ক্লাব সভাপতিই কোচ

শক্তিশালী মুক্তিযোদ্ধাকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিবিরে স্বস্তির সুবাতাস আনল কাল শেখ জামাল ধানমন্ডি।
কিন্তু টানা দ্বিতীয় ম্যাচেও কোচ-রহস্য কাটল না। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের খেলোয়াড় তালিকায় কোচের নাম ছিল না। তাহলে কোচ কে? ম্যাচের পর ক্লাব সভাপতি মনজুর কাদের কৌতূহল মেটালেন, ‘আই অ্যাম দ্য কোচ!’
ক্লাব সভাপতির নিজেকে কোচ দাবি করা বিশ্ব ফুটবলে বিরল। কিন্তু ব্যতিক্রম মনজুর কাদের। সাফল্যের গর্ব ছড়িয়ে বললেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা দেশের অন্যতম সেরা দল। আমার দলের চেয়েও ভালো (!!) এই দলকে দুই গোলে হারানো সহজ নয়।’
‘আপনি কোচ হলে খেলোয়াড় তালিকায় নাম দেননি কেন?’ মনজুর কাদের এবার বললেন, ‘‘আমি কোচ’’—কথাটা অফ দ্য রেকর্ড বলেছি। একটু মজা করেছি।’ ক্লাব সভাপতি তাহলে মজাও করেন! ‘আসলে আমরা সবাই মিলে দলটা সাজিয়েছি। আশরাফ ভাই (স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য শেখ আশরাফ আলী) আমাদের সাহায্য করছেন’—বলে যান মনজুর কাদের।
শেখ জামালের টিম ম্যানেজমেন্টের অন্যদের মুখে অবশ্য তালাই ছিল। ম্যাচের ব্যাপারে তাঁদেরই একজনকে জিজ্ঞাসা করা হলে সভাপতিকে দেখিয়ে নিজেকে রাখলেন নিরাপদ দূরত্ব্বে, ‘যা বলার সভাপতি সাহেবই বলবেন।’
আবাহনীর সঙ্গে গোলশূন্য প্রথম ম্যাচের আগের দিন একাদশ তৈরি করা নিয়ে সার্বিয়ান কোচ জোরান কার্লেভিচের সঙ্গে গোলমাল বাধে ক্লাব সভাপতির। কার্লেভিচ বলেছিলেন, ‘ক্লাব সভাপতি একাদশ তৈরিতে হস্তক্ষেপ করতে চাইলে আমি মানিনি।’ ক্লাব সভাপতির বক্তব্য ছিল, ‘আমরা তো ফুটবল বুঝি। সে ভালো ভালো প্লেয়ার বসিয়ে রাখে। এটা তো হতে পারে না।’
এ ঘটনায় কার্লেভিচের চাকরিই চলে যায়। প্রথম ম্যাচে মাঠেই আসেননি কার্লেভিচ। পরপরই শ্রীলঙ্কান কোচ পাকির আলীকে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পাকির গতকাল পর্যন্ত আসেননি। তবে কাল শেখ জামাল যেভাবে খেলল, তাতে ‘তারকায় ঠাসা এই দলের কোচ লাগে নাকি’—ক্লাব নীতিনির্ধারকদের এই ধারণাটা প্রতিষ্ঠা পেয়ে যেতে পারে!
আবাহনীর সঙ্গে শেখ জামাল ছিল অগোছালো, মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে সেই দলটি মাঠে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে খেলল। কিন্তু স্ট্রাইকার এমিলি দুটি সহজ সুযোগ নষ্ট করায় গোলের জন্য উদ্বেগ বাড়ছিল। দরকার ছিল একজন ত্রাতার। ৫৩ মিনিটে সেই ভূমিকা রাখলেন এদিনই শেখ জামালের হয়ে প্রথম খেলতে নামা ক্যামেরুনিয়ান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মোডো হুগুয়েস। কমলের কর্নার থেকে তাঁর টোকায় ১-০। ৭৯ মিনিটে বদলি স্ট্রাইকার তৌহিদুল আলমের (সবুজ) প্লেসিংয়ে ২-০।
ব্রাদার্সকে প্রথম ম্যাচে ২-০ গোলে হারানো মুক্তিযোদ্ধা কাল ছিল একেবারেই নিষ্প্রভ। মাঠে কিছুই করতে পারল না দলটি। বুকোলা তাঁর ছায়া হয়ে রইলেন। গোল করার লোকের অভাবে দলটাকে অসহায় আত্মসমর্পণই করতে হলো।
শেখ জামাল: আমিনুল, সুজন, নাসির, মিশু, ড্রাগন (রেজা), মামুনুল, শাকিল, মোডো, জাহিদ (কমল), এনামুল, এমিলি (সবুজ)।
মুক্তিযোদ্ধা: বিপ্লব, রজনী, রাজন, ড্যামি, লুসিয়ানো, আরমান আজিজ, মারুফ, মতিউর মুন্না, রনি (আলমগীর), মিঠুন, বুকোলা (নাসির)।

No comments

Powered by Blogger.