চীনের গণমাধ্যমে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে দ্বিমুখী নীতির অভিযোগ

তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব অনুমোদন করায় ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ‘ঔদ্ধত্য’ ও ‘দ্বিমুখী নীতি’র অভিযোগ তুলেছে চীনের সরকারি গণমাধ্যম। গতকাল সোমবার চীনা সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মার্কিন কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি খুবই বাস্তব।
তাইওয়ানের কাছে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র, ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারসহ ৬৪০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব ওয়াশিংটন অনুমোদন করার পর চীনের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়। ওয়াশিংটনের সঙ্গে সামরিক ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত যোগাযোগ স্থগিত করার ঘোষণা দেয় বেইজিং। অস্ত্রচুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মার্কিন কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেয় চীনা কর্তৃপক্ষ। তাইওয়ানকে নিজস্ব ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে বেইজিং।
রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত চায়না ডেইলি ও গ্লোবাল টাইমস মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে এই বলে অভিযোগ তুলেছে যে তিনি আন্তরিক নন। গত নভেম্বরে চীন সফরের সময় প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেছিলেন, চীনকে তিনি ‘নিয়ন্ত্রণ’ করতে চান না।
চায়না ডেইলিতে বলা হয়, চীনের প্রতিক্রিয়া কতটা প্রবল, সেটা কোনো ব্যাপার নয়, ব্যাপার হচ্ছে চীনের অবস্থান ন্যায়সংগত। পত্রিকাটিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ওই পদক্ষেপ চীনের মূল স্বার্থসংশ্লিষ্ট বড় বড় বিষয় সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের ‘দ্বিমুখী নীতি’ ও ‘ভণ্ডামিপূর্ণ’ আচরণ উন্মোচন করে দিয়েছে।
পত্রিকায় বলা হয়, ওয়াশিংটনের ঔদ্ধত্য এ কঠিন বাস্তবতারও প্রতিফলন ঘটিয়েছে যে কীভাবে একটি জাতির স্বার্থ অন্য জাতির মাধ্যমে পদদলিত হতে পারে।
চীনের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক জবাবে বলা হয়, ওয়াশিংটনের ওই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে দুই দেশের সহযোগিতাকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেবে।
বেইজিংয়ের ওই বক্তব্যের আর কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে মন্তব্যটি এমন সময় করা হলো, যখন ইরান ও উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির লাগাম টেনে ধরতে ওয়াশিংটন বেইজিংয়ের সহায়তা কামনা করছে।
চীন বরাবরই ইরানের বিরুদ্ধে কড়া নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে। দেশটি জোর দিয়ে বলে আসছে, দীর্ঘদিনের ওই বিতর্কের অবসানে কূটনীতিই একমাত্র পন্থা।
কিন্তু তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির চুক্তি প্রসঙ্গে গ্লোবাল টাইমস বলেছে, কূটনৈতিক বিবাদ নিরসনে অন্যান্য কড়া ব্যবস্থার বদলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ কার্যকর বিকল্প হতে পারে।
পত্রিকাটিতে আরও বলা হয়, তাইওয়ান প্রশ্নে চীনা ঐক্যকে খাটো করে দেখা বোকামি হবে। তাইওয়ানের কাছে যেসব কোম্পানি অস্ত্র বিক্রি করবে, তাদের শাস্তি দেওয়ার পদক্ষেপ অধিকাংশ চীনা নাগরিকই সমর্থন করবে।

No comments

Powered by Blogger.