দুতের্তে ডেথ স্কোয়াড গড়েছিলেন গ্যাংস্টারদের নিয়ে
২০১৬ সালের নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়ে তিনি ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট হন। তবে তার আগে প্রতিশ্রুতি দেন, ডাভাও শহরে তিনি যেভাবে অপরাধবিরোধী অভিযান চালিয়েছেন, একইভাবে জাতীয় পর্যায়ে অভিযান চালাবেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে তিনি সেই কাজ শুরু করেন। হত্যা করা হয় কয়েক হাজার সন্দেহভাজনকে। মাদকের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে যুদ্ধে তিনি পুলিশের বিতর্কিত অভিযানে এসব মানুষকে হত্যা করান। এখন বিষয়টি তদন্ত করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। সোমবার সিনেটে শুনানিকালে দুতের্তে বলেন, তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করেছিলেন সন্দেহভাজনদের হত্যা করতে। যাতে তারা এই হত্যার ন্যায্যতা দিতে পারেন। বক্তব্যে দুতের্তে বলেন, আমার পলিসি নিয়ে প্রশ্ন করবেন না। কারণ, আমি ক্ষমাও চাইবো না। কোনো অজুহাতও দাঁড় করাবো না। যা করা উচিত ছিল, আমি তাই করেছি। আপনি বিশ্বাস করুন বা না করুন, যা করেছি তা আমার দেশের জন্য। আমি মাদককে ঘৃণা করি। তাই এ বিষয়ে কোনো ভুল করিনি। সন্দেহভাজনদেরকে হত্যা করতে পুলিশ প্রধানদের অনুমতি দেয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। তবে স্বীকার করেন, পুলিশ সদস্যদের দিয়ে নয়, ডেথ স্কোয়াড গঠন করা হয়েছিল গ্যাংস্টারদের নিয়ে। বলেন, আপনারা যদি চান তাহলে আমি এখনই স্বীকারোক্তি দিতে পারি। আমার ছিল সাত সদস্যের একটি ডেথ স্কোয়াড। তারা পুলিশ নয়। নিজের নির্দেশের পক্ষে অবিচল থেকে দুতের্তে বলেন, বহু অপরাধী তাদের বেআইনি কর্মকাণ্ড শুরু করেছে তিনি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যাওয়ার পর। তার ভাষায়, যদি আমাকে আরেকবার সুযোগ দেয়া হয়, তাহলে তাদের সবার শিকড় উপড়ে ফেলবো।
২০২২ সালে তার ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু মাদকের বিরুদ্ধে যে অভিযান চালিয়েছেন এবং মানুষ হত্যা করেছেন তার তদন্তে প্রথমবার সোমবার তিনি উপস্থিত হন সিনেটে। তার বিরুদ্ধে যাদের অভিযোগ, তাদের কয়েকজনের সরাসরি মুখোমুখি দাঁড়ান এদিন দুতের্তে। ওইসব অভিযোগকারীর মধ্যে আছেন মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। সাবেক সিনেটর লেইলা ডি লিমা। তিনি দুতের্তের কঠোর সমালোচক। মাদক বিষয়ক অভিযোগে তাকে সাত বছর জেলে কাটাতে হয়েছে। পরে সেই অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফিলিপাইন সরকারের হিসাবে মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হত্যা করা হয়েছে কমপক্ষে ৬ হাজার ২৫২ মানুষকে। অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো বলেছে, এর প্রকৃতসংখ্যা হতে পারে কয়েক লাখ। মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের হাইকমিশনারের এক রিপোর্টে দেখা গেছে, দুতের্তে মাদকের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালাতে পুলিশ কর্মকর্তাদের যে নির্দেশ দিয়েছেন তা তাদেরকে হত্যা করার অনুমোদন হিসেবে দেখা যেতে পারে। পুলিশ বলেছে, আত্মরক্ষা করতে গিয়ে বন্দুকযুদ্ধে তাদের কিছু সদস্যও নিহত হয়েছেন।
No comments