ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর জেলেনস্কির সঙ্গে মাস্কের ফোনালাপ কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে

ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ নির্বাচনী সহযোগী ছিলেন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় ট্রাম্পকে ফিরিয়ে আনতে মিলিয়ন মিলয়ন ডলারও খরচ করেছেন তিনি। তার প্রচেষ্টা যে শতভাগ সফল হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ইলনকে নিয়ে ট্রাম্পও বেশ উচ্ছ্বসিত। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ইলনকে নিয়ে বিজয় উদ্যাপন করেছেন তিনি। এতে বোঝা যায় ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ইলন মাস্কের গুরুত্ব অপরিসীম। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। এতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিমধ্যেই ডনাল্ড ট্রাম্প তার প্রশাসনে ইলন মাস্কের ইতিবাচক উপস্থিতির আগাম ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসনে মাস্কের ভূমিকা কি হতে পারে তা নিয়ে এখনও কোনো স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। যাইহোক এই ভূমিকা যে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হবে- তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে গত বুধবার জয়ী হওয়ার পরপরই ট্রাম্প যে ভাষণ দিয়েছেন সেখানে ইলন মাস্কের উল্লেখ থেকে কিছু বিষয় অনুমান করা যায়। নির্বাচিত হওয়ার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। তাদের মধ্যে আলাপ হওয়ার সময় ফ্লোরিডার পাম বিচে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের বাসভবন মার-এ-লাগোতে উপস্থিত ছিলেন মাস্ক। জলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মাস্কের কাছে টেলিফোনটি হস্তান্তর করেছিলেন ট্রাম্প। সে সময় জেলেনস্কির সঙ্গে কথা হয় স্পেসএক্স-এর প্রতিষ্ঠাতার।

ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের বিষয়ে মার্কিন নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনবে কি না সে বিষয়টিও এখনও অস্পষ্ট। কিন্তু বিজয়ী বক্তব্যে ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি কোনোরকম ‘যুদ্ধের’ পক্ষে নন, তিনি যুদ্ধের অবসান চান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির বরাতে সিএনএন ট্রাম্প- জেলেনস্কির কথোপকধনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সিএনএন মার্কিন গণমাধ্যম এক্সিওস-এর বরাতে জানিয়েছে, সেদিন দু’টি বিস্ময় ছিল- প্রথমটি হচ্ছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মাস্কের ফোনালাপ, আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে- জেলেনস্কি মাস্কের কথাগুলো মন দিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে শুনেছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনে ইলন মাস্ক যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়টিও স্পষ্ট হয়েছে সেদিন।

জেলেনস্কির সঙ্গে আধঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কথা বলেন ট্রাম্প ও মাস্ক। নির্বাচনে ট্রাম্পের ভূমিধস জয়ে অভিনন্দন জানিয়ে কথা শুরু করেন কিয়েভের নেতা। তিনি সে সময় ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। তবে বিস্তারিত নীতি সম্পর্কে কিছুই উল্লেখ করেননি মার্কিন নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। মাস্কের স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে মহাকাশে ইউক্রেনকে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। ২০২২ সালে রাশিয়ার হামলার বিপরীতে স্টারলিঙ্ক ইউক্রেনের  সেনাবাহিনীকে রিয়েল-টাইম ড্রোন শনাক্ত এবং ডেটা ফুটেজ সংগ্রহে সাহায্য করে আসছে। এমন সব অঞ্চলে ইউক্রেনকে সহযোগিতা করেছে স্টারলিঙ্ক যেসব স্থানে মোবাইল নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দিয়েছে রাশিয়া।  সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেলেনস্কি। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কূটনৈতিক সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন তারা। ট্রাম্প তখন সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.