ভাগ্য বিড়ম্বিত পাকুন্দিয়ার আমেনা by মানিক আহমেদ

বয়সের কারণে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তির সামর্থ্যও হারিয়ে ফেলেছেন আমেনা (৮৬)। অসহায় ভিক্ষুক এ মহিলার ভাগ্যে আজও জোটেনি বয়স্ক বা বিধবা ভাতার কার্ড। প্রকৃত বয়স ৮৬ বছর হলেও বাস্তবে মনে হবে শত বছর পেরিয়ে গেছে বহু আগেই। অর্ধাহারে-অনাহারে কাটছে তার দিন।
জানা যায়, পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের কাজিরহাটি গ্রামের কৃষি শ্রমিক মৃত আবদুল হেকিমের স্ত্রী আমেনা। পাঁচ বছর বয়সের মহিমা ও এক বছর বয়সের কল্পনা নামের দুই শিশুকন্যাকে রেখে স্বামী মারা যায়। গৃহস্থালি কাজকর্ম করে স্বামীর সংসারের হাল ধরেন আমেনা। দুই মেয়েকে বড় করে বিয়ে দিয়েছিলেন। বড় মেয়ে মহিমাও স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে ফিরে এসেছে তার কাছে। সেই থেকে মেয়ে মহিমা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ শুরু করে। এদিকে আমেনার কর্মশক্তি হারিয়ে বেছে নিয়েছেন ভিক্ষাবৃত্তি। ক্ষুদা আর দরিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন মা-মেয়ে। ২০-২১ বছর ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন আমে না। বর্তমানে লাঠিতে ভর দিয়ে পথ চলতে হয় তার। ফলে ভিক্ষের আয়ও কমে গেছে। বেঁচে থাকার এ যুদ্ধ কবে থামবে তাও জানেন না বয়োবৃদ্ধা আমেনা। সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নে ৬১২ জনকে বয়স্ক ভাতা ও ১৬০ জনকে বিধবা ভাতা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমেনার ভাগ্যে জোটেনি একটি বয়স্ক বা বিধবা ভাতার কার্ড। এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বাররা কোন খোঁজখবর রাখেননি আমেনার। ইউপি সদস্য শামছুল হক টুকুর বাড়ির কাছেই ওই মহিলার বাড়ি। ইউপি সদস্য শামছুল হক টুকু স্বীকার করেছেন এখন পর্যন্ত ওই মহিলাকে বয়স্ক বা বিধবা ভাতার কার্ড দেয়া হয়নি। বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোশারফ হোসেন খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আজও ভাতার কার্ড বা সরকারি-বেসরকারি অনুদান না পাওয়ার বিষয়টি খুবই অমানবিক। বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.