বিহারে স্কুলের দেয়ালে সাঁটা হবে নিরাপত্তার নির্দেশনা

ভারতের বিহারের সব স্কুলে খাদ্যের গুণমান ও নিরাপত্তার বিষয়ে লিখিত নির্দেশনা প্রচারের পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। এসব নির্দেশনা স্কুলের দেয়ালেও সেঁটে দেওয়া হবে। সম্প্রতি দারিদ্র্যপীড়িত রাজ্যটির একটি স্কুলে বিনা মূল্যে দেওয়া দুপুরের খাবার খেয়ে ২৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে সরকার এই পদক্ষেপ নিল। এদিকে যে খাবার খেয়ে ওই ২৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয় তাতে কীটনাশক মেশানো ছিল বলে গতকাল রোববার নিশ্চিত করেছেন একজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। বিহারের সারণ জেলার ছাপড়া এলাকার ধর্মসতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিশুরা গত মঙ্গলবার দুপুরে ভাত ও আলুর তরকারি খাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তারা মারা যায়। মর্মান্তিক ওই ঘটনার পর সেখানে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়। এর প্রেক্ষাপটে টিফিনের কর্মসূচি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে বিহার রাজ্য সরকার। কর্মসূচির পরিচালক আর লাখমানান বলেন, ‘স্কুলগুলোতে মিডডে মিল কর্মসূচির আওতায় যে খাবার পরিবেশন করা হয়, তার গুণগত মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা বিস্তারিত নির্দেশনা প্রস্তুত করছি।’ খাদ্য বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় তৈরি করা এই নিদের্শনায় যেসব বিষয় থাকছে, তার মধ্যে রয়েছে ধর্মসতী স্কুলের মতো ঘটনা ঘটলে প্রাথমিকভাবে কী ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে সে কথা। লোকজন যাতে সহজেই দেখতে পারে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারে, সে জন্য স্কুলগুলোর দেয়ালেও তা সেঁটে দেওয়া হবে। গত শনিবার ফরেনসিক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে, ধর্মসতী স্কুলের শিশুদের দেওয়া খাবারে কীটনাশক ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাবার তৈরিতে ব্যবহূত তেলে যে কীটনাশক পাওয়া গেছে, তার মাত্রা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহূত কীটনাশকের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি ছিল। ওই ঘটনার পুলিশি তদন্ত তত্ত্বাবধানকারী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিত সিনহা গতকাল বলেন, ‘এটা ছিল অতিমাত্রায় বিষাক্ত। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে হলে এটার সঙ্গে তরল পদার্থ মিশিয়ে হালকা করে নিতে হয়। এই মাত্রার কীটনাশক সচরাচর কিনতে পাওয়া যায় না।’ পুলিশ সন্দেহ করছে, খাবারে ব্যবহূত তেল কীটনাশকের পুরোনো কনটেইনারে রাখা হয়েছিল। ছত্তিশগড়ে ৩১ শিশু হাসপাতালে: বিহারের ওই ঘটনার রেশ না কাটতেই ছত্তিশগড় রাজ্যের একটি স্কুলে শনিবার দুপুরের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে ৩১ শিশু। তবে হাসপাতালে ভর্তি করার পর তারা সুস্থ হয়ে ওঠে। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত। রাজ্য সরকার ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। স্কুলটির প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। পিটিআই, আইএনএস ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.