার। দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই গতকাল বৃহস্পতিবার শেয়ারের মূল্যসূচক সামান্য বেড়েছে। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল এক হাজার ২৪৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, আগের দিনের চেয়ে যা ৪৩৬ কোটি টাকা কম। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন আগের দিনের চেয়ে ৩৭ কোটি টাকা কমে ১১০ কোটিতে নেমে এসেছে।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসইসি ঋণ বিতরণ ও ব্যবস্থাপনায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে। তাই বেশির ভাগ ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান শেয়ার কেনার জন্য নতুন করে অর্থায়নে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। কারণ ইতিমধ্যে যেসব ক্ষেত্রে অতিরিক্তি অর্থায়ন করা হয়েছে, তা ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে। আর এসব কারণেই লেনদেন বেশ খানিকটা কমেছে।
এ ছাড়া এসইসি নতুন নির্দেশের পর বাজার পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, তা বুঝতে বিনিয়োগকারীরাও একটু অপেক্ষার নীতি গ্রহণ করেছে। আগামী রোববার এসইসি দুই স্টক এক্সচেঞ্জসহ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক করবে। এ বৈঠকে কী ধরনের দিকনির্দেশনা আসে, তা দেখার পরই বিনিয়োগকারীদের একটা বড় অংশ পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
ডিএসইতে গতকাল সাধারণ মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে প্রায় চার পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৬৫৩ পয়েন্ট হয়েছে। সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ২৬ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ৭৬০ পয়েন্ট হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.