জেএমবি’র ‘প্রধান সমন্বয়ক’সহ আটক ৫

জামাআ’তুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ‘প্রধান সমন্বয়ক’ মো. আবদুন নুরসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো আবদুন নুর, নুর ইসলাম, নুরুজ্জামান আরিফ, আবুল কালাম আজাদ ও ফারুক আহম্মেদ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪৯টি প্রাইমারি ডেটোনেটর, ২৬টি ইলেক্ট্রনিক ডেটোনেটর, ৪টি টাইম বোমা, ৩৫ গজ করডেক্স, ১০ কেজি পাওয়ার জেল, ১৫৫টি বিভিন্ন প্রকার সার্কিট, ৫৫টি জিহাদী বই, ৪৫টি বোতাম টাইপ সার্কিট, ৩টি ইগনাইটর, ১টি পাওয়ার রেগুলেটর ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয় বলে র‌্যাব জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটায় সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার কড্ডা এলাকার বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ের রেলস্টেশনে ঢাকাগামী একটি ট্রেন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়ে গতকাল বিকালে রাজধানীতে র‌্যাবের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন যে, জেএমবি’র প্রধান সমন্বয়কারী আবদুন নুর চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে জয়দেবপুরের দিকে যাচ্ছে। পরে র‌্যাব-১২ এর একটি চৌকস দল সিরাজগঞ্জ রেল স্টেশনে অভিযান চালায়। তখন আবদুন নুরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেহ ও মালপত্র তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, আবদুন নুর জেএমবি’র চাঁপাই নবাবগঞ্জের প্রধান এবং প্রধান সমন্বয়কারী। আবদুন নুর এর আগে পাঁচ বছর জেল খেটেছে। জেলে তার জেএমবি’র গ্রেপ্তারকৃত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পরিচয় হয়। সে থেকে সেও জেএমবি’র সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। মুফতি মাহমুদ আরও বলেন, জেল থেকে বের হয়ে আবদুন নুর জেএমবি’র আমীর সোহেল মাহফুজের সঙ্গে যোগাযোগ করত। আর জেএমবি’র জন্য সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করতে থাকে। এ কারণে জেলে থাকা ও দেশের বাইরে থাকা বা পলাতক জেএমবি সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করত। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার আতঙ্কে বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ তারা চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে জয়দেবপুরের দিকে যাচ্ছিল। বাংলাদেশে যে কোন রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে তাদের বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নাশকতা সৃষ্টি করা এবং সাংগঠনিকভাবে সক্রিয়তার পূর্বাভাস দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের সঙ্গে অন্য কোন জঙ্গির সংগঠনের যোগাযোগ ছিল কিনা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,  এমন তথ্য তাদের কাছে নেই। তবে তারা কোথায় নাশকতা চালাত বা আর কারা তাদের সঙ্গে আছে সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জেএমবি’র আমীর সোহেল মাহফুজ পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত আছে। র‌্যাবের বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের উপ-পরিচালক মেজর খালিদ ইবনে হোসেন জানান, যে বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে তা দিয়ে একটি ভবন ধ্বংস করা যেত।

No comments

Powered by Blogger.