ইসি গঠন: বিচারপতি জুবায়েরের নেতৃত্বে সার্চ কমিটি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের সুপারিশ করতে সার্চ কমিটির প্রধান করা হচ্ছে আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে। গতকাল মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি মানবজমিনকে বলেন, সার্চ কমিটির প্রধান হবেন আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। অন্যদের নাম এখনই প্রকাশ করছি না। আজ (মঙ্গলবার) প্রজ্ঞাপন হচ্ছে না, তবে খুব শিগগিরই হবে। এর আগে গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের সুপারিশ করতে  সার্চ কমিটির প্রধান হিসেবে আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে মনোনীত করেন প্রধান বিচারপতি। এ ছাড়া সদস্য হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামানকে মনোনীত করা হয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ সুপ্রিম কোর্টের এই দুই বিচারপতির নাম সুপারিশ করে তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনানুযায়ী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের শূন্যপদে নিয়োগ দেয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করার উদ্দেশ্যে ৬ (ছয়) জন সদস্যের সমন্বয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন প্রেসিডেন্ট। সদস্যের মধ্যে থাকবেন- প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক, যিনি অনুসন্ধান কমিটির সভাপতিও হবেন। এ ছাড়া প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান এবং প্রেসিডেন্ট কর্তৃক মনোনীত ২ (দুই) জন বিশিষ্ট নাগরিক, যাদের একজন হবেন নারী। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এ দু’জন হলেন পিএসসি’র সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক সি আর আবরার।

অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলি: অনুসন্ধান কমিটি তার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করবে। তিন সদস্যের উপস্থিতিতে অনুসন্ধান কমিটির সভার কোরাম গঠিত হবে। সভায় উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী সদস্যের দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট দেয়ার ক্ষমতা থাকবে। আইনের ৪ ধারায় কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, অনুসন্ধান কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে এবং এই আইনে বর্ণিত যোগ্যতা, অযোগ্যতা, অভিন্নতা, সততা ও সুনাম বিবেচনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের উদ্দেশ্যে এই আইনে বর্ণিত যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের অনুসন্ধান করবে এবং এজন্য রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে নাম আহ্বান করতে পারবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য প্রতিটি শূন্যপদের বিপরীতে প্রেসিডেন্টের কাছে দুইজন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে কমিটি। এই কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ প্রেসিডেন্টের কাছে পেশ করবে। সার্চ কমিটি আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে ইসি গঠনে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। তাদের মধ্য থেকেই পাঁচজনকে নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন প্রেসিডেন্ট। সার্চ কমিটির কাজে সাচিবিক সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ১০ জনের নাম সুপারিশ করে প্রেসিডেন্টের কাছে পেশ করার বিধান রয়েছে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.