বার্লিন প্রাচীর এখন লসএঞ্জেলেসে

পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানিকে আলাদা করতে এখন আর পাষাণের মতো দাঁড়িয়ে নেই বার্লিন প্রাচীর। এটি ভাঙা হয়েছিল এখন থেকে ২০ বছর আগে। কিন্তু সেটিকে আবারও গড়া হয়েছে। তবে এবার আর জার্মানিতে নয়; বরং স্নায়ুযুদ্ধের স্মারক হিসেবে প্রাচীরটি আবারও দেখা যাচ্ছে লসঅ্যাঞ্জেলেসে, একটি জাদুঘরের সামনে।
লসঅ্যাঞ্জেলেসভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ওয়েনডে মিউজিয়ামের উদ্যোগেই নবজীবন পেল বার্লিন প্রাচীর। জার্মানির রাজধানীতে একযোগে বার্লিন প্রাচীরের পতনের ঘটনা স্মরণ করতে গত শনিবার স্নায়ুযুদ্ধ যুগের তিন নেতা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মিখাইল গর্বাচেভ, পশ্চিম জার্মানির হেলমুট কোল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়র বার্লিনে মিলিত হয়েছেন। তাঁরা ১৯৮৯ সালে শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের নেপথ্যে থাকা সাধারণ মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বার্লিন প্রাচীর পতনের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে লাগাতার অনুষ্ঠান চলছে। সবচেয়ে বড় আয়োজন থাকবে ৯ নভেম্বর, এই দিনে প্রাচীরটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেছিল পূর্ব জার্মানির সরকার। আর এ কাজে তখন বুশ, গর্বাচেভ ও হেলমুট রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পরবর্তী সময়ে প্রাচীরটি ভেঙে ফেলা হয়। পুনরায় একত্র হয় পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানি। প্রাচীরটি ভেঙে ফেলার সেই স্মৃতি গত শনিবার প্রায় এক হাজার ৮০০ মানুষের উপস্থিতিতে স্মরণ করা হয়।
একসময় যে প্রাচীর দুই জার্মানিকে আলাদা করে রাখত, তারই খণ্ডিত অংশ দিয়ে লসঅ্যাঞ্জেলেসে দেওয়া হয়েছে এর নতুন আদল। এ জন্য জাদুঘর কর্তৃপক্ষ বার্লিন প্রাচীরের প্রায় ২ দশমিক ৬ টন খণ্ডিতাংশ সংগ্রহ করেছিল। পুনর্নির্মিত প্রাচীরে তুলির আঁচড় দিচ্ছেন বিশ্বের নামী-দামি শিল্পীরা। ওয়েনডে মিউজিয়ামের পরিচালক জাস্টিনিয়ান জ্যামপল বলেন, বার্লিন প্রাচীর নেহাত একটি প্রাচীর নয়, মূর্তিমান ইতিহাস। আন্তর্জাতিক প্রতীক। বিশ্ববাসীর অঙ্গীভূত ঐতিহ্য। শিল্পীদের জন্য রাখা হয়েছে ফাঁকা ক্যানভাস। শিল্পীরা সেখানে স্নায়ুযুদ্ধের স্মৃতিকে উপজীব্য করে নানা ধরনের ছবি আঁকছেন। ভিন্ন মাত্রা দিচ্ছেন ওই প্রাচীরকে। তিনি এও বলেন, এরই মধ্যে দর্শনার্থীদের সমাগম শুরু হয়ে গেছে। তারা ঘুরে ঘুরে ওই প্রাচীর দেখছে।

No comments

Powered by Blogger.