গাদ্দাফির বাসভবনের পাশে ন্যাটোর বিমান হামলা

লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির বাসভবন চত্বরের পাশের একটি বাংকারে বিমান হামলা চালিয়েছে সামরিক জোট ন্যাটো। গতকাল শনিবার চালানো ওই হামলায় তিন ব্যক্তি নিহত হন বলে দাবি করেছে লিবিয়া সরকার। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র গতকাল প্রথমবারের মতো লিবিয়ায় চালকবিহীন বিমান বা ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে পেন্টাগন জানিয়েছে। তবে কোথায় এ হামলা চালানো হয়েছে তা জানা যায়নি। ড্রোন হামলা চালানোর ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অনুমোদনের দুইদিন পর এ হামলা চালানো হলো।
এদিকে লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী খালেদ কাইম বলেছেন, পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মিসরাতায় বিদ্রোহীদের দমনে সরকারি সেনাদের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে তারা লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য আশপাশের উপজাতি নেতাদের পাঠানো হবে।
লিবিয়া সরকারের মুখপাত্র মুসা ইব্রাহীম জানান, শনিবার সকালের দিকে ত্রিপোলিতে গাদ্দাফির বাব আল আজিজিয়া বাসভবন চত্বরের কাছেই গাড়ি পার্ক করার জায়গায় শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে তিন ব্যক্তি প্রাণ হারান। তিনি আরও জানান, ওই জায়গাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। সেখানে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের খালি বাক্স রাখা হয়েছিল।
তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকেরা জানান, হামলা চালানোর জায়গাটি দেয়াল দিয়ে ঘেরা। এর চারদিকে নিরাপত্তারক্ষী ও সেনাদের পর্যবেক্ষণ টাওয়ারও রয়েছে। হামলার পর কংক্রিটের স্তর ও মাটি সরে গিয়ে ওই স্থানে দুটি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্ত দেখে মনে হয়েছে, সেখানে সুরক্ষিত বাংকার রয়েছে। হামলার পর ওই জায়গা থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।
লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী খালেদ কাইম বলেন, সরকারি সেনারা বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে মিসরাতার বিদ্রোহীদের দমনে ব্যর্থ হলে আশপাশের জ্লিতেন, টারহুনা, বানি ওয়ালিদ ও টারগাহ শহর থেকে উপজাতি নেতাদের সেখানে পাঠানো হবে। বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার উদ্দেশ্যেই নেতারা মিসরাতা যাবেন। এরপরও বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ না করলে তাদের দমনে উপজাতিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
মিসরাতা শহর ছয় সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে গাদ্দাফির অনুগত বাহিনী। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। গতকাল সেখানে ১০ জন নিহত হয়েছে। বিদ্রোহী সেনাদের হাতে আটক একজন সরকারি সেনা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের মিসরাতা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লিবিয়া অভিযানে চালকবিহীন যুদ্ধবিমান ব্যবহারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অনুমোদনের কঠোর সমালোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী খালেদ কাইম। তিনি এই অনুমোদনকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের নতুন অপরাধ’ বলে আখ্যা দেন। প্রেসিডেন্ট ওবামা গত বৃহস্পতিবার ‘মানবিক কারণ’ দেখিয়ে লিবিয়া অভিযানে ন্যাটোকে ক্ষেপণাস্ত্রসজ্জিত দুটি চালকবিহীন বিমান ব্যবহারের অনুমতি দেন।
মার্কিন সিনেটর জন ম্যাককেইন লিবিয়ার বিদ্রোহীদের দখলে থাকা বেনগাজি শহর সফরে গিয়ে বিদ্রোহীদের গঠিত ট্রানজিশনাল ন্যাশনাল কাউন্সিলের (টিএনসি) নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এর সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাইম বলেন, ম্যাককেইন টিএনসির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন না। ওই নেতারা লিবিয়ার কেউ নন। লিবিয়ার মাটিতে ওদের বৈধতা নেই।

No comments

Powered by Blogger.