বিভিন্ন সেবা খাতের ওপর থেকে মূসক প্রত্যাহারের দাবি

দেশীয় হোটেল ও রেস্তোরাঁর সেবা এবং কুরিয়ারসহ সেবা খাতের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট খাতের নেতারা। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত চলমান প্রাক-বাজেট আলোচনায় এই দাবি জানানো হয়।
গতকাল দুটি আলোচনা হয়। প্রথম সভায় সেবা খাত এবং দ্বিতীয় সভায় বন্ড সুবিধাবহির্ভূত খাতের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে এনবিআর। দুটি সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআরের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দীন আহমেদ।
রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি ওসমান গনি জানান, দেশীয় হোটেল-রেস্তোরাঁর সেবার বিনিময়ে প্রাপ্ত অর্থের ৪০ শতাংশের ওপর ১৫ শতাংশ মূসক আরোপিত আছে। নিট মূসকের হার দাঁড়ায় ৬ শতাংশ। কিন্তু দেশি রেস্তোরাঁয় মাছ-মাংস, চাল-ডাল, তেল-লবণসহ সবকিছু মূসক পরিশোধ করেই বাজারে আসে। তাই দেশি রেস্তোরাঁর সেবার ওপর মূসক প্রত্যাহার করা উচিত।
ওসমান গনি আরও জানান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয় এমন সব ধরনের রেস্তোরাঁর ওপর সমাহারে মূসক আরোপিত রয়েছে। এ ক্ষেত্রে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়, এমন রেস্তোরাঁর ওপর মূল্য সংকোচনের ভিত্তিতে মূসক আরোপ করা উচিত।
কুরিয়ার সার্ভিস সমিতির প্রতিনিধি সন্তোষ চন্দ তাঁদের সেবার ওপর বিদ্যমান ১৫ শতাংশ মূস কমিয়ে ৪ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করেন।
একই হারে মূসক আরোপের দাবি জানান বাংলাদেশ কনসালটিং ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) প্রতিনিধি এম এ হামিদ জানান, বায়রার সদস্যদের কাছ থেকে উৎসে কর কর্তনের বিধান রহিত করা উচিত।
বন্ডের আওতাবহির্ভূত খাতগুলোর মধ্যে ফুল রপ্তানিকারক ও উৎপাদকেরা অংশ নেন। বাংলাদেশ ফুল উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির পক্ষ থেকে লিখিত প্রস্তাব দেওয়া হয়।
প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমানে ফুল উৎপাদনের জন্য শেড নেট ও সিরিন ক্লথ (বাগানের ওপর দেওয়ার জাল) ব্যবহার করা হয়। প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বাগানে এই জাল ব্যবহার করা হয়। এই জাল শুল্ক ছাড়াই আমদানি করার সুযোগ দেওয়া উচিত।
সমিতির সভাপতি আহসান উল্লাহ জানান, বর্তমানে বিভিন্ন দেশে ফুল রপ্তানি হচ্ছে। তাই এই সম্ভাবনাময় শিল্পের জন্য করমুক্ত সুবিধা দেওয়া উচিত।
এ প্রসঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি মোহসীনা বেগম জানান, ফুল চাষ করতে প্রয়োজনীয় আমদানীকৃত পণ্যের এইচএস কোড সুবিন্যাসিত হয়নি। ট্যারিফ কমিশন এ বিষয়ে গবেষণা করছে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান জানান, এনবিআর এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি করবান্ধব। এনবিআরের আইনগুলো যুগোপযুগী করা হচ্ছে। মূল সমস্যা হলো আইনের ব্যবহারে অদক্ষতা।

No comments

Powered by Blogger.