ভেজাল দুধের ব্যবসা- দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরসহ বাঘাবাড়ী মিল্কশেড এরিয়ায় আবার ভেজাল দুধের ব্যবসা শুরু হয়েছে বলে বুধবার সমকালে 'রাসায়নিক মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে দুধ' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।
ছানার পানি, ক্ষতিকর ক্রিম মিল্ক পাউডার, ফরমালিন, চিনি, সোডা, সয়াবিন তেল ও আরও কয়েকটি উপকরণ মিশিয়ে সেখানে প্রায় প্রকাশ্যেই ভেজাল দুধ তৈরি চলছে। এসব দুধ প্যাকেটজাত হয়ে সারাদেশে সরবরাহ চেইনের মাধ্যমে ভোক্তাদের কাছে পেঁৗছে যাচ্ছে। গরুর দুধের নামে এ ধরনের অপরাধমূলক তৎপরতা রোধ করা যে যায় না, তা নয়। এর আগেও সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ ও সম্প্রচারের পর ভেজাল দুধ তৈরি কিছুদিনের জন্য বন্ধ ছিল। কিন্তু রোজার মাসে ভেজাল দুধের কারবারিরা দুধের বাড়তি চাহিদার কথা মাথায় রেখে পুনরায় সক্রিয় হয়েছে। ওই এলাকার প্রশাসন বিষয়টি অবগত নয়, এ কথা বলা যাবে না। কারণ, বিষয়টি এখন অনেকটা ওপেনসিক্রেট। তারপরও তারা কেন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি বা নিচ্ছেন না, তা বোধগম্য নয়। হয়তো এই অবৈধ ও ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে প্রভাবশালীরা জড়িত রয়েছে বা অন্য কোনো স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় রয়েছে অথবা প্রশাসনের কর্তাবক্তিরা ঝামেলার কাজ মনে করে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন। তবে যে কারণেই হোক না কেন, জনস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট এমন একটি বিষয় এড়িয়ে গিয়ে প্র্রশাসন ভালো কাজ করেনি। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তাদের ওপর গুরুদায়িত্বকে তারা এভাবে অবহেলা করতে পারেন না। ভেজাল দুধ যেসব ব্র্যান্ডের নামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে, তাদের ওপরও ভোক্তাদের আস্থাহীনতা সৃষ্টি হতে পারে। ইতিমধ্যে এক ধরনের আস্থাহীনতার আলামত দেখাও যাচ্ছে। এটা নিশ্চিত যে, এ ধরনের ভেজাল মিশ্রিত দুধ একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকও যদি দীর্ঘদিন পান করেন তাহলে তার লিভার ও কিডনি সমস্যা, শরীরের পেছন দিকে ব্যথা অনুভূত হওয়া, হাড়ের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়া, চর্মরোগ, হজমের সমস্যা ও পেটের পীড়াসহ নানা রোগ হতে পারে। আর শিশুদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব হতে পারে আরও মারাত্মক। বিশেষ করে যে পুষ্টি ও ক্যালসিয়ামের জন্য দুধ পান করা, তাতেই ঘাটতি বেড়ে যেতে পারে। তাই জনস্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর ভেজাল দুধ যারা তৈরি করছে, তাদের অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য। তাদের নতুন প্রণীত ভেজাল আইনে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দণ্ড দেওয়া উচিত।

No comments

Powered by Blogger.