সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে তিব্বতকে ছাড় দেয়নি চীন

তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামার প্রতিনিধিদের সঙ্গে চীনা কর্মকর্তাদের আলোচনা শেষ হয়েছে। আলোচনার ফল কী দাঁড়াল, সেটা এখনো দুই পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি। তবে চীন সরকারের একটি বিবৃতির বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে তিব্বতকে কোনো ছাড় দেয়নি সরকার। যদিও তিব্বতের প্রবাসী সরকার গতকাল সোমবার জানিয়েছে, তারা সার্বভৌমত্ব নয়, চায় স্বায়ত্তশাসন।
দালাই লামার প্রতিনিধি লোদি জি গায়ারি ও কেলসাং গায়ালতসেন আলোচনার জন্য গত ২৫ জানুয়ারি চীনে যান। প্রথমে তাঁরা হুনান প্রদেশে চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তাঁরা বেইজিংয়ে চলে আসেন এবং সেখানেও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
দালাই লামার জ্যেষ্ঠ সচিব ছিমি চোকয়াপা জানিয়েছেন, দুই প্রতিনিধি গতকাল সোমবার ভারতের ধর্মশালায় ফিরে প্রবাসী তিব্বত সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করবেন। যদিও আলোচনার ফলাফল নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
চীন সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চীনের জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে কোনো আপস নয় এবং জাতীয় বা আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগই নেই।’
চীন ও দালাই লামার প্রতিনিধিদের মধ্যে গত ১৪ মাসের মধ্যে এ ধরনের আলোচনা ছিল এটিই প্রথম। তিব্বতের বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক বছর ধরে থেমে থেমে আলোচনা চলছে। দালাই লামা তিব্বতের জন্য ‘কার্যকর স্বায়ত্তশাসন’ দাবি করে আসছেন।
চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির একটি শাখা ইউনাইটেড ফ্রন্ট ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্ট দালাই লামার সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি দেখে। তাদের ওই বিবৃতি থেকে পরিষ্কার হয়েছে, আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি।
যদিও আলোচনার বিষয়ে চীন সরকারের আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি বা সরকারি কর্মকর্তাদের কোনো মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে সরকার জানিয়েছে, এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানানো হবে।
তবে ভারতের ধর্মশালায় প্রবাসী তিব্বত সরকারের মুখপাত্র থুবতেন সামফেল গতকাল জানিয়েছেন, সরকার তাঁদের দাবিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। তাঁরা তিব্বতের স্বাধীনতা নয়, চান স্বায়ত্তশাসন।
সামফেল বলেন, ‘আমরা তাদের পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছি, তিব্বত চায় স্বায়ত্তশাসন।’
এর আগে ২০০৮ সালের নভেম্বরে সর্বশেষ আলোচনার সময় তিব্বতের পক্ষ থেকে চীন সরকারকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। তাতে জানানো হয়, চীনা সংবিধানের সঙ্গে সংগতি রেখে তারা শুধু তিব্বতের জন্য বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন চায়।
বেইজিং তখন বলেছিল, তিব্বত চীনেরই অংশ। এ ক্ষেত্রে কোনো আপস নয়। তবে দুই পক্ষের মধ্যে বিস্তর মতপার্থক্য সত্ত্বেও তারা আলোচনার পথ খোলা রাখবে।

No comments

Powered by Blogger.