স্মরণ- সাহিত্যিক-সাংবাদিক খালেকদাদ চৌধুরী by ফজলুল হক রোমান

১৬ অক্টোবর ছিল সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক মরহুম খালেকদাদ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী। তার সম্পাদিত এবং নেত্রকোনা থেকে প্রকাশিত বহুল আলোচিত উত্তর আকাশ পত্রিকাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের এক মিলনমেলা। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নেত্রকোনায় গড়ে ওঠা সাধারণ গ্রন্থাগারের সম্পাদক হিসেবে ‘সৃজনী’ নামে সাহিত্য পত্রিকা তিনি সম্পাদনা করতেন। তার লেখা ও প্রকাশিত ডজনখানেক বইয়ের মধ্যে রক্তাক্ত অধ্যায় এবং শতাব্দীর দুই দিগন্ত উল্লেখযোগ্য। তিনি বিখ্যাত গ্রন্থ ‘বাহার-ই-স্তান-ই গায়েবী’র অনুবাদক।
মরহুম খালেকদাদ শুধু সাহিত্য অঙ্গনেই অবদান রাখেননি, মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন সংগঠক হিসেবে মেঘালয় রাজ্যে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সমাজসেবক হিসেবে ১৯৭২ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত নেত্রকোনা রেড ক্রসের সভাপতি এবং জেলা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। মরহুম খালেকদাদ চৌধুরী ১৯০৭ সালে মদন উপজেলার চানগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  ১৯২৪ সালে তিনি নেত্রকোনা দত্ত হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। কলকাতা রিপন কলেজ থেকে ১৯২৬ সালে তিনি আইএ পাস করেন। ইসলামিয়া কলেজে ইংরেজিতে অনার্সে ভর্তি হন। ১৯২২ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবি বন্দে আলী মিয়ার বিকাশ পত্রিকায় তার লেখা প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল। কলকাতা করপোরেশনের একটি স্কুলে কিছু দিন শিকতার পর ১৯৪১ সালে তথ্য অফিসার হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন। ১৯৬১ সালে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে সাহিত্যে মনোনিবেশ এবং নেত্রকোনা শহরে উত্তর আকাশ নামে মাসিক পত্রিকা বের করেন।  ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত পত্রিকাটি চালু ছিল। ১৯৪১ সালে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত দৈনিক নবযুগ পত্রিকায় খালেকদাদ চৌধুরী শিশু বিভাগ পরিচালনা করতেন। সেই সূত্রেই নজরুলের সাথে ঘনিষ্ঠতা। ১৯৮৩ সালে সাহিত্যে অবদানের জন্য খালেকদাদ চৌধুরীকে বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। নেত্রকোনার এই কৃতী সন্তান ১৯৮৫ সালের ১৬ অক্টোবর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। বাংলা ১৪০৩ সাল থেকে ‘খালেকদাদ স্মৃতি পরিষদ’ তার নামে সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করে আসছে।

No comments

Powered by Blogger.