মার্কিন নির্বাচনে নারী বনাম পুরুষ প্রার্থিতার নেপথ্যে যা লুকানো থাকে

এবারের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের পুরুষ ভোটারদের কাছে ডনাল্ড ট্রাম্প বেশ পছন্দের প্রার্থী। অন্যদিকে নারী ভোটারদের কাছেও বিষয়টি এমন। তারা এবার একজন নারী প্রার্থী পেয়ে বেশ আনন্দিত। ডেমোক্রেট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমালা হ্যারিসকে বেশ পছন্দ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নারী ভোটাররা। গত এক দশকে মার্কিন মুল্লুকে যে সামাজিক উত্থান হয়েছে তাতে লিঙ্গ ব্যবধান রাজনৈতিকভাবে এবারের নির্বাচনে ভোটারদের সিদ্ধান্ত নিতে বেশ সাহায্য করতে পারে। এমনটাই মনে করেন বিবিসি’র বিশেষ প্রতিনিধি ক্যাটি কে।

২৭ অক্টোবর তিনি ‘What’s really behind America’s men v women election’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন লিখেছেন। সেখানে ক্যাটি কে বলেন, প্রথমবারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হলেন একজ ‘উইমেন অব কালার’ (ভিন্ন রঙের নারী)। এছাড়া দেশটিতে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কমালাই দ্বিতীয় নারী যিনি ইতিমধ্যে নির্বাচনে বেশ প্রভাব সৃষ্টি করেছেন। এছাড়া তিনি নিজ পরিচয় নিয়ে বেশি কথা না বলার জন্য এগিয়েও রয়েছেন।
গত মাসে সিএনএন’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হ্যারিস বলেছিলেন, শুনুন- আমি এ জন্যই এবারের নির্বাচনে প্রার্থীতা করছি কেননা আমি বিশ্বাস করি যে, আমি আমেরিকানদের জন্য এই মুহূর্তে এই কাজটি করতে সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী।

যদিও কমালা এই বিষয়টিকে স্বাভাবিক করার চেষ্ট করেছেন, তবে এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় লৈঙ্গিক বিষয়টি ভিন্ন এক সংজ্ঞা দাঁড় করিয়েছে। এবারের নির্বাচনে নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে আমেরিকানদের জন্য নতুন কোনো বিষয় হবে। যদিও বিষয়টি অনেক ভোটার পছন্দ করলেও অনেকের কাছে এটা বেশ বিরক্তির কারণ।

হ্যারিস প্রচারাভিযানে এ বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেনি, কিন্তু একজন কর্মকর্তা সম্প্রতি আমার কাছে স্বীকার করেছন যে, এমন অনেকেই আছেন যারা বিশ্বাস করেন ভোটের ক্ষেত্রে গুপ্ত হলেও ‘লিঙ্গ বৈষম্য’ রয়েছে, যা কিছু লোককে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একজন নারীর পক্ষে ভোট দিতে বাধা দিতে পারে।

এখন ২০২৪ সাল, এ সময় এসে যদিও কেউ সরাসরি কোনো পোলস্টারকে বলবেন না যে, তিনি কোনো নারীকে প্রেসিডেন্ট বানাতে ভোট দেবেন না। তবে এই বিষয়টি বোঝার জন্য একটি কোড রয়েছে। একজন গণতান্ত্রিক বিশ্লেষক বলেছেন, যখন ভোটাররা পোলস্টারদের বলে যে কমালা হ্যারিস ‘প্রস্তুত’ নন বা তার সঠিক ‘ ব্যক্তিত্ব’ নেই। এর মাধ্যমে আসলে তারা বুঝাতে চান যে প্রার্থী একজন নারী।

অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রচারণায়ও বলা হচ্ছে, ভোটের সঙ্গে লিঙ্গের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে গত সপ্তাহেই এক জায়গায় বলা হয়েছিল, ‘কমালা দুর্বল, অসৎ এবং বিপজ্জনক উদারপন্থী যার ফলে ৫ নভেম্বর আমেরিকার জনগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করবে। ট্রাম্প শিবিরের একজন সিনিয়র উপদেষ্টা ব্রায়ান ল্যাঞ্জা আমাকে টেক্সটে বলেছেন, এবার ট্রাম্পের জয়ের বিষয়ে তারা আত্মবিশ্বাসী। কেননা তিনি একজন পুরুষ।

ডনাল্ড ট্রাম্প এই নির্বাচনী দৌড়ে একজন পুরুষালী প্রার্থীর কেন্দ্র হতে চান। অন্যদিকে কমালা হ্যারিস এ কথা কমই স্বীকার করেন যে, তিনি একজন মহিলা যিনি হোয়াইট হাউসের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের একটি জরিপে বলা হয়েছে, ১৪ শতাংশ পুরুষদের ভোটে ট্রাম্প তার ডেমোক্রেটিক প্রার্থীর তুলনায় দুই পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে হ্যারিসের পক্ষে নারীদের সমর্থন হচ্ছে ১২ শতাংশ।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.