নব্বইয়ের দশকে অলরাউন্ডার হিসেবে ক্রিকেট মাঠ কাঁপিয়েছেন। মাঠের বাইরের ঘটনার জন্যও কম আলোচিত হননি। সুদর্শন ইমরান মাঠে নামলে গ্যালারি থেকে হাজার হাজার সুন্দরী ছুড়ে দিতেন উড়ন্ত চুম্বন।
ক্রিকেটের সেই জীবন্ত কিংবদন্তি রাজনীতির খেলায়ও সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন। শুরুর পথটা যদিও যথেষ্টই বন্ধুর ছিল।
ভুট্টোদের মতো কোনো ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে আসেননি ইমরান। লাহোরের খান পরিবারে ১৯৫২ সালে জন্ম। পড়াশোনা করেছেন পাকিস্তান, ইংল্যান্ডের বোর্ডিং স্কুল ও পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার পর গণমানুষের কাছে ইমরানের প্রথম যাওয়া মায়ের নামে ক্যানসার হাসপাতালের জন্য চাঁদা তুলতে গিয়ে। অনেকে বলেন, দেশের জন্য, মানুষের জন্য কাজ করার স্বপ্নটা দানা বাঁধে তখনই। রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) গঠন করেন ১৯৯২ সালে। ২০০২ সালের নির্বাচনে মাত্র একটি আসনে জয়ী হয়েছিলেন। সেই তুলনায় এবার তাঁর পক্ষে ‘ভোটের সুনামি’ বয়ে গেছে। ইমরান নিজেই বলেছিলেন, গণরায়ের সুনামি পাকিস্তানের নষ্ট রাজনীতিকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে পিটিআইকে ক্ষমতায় বসাবে। সে আশা পূরণ না হলেও পিটিআই যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, সেটা নিশ্চিত।
মনে করা হচ্ছে, আন্তরিক প্রচারণা ও সাবলীল বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ইমরান বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পেরেছেন। ইমরানের প্রচারণার স্লোগান ছিল—‘নয়া পাকিস্তান’। বোঝাই যাচ্ছে, তরুণদের একটি বড় অংশ এই স্লোগান গ্রহণ করেছেন। নিন্দুকদের কাছে ইমরান তালেবানের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল। অনেকে নারী অধিকারের প্রতি সংবেদনশীল রক্ষণশীল মুসলমান বলেও মনে করেন তাঁকে। এ ছাড়া ইসলামি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধকে তিনি পাকিস্তানেরও যুদ্ধ বলে স্বীকার করতে নারাজ।
সম্প্রতি ইমরানের প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরিফ বলেন, ‘রাজনীতি খেলাধুলার চেয়ে বেশি কিছু।’ প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, পাখতুনখাওয়াতে ক্ষমতাসীন এবং জাতীয় পর্যায়ে শক্তিশালী বিরোধী অবস্থানে থাকবেন ইমরান খান। সেই মাঠে কীভাবে তিনি রাজনীতির ব্যাট চালাবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

No comments

Powered by Blogger.