সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯০

সিরিয়ায় গত শুক্রবার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯০ জন হয়েছে। মানবাধিকারকর্মীরা জানান, দেশটিতে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভে এক দিনে এটাই সর্বোচ্চ নিহত হওয়ার ঘটনা।
বিক্ষোভকারীদের সংগঠন লোকাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি গুলিতে নিহত ৮৮ জনের নামের তালিকা বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে পাঠিয়েছে। তালিকায় বন্দরনগরী লাতাকিয়া, হোমস, হামা, দামেস্ক ও দক্ষিণাঞ্চলীয় গ্রাম ইজরায়ায় নিহতদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো নিহতের সংখ্যা ৯০ বলে জানিয়েছে। তবে নিরপেক্ষ কোনো সূত্র থেকে নিহতের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সিরিয়া সরকারের পদত্যাগ দাবি করে হাজার হাজার মানুষ গত শুক্রবার দেশজুড়ে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা জানায়, ইজরায়া থেকে বিক্ষোভকারীরা ডেরা শহরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ১৪ জন নিহত হয়। দামেস্কর মিদান এলাকায় প্রায় দুই হাজার বিক্ষোভকারীকে লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। হামা এলাকার একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সেখানে বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় বাথ পার্টির কার্যালয়ের দিকে যেতে থাকলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গুলি চালায়। এতে অন্তত দুই ব্যক্তি নিহত হয়, আহত হয় অনেকেই। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দামেস্কর বাজরেহ ও ডউমা এলাকায়ও বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট আসাদ তাঁর দেশের জনগণের আন্দোলনের অধিকারের প্রতি যথেষ্ট সম্মান দেখাচ্ছেন না। তিনি ইরানের মতো কৌশল নিয়ে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করছেন।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ বলেন, সিরিয়ার জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের বিষয়টি কথায় নয় কাজে পরিণত করে দেখাতে হবে। বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যার ঘটনাকে তিনি ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেন।
লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক পরিচালক ম্যালকম স্মার্ট বলেন, সিরীয় কর্তৃপক্ষ পরিবর্তনের দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের জবাবে আবারও বুলেট ব্যবহার করেছে। বিক্ষোভকারীদের প্রতি এমন সহিংস আচরণ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
সিরিয়ায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই বিক্ষোভের প্রথমদিকে বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কার ও উদার স্বাধীনতা। ধীরে ধীরে তা সরকার পতনের দাবিতে পরিণত হয়। প্রেসিডেন্ট আসাদ গত মঙ্গলবার দেশটি থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নেন। ৪৮ বছর আগে বাথ পার্টি ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে জরুরি অবস্থা চলছিল। বিক্ষোভকারীদের দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার ও রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি।

No comments

Powered by Blogger.