সন্ত্রাসী টার্গেটে পাকিস্তানের সহস্রাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

পাকিস্তানের সহস্রাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসী হামলার টার্গেটে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে দেশটির আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। পুলিশ জানিয়েছে, ইসলামাবাদের ১১৫৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ১২০০ প্রতিষ্ঠানকে সন্ত্রাসী হামলার সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। খবর ডন নিউজের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মঙ্গলবার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, চিহ্নিত সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে এক হাজার ১৩৭টি সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজ এবং ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। শহরটিতে দায়িত্বরত ৯ হাজার পুলিশ সদস্যের পক্ষে এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিñিদ্র নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, সম্ভাব্য সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুর তালিকায় ৭৭টি মার্কেট ও ১৪টি হাসপাতাল রয়েছে।
তিনি জানান, অধিকাংশ পুলিশ সদস্যই ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের নিরাপত্তা রক্ষার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। এ অবস্থায় সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশের সুপারিনটেন্ডেন্ট জানান, পৌর, সদর, গ্রাম ও শিল্প এলাকার পুলিশ সদস্যদের স্কুল প্রশাসনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।
তিনি জানান, ইতিমধ্যে অনেক স্কুলে প্রশাসন নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সব প্রতিষ্ঠানের জন্য সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজ নিজ ভবনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের জন্যও বলা হবে। গত ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে তালেবান হামলায় অন্তত ১৪১ জন নিহতের ঘটনার পর দেশজুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। এর আগে হামলার আশংকায় দেশটির প্রশাসনিক রাজধানী ইসলামাবাদের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
পেশোয়ারে হামলা সম্পর্কে আগেই জানতো সরকার : পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে হামলা সম্পর্কে পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের সরকারকে কয়েক মাস আগেই সতর্ক করেছিল গোয়েন্দা বিভাগ। সোমবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এ খবর জানিয়েছে। খাইবার-পাখতুনখোয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেছে, উপজাতি এলাকা সেনাবাহিনী পরিচালিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলার পরিকল্পনা করছেন বলে তাদের জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে স্থানীয় সরকারকে গত ২৮ আগস্ট লিখিতভাবে সতর্ক করা হয়েছিল।
ওই সতর্কবাণীতে এটাও উল্লেখ করা হয়েছিল, বিলাল এবং ওবায়দুল্লাহ তাদের সহযোগীদের নিয়ে হামলার টার্গেটগুলো পরিদর্শন করতে শুরু করেছেন। সেনা কর্মকর্তাদের সন্তানরাই যে তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু এ বিষয়েও স্থানীয় সরকারকে সতর্ক করা হয়েছিল।
লস্কর-ই জাংভির প্রধানের মুক্তি : পাকিস্তানের উপজাতিভিত্তিক জঙ্গিসংগঠন লস্কর-ই জাংভির প্রধান মালিক ইশাককে মঙ্গলবার মুক্তি দেয়া হয়েছে।
নিষিদ্ধ ঘোষিত এই দলের নেতা তিন বছর জেল খাটার পর মুক্তি পান। সরকার তার বন্দি আদেশ বাড়ানোর জন্য লাহোর হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানালে তা নাকচ করেন আদালত। মালিক ইশাকের বিরুদ্ধে শিয়া মুসলিমদের হত্যা ও শ্রীলংকার ক্রিকেট খেলোয়াড়দের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.