মোহামেডানে ফিরলেন মানিক

মানিকের হাতে দল তুলে দিল মোহামেডান; ফুল তুলে দিলেন কর্মকর্তারা
সালাম মুর্শেদী, ইমতিয়াজ সুলতান জনি, সৈয়দ রুম্মন ওয়ালি বিন সাব্বির, মোহাম্মদ পনির—মোহামেডানের সাবেক তারকা ফুটবলাররা সবাই উপস্থিত নতুন কোচের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে। সালাম মুর্শেদীর কণ্ঠে হাহাকার শোনা গেল, ‘মোহামেডান ক্লাব একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।’
সত্যিই তা-ই। পুরোনো কর্মকর্তাদের বিদায়, অভ্যন্তরীণ নানা সংকট, আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ; সর্বোপরি জাতীয় দলের এক ঝাঁক খেলোয়াড় ক্লাব ছেড়ে চলে যাওয়ায় মোহামেডান ‘ক্রান্তিকালে’ পড়ে গেছে। একেবারে তরুণ ও প্রায় অচেনা ১৪ খেলোয়াড়কে নিয়ে এবারের পেশাদার লিগের দল গড়েছে মোহামেডান।সংকট থেকে উদ্ধার পেতে মোহামেডানের এমন সময়ের সঙ্গে পরিচিত এক ‘সৈনিক’কেই তাই ফিরিয়ে আনল ক্লাবটি। অনভিজ্ঞ ও তরুণ মোহামেডানকে এই মৌসুমের বৈতরণী পার করাতে গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হলো তাদেরই সাবেক কোচ এবং সাবেক জাতীয় দলের কোচ শফিকুল ইসলাম মানিকের হাতে।২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মোহামেডানের কোচ হিসেবে কাজ করা মানিককে এবার দুই বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হলো। তবে কর্মকর্তারা বললেন, এক বছর পর উভয় পক্ষের সম্মতি ও আলোচনার ভিত্তিতে চুক্তি নবায়ন করা হবে।মানিক ‘নতুন মোহামেডানের’ দায়িত্ব পেলেন একেবারেই ঘরোয়া অনুষ্ঠানে। সেখানেই ছোট্ট একটা রুমে ঠাসাঠাসি করে একটা সংবাদ সম্মেলনও হলো। সেই সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে গিয়ে কর্মকর্তাদের সবার মুখেই এই ‘ক্রান্তিকালে’র কথা। এই অনুষ্ঠানেও আসেননি মোহামেডান ফুটবল কমিটির কোনো সদস্য।ফুলের তোড়া দিয়ে মানিককে বরণ করে নেওয়ার আগে ক্লাবের আহ্বায়ক কমিটির প্রধান কুতুবউদ্দিন আহমেদ বললেন, ‘আমরা এমন একটা সময়ে দায়িত্ব নিয়েছি, যখন ক্লাবের তারকা খেলোয়াড়েরা প্রায় সবাই চলে গেছে। মানছি, এটা একটা সংকট। কিন্তু এটাও ঠিক, মোহামেডান যেমন দলই গড়ুক, তারা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই লড়াই করে। সেই লড়াই চালানোর যোগ্যতা যার আছে, সেই শফিকুল ইসলাম মানিককেই নিয়ে এসেছি আমরা।’হ্যাঁ, মোহামেডানের হয়ে মানিক ‘লড়াই’ আগেও করে দেখিয়েছেন। ২০০৭ সালে এমনই তরুণ ও প্রায় তারকাহীন দল পেয়েছিলেন তিনি। সেবার বি-লিগে মোহামেডানকে রানার্সআপ করা মানিক বলছেন, ‘২০০৭ সালের অভিজ্ঞতা থেকে আমি সাহস পাচ্ছি। সেবারই আমি টের পেয়েছি, সাদা-কালো জার্সি পরলে খেলোয়াড়দের চেহারা বদলে যায়।’তবে মুখে যা-ই বলুন না কেন, অনভিজ্ঞ দল নিয়ে একটু হলেও আতঙ্কিত কোচ-কর্মকর্তারা। সবাই তাই আশ্বাস দিলেন, ভালো বিদেশি খেলোয়াড় এনে ঘাটতি পূরণ করা হবে। তবে ভাগ্যের সন্ধানে ঢাকায় আসা বিদেশিদের ভরসা নয়; মানিক বলেছেন, রাশিয়া, ইরান বা কেনিয়া থেকে ফুটবলার আনার চেষ্টা থাকবে।আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা না হলেও ক্লাবের একটা সূত্র বলছে, অভিজ্ঞতার প্রয়োজনেই দু-এক দিনের মধ্যে চুক্তি করে ফেলা হবে ক্লাবের পুরোনো খেলোয়াড় হাসান আল মামুনের সঙ্গে।

No comments

Powered by Blogger.