এবার সাংবাদিক আক্রান্ত-জনপ্রতিনিধির এমন আচরণ কাম্য নয়

ঘটনাটি যে অনাকাঙ্ক্ষিত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সংবাদের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের অনেক সময় অনভিপ্রেত ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধির দ্বারা কোনো সাংবাদিকের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটলে বিস্মিত না হয়ে উপায় থাকে না।
বিশেষ করে সেই জনপ্রতিনিধি যখন মিডিয়াবান্ধব হিসেবে পরিচিত। সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির অফিসে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিকরা লাঞ্ছিত হয়েছেন। একজন জনপ্রতিনিধি কি এভাবে কোনো সংবাদকর্মীর সঙ্গে আচরণ করতে পারেন?
সাংবাদিকদের ওপর অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত হামলার ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রতিকারহীনভাবেই এমন ঘটনা ঘটে চলেছে। বারবার হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে সাংবাদিকদের। শনিবার রাজধানীর পল্টন এলাকায় সরকারদলীয় সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদক ও ক্যামেরা পারসনকে সদলবলে লাঞ্ছিত করেছেন। তিনি শুরুতে ভুল বোঝাবুঝির কথা বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও পরে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ এনেছেন। মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবারই আছে। অতীতের মতো বর্তমান সরকারের আমলেও সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং হচ্ছেন।
সংসদ সদস্য রনি অভিযোগ করেছেন, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অনুসন্ধানী টিম তাঁর নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে আত্মীয়স্বজনকে নানা প্রশ্ন করেছে। এতে একজন সংসদ সদস্য ক্ষুব্ধ হতে পারেন; কিন্তু তিনি সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হতে পারেন না।
সাংবাদিকদের এমনিতেই নানা প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করতে হয়। সাংবাদিকদের ওপর হামলা করাটা কোনো সভ্য সমাজের রীতি নয়। বিশেষ করে একজন সংসদ সদস্যের কাছ থেকে এমন আচরণ কখনো কাম্য হতে পারে না। সংসদ সদস্যের আচরণ হবে অনুকরণযোগ্য। তিনি দেশের একজন আইন প্রণেতা হিসেবে আদর্শস্থানীয় হবেন। কিন্তু গোলাম মাওলা রনি যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, তা দুঃখজনক।
সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হলে, সাংবাদিকরা আক্রান্ত হলে, সে ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত ও বিচার হওয়া উচিত।

No comments

Powered by Blogger.