মার্কিন নাগরিকের বিচার চালিয়ে যেতে আদালতের নির্দেশ

পাকিস্তানে দুই নাগরিককে গুলি করে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার মার্কিন নাগরিক রেমন্ড ডেভিসের মুক্তির বিষয়টি সরাসরি নাকচ করে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিচারকাজ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের একটি আদালত। লাহোরের কোট লাখপাট জেলখানায় বসানো বিশেষ আদালত গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
যুক্তরাষ্ট্র রেমন্ড ডেভিসকে তাঁদের একজন কূটনীতিক বলে দাবি করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পাকিস্তান সরকারের ওপর চাপ দিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ডেভিসের কূটনৈতিক রক্ষাকবচ (ডিপ্লোম্যাটিক ইম্যুনিটি) রয়েছে। এ কারণে পাকিস্তান নয় বরং যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর বিচার হতে পারে। তবে গতকাল পাকিস্তানের ওই নিম্ন আদালত বলেছেন, ডেভিস নিজেকে কূটনৈতিক রক্ষাকবচধারী কর্মকর্তা বলে দাবি করলেও তিনি তাঁর দাবির সমর্থনে উপযুক্ত প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি।
পাকিস্তানে মার্কিন কনস্যুলারে নিয়োজিত রেমন্ড ডেভিস গত ২৭ জানুয়ারি লাহোরের একটি জনাকীর্ণ রাজপথে নিজের পিস্তল দিয়ে গুলি করে দুই পাকিস্তানি নাগরিককে হত্যা করেন। তাঁকে সাহায্য করতে তাঁর সহকর্মীরা একটি গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। ডেভিসকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করার সময় ওই গাড়ির নিচে চাপা পড়ে আরও এক পাকিস্তানির মৃত্যু হয়। ডেভিসের দাবি, তাঁর গুলিতে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁরা দুজনই ডাকাত ছিলেন। আত্মরক্ষার জন্য তিনি গুলি চালাতে বাধ্য হন। এ ঘটনার পর থেকেই ডেভিসকে মুক্তি দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের ওপর চাপ দিয়ে আসছে। ডেইলি টেলিগ্রাফ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেভিস আসলে পাকিস্তানে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রধান হিসেবে কাজ করছিলেন।
ডেভিসের দাবি, তাঁর কূটনৈতিক রক্ষাকবচ রয়েছে। এ দাবি করে তিনি আদালতে পিটিশনও করেছেন। সত্যিই তাঁর সে রক্ষাকবচ আছে কি না, পাকিস্তানের উচ্চ আদালত সে বিষয়ে আগামী ১৪ মার্চ রায় দেবেন।
লাহোরের আদালত গতকাল মামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে আগামী ৮ মার্চ পর্যন্ত বিচারকাজ মুলতবি ঘোষণা করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী আসাদ মঞ্জুর বাট এএফপিকে বলেন, রক্ষাকবচ থাকার দাবি করলেও দাবির স্বপক্ষে ডেভিস প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তাই আদালত তাঁর দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.